প্রশান্ত কিশোর।
‘নমস্কার! আপনি তো শিক্ষকতা করেন। আমরা প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা থেকে কথা বলছি। কিছু বিষয়ে আপনার মতামত চাই।’
শুধু শিক্ষকই নন। সরকারি-বেসরকারি চাকুরে, রেশন দোকানের মালিক বা ছোট-বড় ব্যবসায়ী—রাজ্য জুড়ে এইরকম অসংখ্য মানুষের কাছে এভাবেই পৌঁছেছে ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা। কোথাও ফোনে, কোথাও বা মুখোমুখি।
কেন?
গোপনীয়তার শর্তে তাঁদের কাছেই প্রশান্তের সংস্থা জানতে চেয়েছে, সংশ্লিষ্ট এলাকার বিধায়ক (তৃণমূল) কেমন? এলাকায় কি সময় দেন তিনি? কাজ করেন?
আর একেবারে শেষের দিকে জেনে নেওয়া হয়েছে, কাজের নিরিখে নিজের বিধায়ককে ১০-এ কত নম্বর দিতে চান তিনি।
এভাবেই বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের প্রার্থী বাছাইয়ের প্রাথমিক প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছেন ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর। জেলায় জেলায় একই কেন্দ্রে একাধিক ‘সম্ভাব্য প্রার্থী’ সম্পর্কেও সংস্থার তরফে এই মত সংগ্রহের কাজ শুরু করা হয়েছে। শুধু ফোনেই নয়, কয়েকটি জেলায় সরাসরি এই তথ্য সংগ্রহের জন্য ছোট ছোট ‘টিম’ও পাঠিয়েছে তারা।
আরও পড়ুন: পেঁয়াজ বাজারে হানা খোদ সিপির
বিভিন্ন জেলায় নিযুক্ত সংস্থার কোঅর্ডিনেটর এর মাধ্যমে এই তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে তৃণমূলের এক রাজ্য নেতার কথায়, ‘‘বিধায়কদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে। তবে অন্যান্য স্তরে স্থানীয় প্রশাসনের কাজকর্ম নিয়েও একেবারে দল-নিরপেক্ষ এলাকার মানুষের মত নিচ্ছে তারা।’’ কোথাও বিধায়ক সম্পর্কে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া পেলে বিকল্প নাম জানতে চেয়েছেন তারা। কোনও কোনও ক্ষেত্রে সংস্থার পক্ষ থেকেই অন্য নাম জানিয়ে তাঁর গ্রহণযোগ্যতাও দেখে নেওয়া হচ্ছে।
লোকসভা ভোটের ফলাফলের ভিত্তিতে রাজ্যের ২৯৪ বিধানসভা আসনের মধ্যে ১২৯ টি আসনে পিছিয়ে রয়েছে তৃণমূল। শেষ বিধানসভা ভোটের ফলের তুলনায় ফল অনেকটাই খারাপ।
আরও পড়ুন: লক্ষ্য বঙ্গভোট, বিল নিয়ে নানা কৌশল বিজেপির
সম্ভবত সেই কারণেই প্রায় দেড় বছর পরে নির্ধারিত বিধানসভা ভোটের জন্য এখন থেকে এই সমীক্ষা শুরু করেছে তৃণমূলের এই পরামর্শদাতা। হুগলির এক নেতা জানিয়েছেন, ‘‘একেবারে স্বতন্ত্রভাবেই এই কাজ চলছে। আমরা এইরকম ঘটনার কথা জানি। দলেরও নানা অংশে বিধায়ক বা অন্য বিষয়ে জানতে চেয়ে সরাসরি ফোন করা হচ্ছে।’’
পঞ্চায়েত পর্যন্ত খোঁজখবর করেছে তারা। সরকারি প্রকল্প রূপায়ণে স্থানীয় বিধায়কের ভূমিকা সম্পর্কে খোঁজ নিচ্ছে প্রশান্তের সংস্থা।