লুকোচুরি খেলে মহানগরীকে বারবার ফাঁকি দিচ্ছে কালবৈশাখী। তারই মধ্যে কী মনে করে শুক্রবার রাতে কলকাতায় আলতো পরশ দিয়ে গেল বৃষ্টি। কালবৈশাখী না-হোক, সঙ্গে ছিল দমকা হাওয়া। সব মিলিয়ে ইডেনে আইপিএলে নাইটদের খেলা বন্ধ রাখতে হয় মিনিট কুড়ি। তবে তৃষ্ণার শান্তি তো দূরের কথা, শহরের সর্বত্র মাটিও ঠিকঠাক ভেজেনি।
আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, বাতাসে জলীয় বাষ্পের আধিক্য এবং বাড়তি তাপমাত্রার জন্য এ দিন দক্ষিণবঙ্গের আকাশে বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি হয়। সেই মেঘ থেকেই বৃষ্টি হয়েছে। ঝড়বৃষ্টির পটভূমি প্রস্তুত। আজ, শনিবার কলকাতা ধারাস্নানের সুযোগ পায় কি না সেটাই দেখার।
সাধারণত এপ্রিলে কলকাতায় দু’তিনটি কালবৈশাখী হয়। কিন্তু এ বছর এপ্রিলের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত একটিরও দেখা নেই। কবে তার দেখা মিলবে, নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না আবহবিদেরা। বৃহস্পতিবার রেডার-চিত্রে ওড়িশার কাছে মেঘ তৈরি হতে দেখে আশায় বুক বেঁধেছিলেন তাঁরা। কিন্তু সেই আশায় জল ঢেলে দেয় হাওয়ার অভিমুখ। দক্ষিণ ২৪ পরগনার উপকূল এলাকায় জোরালো ঝড়বৃষ্টি হয়। কিন্তু বঞ্চিত থেকে যায় মহানগরী।
তবে শুক্রবার রাতের এক দফা বৃষ্টিতে পারদ নেমে যায় কিছুটা। সারা দিন ভ্যাপসা গরমে ঘেমেনেয়ে অস্থির হচ্ছিলেন শহরবাসী। রাতে কিছুটা স্বস্তিতে ঘুমিয়েছেন তাঁরা। এ বছর কলকাতায় কালবৈশাখীর কৃপণতা নিয়ে বিজ্ঞানীদের ব্যাখ্যা, ছোটনাগপুর মালভূমি এলাকায় সে-ভাবে গরম বা়ড়েনি। বাতাসে তেমন জলীয় বাষ্প না-থাকায় বড় আকারের মেঘপুঞ্জ দানা বাঁধেনি। ছোট ছোট মেঘ তৈরি হয়ে বীরভূম, বাঁকুড়ায় ঝড়বৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু কলকাতায় সেই মেঘ আসছে না। এ দিনও যে জোরালো কালবৈশাখী মিলল না, তার জন্য ছোট মেঘপুঞ্জের অক্ষমতাকেই দায়ী করেছেন আবহবিদেরা। তাঁরা জানান, মেঘের আকার যত বড় হবে, তত বেশি হবে ঝড়বৃষ্টির দাপট।
ঘেমেনেয়ে অফিস থেকে বাড়ি ফিরছিলেন এক যুবক। পাড়ায় ঢোকার মুখেই বৃষ্টি শুরু। অনাহূত অতিথিকে স্বাগত জানাতে ছাদে উঠে যান তিনি। ভিজতে ভিজতে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে লিখলেন, ‘‘এক পশলা বৃষ্টি যেন জ্বালা জুড়িয়ে দিল।’’ বৃষ্টিবরণের সেলফি তুলে ফেসবুকে ছবি দিয়েছেন তাঁর মতো অনেকেই।