প্রশাসনের দাবি, তালিকা থেকে এখনও নাম বাদ যাচ্ছে। ফাইল চিত্র।
ঘর পাকা। বাড়ির সামনে ঢাকা দেওয়া মোটরগাড়ি। বাড়ির মালিক বেতাই পলিটেকনিক কলেজের নিরাপত্তারক্ষী। তবুও আবাস প্লাসের চূড়ান্ত তালিকায় নাম রয়েছে নদিয়ার লিটন বিশ্বাসের। প্রশাসনের অবশ্য দাবি, তালিকা থেকে এখনও নাম বাদ যাচ্ছে।
নদিয়ার তেহট্ট ১ ব্লকের বেতাই-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তর জিতপুরের তাঁবুপাড়া। সেখানেই ঢালাই রাস্তার পাশে আকাশি রঙের বাড়ি লিটনের। বুধবার গিয়ে দেখা গেল, বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে চারচাকা গাড়িও। লিটন জানালেন, গাড়িটা তাঁরই। অথচ একই বুথে ছানাতলায় থাকেন প্রদীপ রায় ও বৃন্দাবন রায়। তাদের কাঁচা বাড়ি, তবু তালিকায় নাম নেই।
ঘটনাচক্রে, আবাস যোজনার কাজ দেখতে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল এখন নদিয়াতেও রয়েছে। এত তদন্ত, এত সমীক্ষার পরেও কী ভাবে এ রকমটা সম্ভব হল, সেই প্রশ্নই এখন বড় হয়ে দাঁড়াচ্ছে। লিটন জানান, ২০১৭ সালে আবাসের তালিকায় নাম আসে তার। সেই সময়ে তাঁর টিনের বাড়িই ছিল। অন্য রাজ্যে কাজ করে তিনি বাড়ি করে পাকা করেছেন। করোনা-কালে গ্রামে ফিরে এসেছিলেন। কিছু দিন বিদ্যুৎ মিস্ত্রির কাজ করেন। তার পরে পলিটেকনিক কলেজে অস্থায়ী রক্ষীর কাজ নিয়েছেন। লিটনের দাবি, “আগেও আবাস তালিকায় আমার নাম এসেছিল, তখনও আমি আবেদন করিনি। কী ভাবে তালিকায় নাম ঢুকল, জানি না।”
কাছেই কাঁচাবাড়ি প্রদীপ ও বৃন্দাবনের। তাঁদের মাটি ও টিনের বাড়ি। মিস্ত্রির কাজ করেন প্রদীপ। সাইকেলের চাকার ফুটো সারানোর দোকান বৃন্দাবনের। তাঁদের দাবি, একাধিক বার আবেদনের পর তালিকায় তাঁদের নাম উঠেছিল। কিছু দিন আগে পুলিশের সঙ্গে আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা পরিদর্শন করে যান। এখন যে তালিকা বেরিয়েছে তাতে তাঁদের নাম নেই। বৃন্দাবনের আক্ষেপ, “আমার ঘর বলতে টিনের। আবাসের ঘর পেতে সব নথি দিয়ে আবেদন করি। কিন্তু সমীক্ষার পর দেখছি, নামই নেই তালিকায়।”
স্বাভাবিক ভাবেই, আবাস প্লাসের সমীক্ষা নিয়ে সন্দিহান হয়ে উঠেছেন তাঁরা। তবে তেহট্ট-১-এর বিডিও শুভাশিস মজুমদার বলেন, “তালিকা থেকে এখনও অনেক নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে। গোটা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। সমস্যার সমাধান হবে।”