ঝুঁকি নিয়ে চলছে পারাপার। বেলডাঙা পাঁচরাহা রেলগেটে। রবিবার। নিজস্ব চিত্র
ধন্দ কাটেনি রেল দুর্ঘটনার! শনিবার সকালে পূর্ব রেলের শিয়ালদহ ডিভিশনের লালগোলা-শিয়ালদহ শাখার রেজিনগর স্টেশনে ঢোকার আগে ওমরপুর ১০৬ নম্বর রেলগেটের কাছে ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছে এক ট্রাক্টর চালকের। ওই ঘটনায় গুরুতর জখম হয়ে এক জন এখনও মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধী রয়েছেন। রেলওয়ে দফতরের উচ্চপদস্থ কর্তারা তদন্তে ঘটনাস্থলে পৌঁছন। কিন্ত কী ভাবে দুর্ঘটনা, তা নিয়ে রেলকর্তারা এখনও ধন্দে রয়েছেন।
বিশেষ করে রেলের গেট কী ভাবে ভাঙল, সে নিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্যপ্রমাণ জোগাড় করার চেষ্টা করছেন রেলওয়ে দফতর। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক নিখিল চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘ওই রেল দুর্ঘটনার তদন্ত হচ্ছে। তদন্তে দুর্ঘটনার যাবতীয় পারিপার্শ্বিক তথ্য-প্রমাণ খতিয়ে দেখা হবে।’’
রেল দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে শনিবার সন্ধ্যায় এলাকায় পৌঁছান শিয়ালদহের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার প্রভাস দানসানা। তাঁর সঙ্গে ছিলেন রেলের পদস্থ কর্তারা। রেলের ওই কর্তা ওমরপুর ১০৬ নম্বর রেলগেটে পৌঁছন। সেখানে গিয়ে তিনি এলাকার মানুষের সঙ্গে এবং দুর্ঘটনায় নিহতের পরিবারের লোকজনের সঙ্গেও কথা বলেন। রবিবার ঘটনাস্থলে পৌঁছন রেলওয়ে দফতরের ইঞ্জিনিয়রেরা। ঘটনাস্থলে ফিতে হাতে তাঁদের মাপজোক করতে দেখা গিয়েছে। দুর্ঘটনার জেরে রেললাইনের যে অংশের পাথর সরে গিয়েছিল, সেখানে পাথর ফেলার কাজওচলেছে দিনভর। তেমনি ঘটনাস্থল থেকে তিন কিমি দূরে বেলডাঙা স্টেশন লাগোয়া রেলগেটে ঝুঁকি নিয়ে চলেছে পারপারও।
জিনগরের ভাঙা রেলগেটের কাছে প্রহরী মোতায়েন। নিজস্ব চিত্র
রেল দফতর জানিয়েছে, আরপিএফ এবং রেলওয়ে দফতর পৃথক তদন্ত করছে। তারা আলাদা করেও রিপোর্ট জমা দেবে। তবে ওই রেলগেটের দায়িত্বপ্রাপ্ত গেটম্যান রামবদন মাহাতো রেলকর্তাদের জানান যে, গেট খোলার জন্য তাঁকে চাপ দেওয়া হয়। এমনকি মারধরের হুমকিও দেয়। ফলে বাধ্য হয়ে তিনি রেলগেট খুলে দেন। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, রেলগেট খোলা থাকলে রেলের সিগন্যাল লাল হয়ে থাকবে। সে ক্ষেত্রে শিয়ালদহগামী লালগোলা প্যাসেঞ্জার ট্রেনের রেলগেটের অনেক আগেই দাঁড়িয়ে পড়ার কথা। এখন প্রশ্ন উঠেছে, গেটম্যান নিজেকে বাঁচাতে কী সত্যি কথা বলছেন না?
রেল দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কোন পরিস্থিতিতে কী ভাবে রেলগেট ভাঙল, সেটা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। সেই সঙ্গে শিয়ালদহগামী ওই ট্রেনের আগে বহরমপুরগামী কোন ট্রেন গিয়েছে-সহ আপ-ডাউন সমস্ত ট্রেনের সময় সারণী জানার চেষ্টা হচ্ছে। তবে পদ্ধতিগত ভাবে তদন্ত প্রক্রিয়া এখনও ঘোষণা হয়নি। রেলওয়ে সেফটি কমিশনারেটের গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখার কথা। রেলের এক কর্তা বলছেন, ‘‘ধন্দ তো রয়েছে ভাঙা রেলগেটে।’’ রেল দফতরের এক কর্তা বলছেন, ‘‘হয়েছে তদন্তে গাফিলতি প্রমাণিত হলে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।