হাসপাতাল থেকে রোগী নিখোঁজ

হাসপাতালে চিকিৎসা করতে আসা রোগীর আত্মীয় ও স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রশ্ন, একজন অসুস্থ রোগী কী ভাবে হাসপাতালের ওয়ার্ড থেকে হেঁটে বেরিয়ে যেতে পারেন। কেউ নজর রাখলেন না কেন? এটা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা ছাড়া আর কিছু নয় বলে রোগীর আত্মীয়েরা জানান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

অশোকনগর শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৮ ০৩:২২
Share:

নিখোঁজ: নিতাই মণ্ডল

হাসপাতাল থেকে নিখোঁজ হলেন এক ব্যক্তি।

Advertisement

হৃদরোগ ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ১৮ জুলাই। রবিবার থেকে হঠাৎ তাঁকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান।

নিতাই মণ্ডল নামে ওই ব্যক্তির ছেলে মিলন মণ্ডল জানান, আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি ও বিভিন্ন এলাকায় খু্ঁজেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। মঙ্গলবার থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়েছে। হাবড়া জিআরপি থানায় তিনি বাবার ছবি দিয়ে এসেছেন।

Advertisement

নিতাইবাবুকে খুঁজে না পেয়ে রবিবার সকালে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি পুলিশকে জানান। পুলিশ জানিয়েছে, ওই ব্যক্তিকে খুঁজে বের করার জন্য সব রকম চেষ্টা করা হচ্ছে।

কিন্তু এই ঘটনায় অশোকনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। হাসপাতালে চিকিৎসা করতে আসা রোগীর আত্মীয় ও স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রশ্ন, একজন অসুস্থ রোগী কী ভাবে হাসপাতালের ওয়ার্ড থেকে হেঁটে বেরিয়ে যেতে পারেন। কেউ নজর রাখলেন না কেন? এটা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা ছাড়া আর কিছু নয় বলে রোগীর আত্মীয়েরা জানান। রোগীর এক আত্মীয় বলেন, ‘‘এখন থেকে রোগী হাসপাতালে ভর্তি থাকলে বাড়িতে নিশ্চিন্তে থাকা যাবে না। প্রয়োজনে হাসপাতাল চত্বরে পাহারা দিতে হবে।’’

পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর চুয়ান্নর ওই ব্যক্তিকে মেল মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। ওই ব্যক্তির বাড়ি গাইঘাটা থানার চাঁদপাড়া এলাকায়। তাঁর ছেলে মিলন পেশায় অটো চালক।

নিতাইবাবু অসুস্থ হয়ে পড়লে মিলন তাঁকে অশোকনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরিবারের লোকজন সকাল বিকেল তাঁকে হাসপাতালে দেখতে যেতেন। অভিযোগ, ২২ জুলাই সকাল ১০টা নাগাদ হাসপাতাল থেকে ফোন করে মিলনকে জানানো হয়, তাঁর বাবাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

হাসপাতালের পাশাপাশি আয়াদের দিকেও আঙুল তুলেছেন নিতাইবাবুর পরিবার। মিলন বলেন, ‘‘বাবাকে দেখাশোনার জন্য আয়া রাখা হয়েছিল। সকালে ও রাতে দু’জন আয়া ছিলেন। তাঁদের একশো টাকা করে দেওয়া হতো। ২১ জুলাই রাতেও টাকা দিয়ে এসেছি। তারপরও বাবা নিখোঁজ হয়ে গেলেন।’’ আয়ারা শুধু টাকা নেন রোগীর দেখাশোনা করেন না বলে অভিযোগ অন্য রোগীর আত্মীয়দেরও।

বাসিন্দারা জানান, হাসপাতালে সিসি ক্যামেরা, নিরাপত্তা কর্মীদের রেখে তা হলে কী লাভ, তা যদি কোনও কাজে না আসে।

হাসপাতাল সুপার সোমনাথ মণ্ডল বলেন, ‘‘গেটে নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন থাকে। কিন্তু সকালের দিকে রোগীর আত্মীরা রোগীকে চা দিতে ঢোকেন। কিন্তু রোগীদের আলাদা কোনও পোশাক না থাকায় আত্মীয় ও রোগীদের চিহ্নিত করা যায় না।’’

তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তিকে খুঁজতে সব রকমের চেষ্টা করা হচ্ছে। পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। ভবিষ্যতে যাতে আর কোনও রোগী নিখোঁজ হয়ে যেতে না পারেন তার জন্য পদক্ষেপ করা হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement