কৃষ্ণনগরে দলীয় কর্মিসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: প্রণব দেবনাথ
বিজেপি দেশের মানুষকে তাড়াতে চাইছে। কিন্তু দেশবাসীই বিজেপিকে তাড়াবে—এনআরসি নিয়ে এভাবেই বিজেপিকে আক্রমণ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি ভাবছে ক্ষমতায় এসেছি, দেশটা দখল করব। সবাইকে তাড়িয়ে দেব। আপনারা কী তাড়াবেন! মানুষই আপনাদের তাড়াবে।’’
এদিন কৃষ্ণনগরে দলীয় কর্মিসভায় নতুন নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বিজেপি বিরোধিতায় সুর চড়ালেন তৃণমূলনেত্রী। তিনি বলেন, ‘‘ভাত দেবে না, এনআরসি দেবে। আমরা কোনও বাধা মানি না। বন্দুক গুলিতে ভয় পাই না। বাংলায় এনপিআর, এনআরসি হতে দেব না। আমরা রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের মতো লড়াই করি।’’
এই প্রতিবাদের জন্য শাহিন বাগের প্রতিবাদীদের উপর হামলার ইঙ্গিত করে মুখ্যমন্ত্রীর আশঙ্কা, ‘‘আমাদেরও কারও কারও সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটতে পারে।’’ এই প্রসঙ্গেই তিনি বলেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, হয় তাঁদের কথা শুনতে হবে নইলে গুলি করা হবে। একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও প্রকাশ্যে প্রতিবাদীদের গুলি করার হুমকি দিয়েছেন। আমার প্রশ্ন, এ সবের পরেও এঁরা মন্ত্রী থাকেন কীভাবে?
নতুন এই আইন নিয়ে এদিন তিনি সিপিএম এবং কংগ্রেসের দিকে আঙুল তুলেছেন। সিপিএম, কংগ্রেস ও বিজেপিকে ‘তিন যমজ ভাই’ আখ্যা দিয়ে মমতা দাবি করেন, ‘‘কংগ্রেস- সিপিএমের হাতে এখানে সরকার নেই। তারা আপনাদের নিরাপত্তা দিতে পারবে না। আমরাই ( তৃণমূল সরকার) নিরাপত্তা দিতে পারব। আমরা কাউকে তাড়াতে দেব না।’’ কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করে তাঁর বক্তব্য, ‘‘সংসদে সেকেন্ডে সেকেন্ডে বিল আনছে। আগে ৭২ ঘন্টা আগে বিল দেওয়া হত। কোথায়, কী ঢোকাচ্ছে খেয়াল না রাখলে বাঁশ হয়ে যাবে।’’
রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনার কথা তুলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘দেশে বেকারত্ব বেড়ে গিয়েছে। কেন্দ্রীয় বাজেটে রেশন ব্যবস্থা ও শিক্ষায় বরাদ্দ কমিয়েছে। আমাদের কাছ থেকে আয়কর নিচ্ছে , সেস নিচ্ছে। মাছের তেলে মাছ ভাজছে! আমাদের টাকা না নিলে আমরাই ৯০ % কাজের টাকা দিতে পারব।’’ মমতার অভিযোগ, ‘‘বিজেপির লোকেরা টাকা নিয়ে ঘুরছে। বলছে, আপনার মেয়ের বিয়ে দিয়ে দেব। ও টাকা ছোঁবেন না। বিজেপির টাকা লুটের টাকা, চুরির টাকা, ডাকাতির টাকা।’’