আবাসে অযোগ্য ছাঁটতে জেলা প্রশাসনকে ছাড়পত্র। ফাইল চিত্র।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় তালিকাভুক্ত কোনও উপভোক্তা প্রকল্পের টাকা পাওয়ার পরেও ‘অযোগ্য’ প্রমাণিত হলে তাঁর নাম বাদ দেওয়ার নির্দেশ রাজ্যকে দিয়েছে কেন্দ্র। সেই বার্তা জেলা প্রশাসনগুলিকে জানিয়ে দিয়েছে সরকার। তবে পঞ্চায়েত ভোটের আগে তালিকা থেকে উপভোক্তার নাম বাদ দেওয়ার দায়িত্ব জনপ্রতিনিধিরা নেবেন কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। সরকারি সূত্রের খবর, তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার ক্ষেত্রে এ বার তাই পদক্ষেপ করতে পারবেন জেলা প্রশাসনের অফিসারেরাও। সে ক্ষেত্রে পঞ্চায়েত স্তরের কোনও জনপ্রতিনিধির ওজর-আপত্তি এড়িয়েই সেই কাজ আধিকারিকেরা করতে পারবেন।
এই পদক্ষেপ নিয়ে প্রশাসনিক ব্যাখ্যা, তালিকাভুক্ত কোনও অযোগ্য উপভোক্তাকে বাদ দেওয়ার পরে পঞ্চায়েত স্তরে গ্রামসভা ডেকে তা অনুমোদন করাতে হয়। স্থানীয়দের উপস্থিতিতেই জনপ্রতিনিধিরা সেই কাজ করেন। আবাস প্রকল্পের আগের তালিকা সংশোধন করতে গিয়ে রাজ্যে প্রায় ১৪ লক্ষ নাম বাদ দিতে হয়েছে প্রশাসনকে। গ্রামসভায় সেই সিদ্ধান্তে সিলমোহর দিতে গিয়ে মানুষের ক্ষোভ-বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন নেতারা। সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত ভোটের আগে এই ‘অপ্রীতিকর’ কাজ করছে চাইছে না বহু পঞ্চায়েত। তাই জেলা প্রশাসনকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।
প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, “জেলা প্রশাসনগুলিকে দেওয়া লিখিত নির্দেশে পঞ্চায়েত স্তরে গ্রামসভা ডাকার কোনও উল্লেখ নেই। তাই অনুমান করা যায়, পঞ্চায়েতের সাহায্য না-পেলে আইনত এবং উপযুক্ত তথ্যনির্ভর পদক্ষেপ করতেই পারবে প্রশাসন। সে ভাবেই প্রায় সব জেলায় কাজ হচ্ছে।” সূত্রের খবর, বেশির ভাগ জেলায় এই নির্দেশকে সামনে রেখেই পদক্ষেপ করছেন কর্তারা। বিধিসম্মত নথি এবং প্রমাণ জোগাড়ও করে রাখা হচ্ছে। যাতে অযোগ্য কোনও উপভোক্তা নিজেকে যোগ্য দাবি করতে না-পারেন।
প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকেরা জানাচ্ছেন, সম্প্রতি রাজ্যে কিছুটা আচমকাই ঘুরে গিয়েছে কেন্দ্রীয় দল। আবাস-প্রকল্পের নথি এবং উপভোক্তা বাছাইয়ের তথ্য যাচাই করেছেন গিয়েছেন তাঁরা। তাই এই প্রকল্পে কেন্দ্রের কড়া নজর রয়েছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। উপরন্তু এই প্রকল্পে টাকা পাওয়ার আগে রাজ্য কেন্দ্রকে জানিয়েছিল, আগের ‘ভুল-ত্রুটি’র পুনরাবৃত্তি হবে না।
এ ব্যাপারে পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেন, “তেমন পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে। কোনও উপভোক্তার বাড়ি পাওয়ার কথা নয়, অথচ তিনি বাড়ি তৈরির টাকা পেলে সেই প্রমাণ তো চোখের সামনেই ধরা পড়বে। ফলে সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ করতে কোনও বাধা থাকবে না। মুখ্যমন্ত্রী কোনও যোগ্য গরিব মানুষকে বঞ্চিত করতে রাজি নন।”