আঞ্চলিক দফতর হিমশিম খেয়ে যাচ্ছে। মেলা করেও পাসপোর্টের চাহিদা পূরণ করা যাচ্ছে না। তাই সেই সব ব্যবস্থার সঙ্গে সারা দেশে ৮৫টি ডাকঘর বেছে নেওয়া হয়েছে। এ বার সেই সব ডাকঘরেও পাসপোর্টের আবেদন জমা দেওয়া যাবে। সেই তালিকায় ঠাঁই পেয়েছে পশ্চিমবঙ্গের চারটি ডাকঘর।
পূর্বাঞ্চলের রিজিওনাল পাসপোর্ট অফিসার (আরপিও) বিভূতিভূষণ কুমার জানান, রায়গঞ্জ, আসানসোল, কৃষ্ণনগর এবং উত্তর কলকাতার একটি ডাকঘরকে এই পাইলট প্রকল্পের অঙ্গ হিসেবে বেছে নিয়েছে বিদেশ মন্ত্রক। ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ওই চারটি ডাকঘরে পাসপোর্টের আবেদনপত্র জমা নেওয়া হবে। এই প্রকল্প সফল হলে পরবর্তী কালে আরও কয়েকটি ডাকঘরে একই ব্যবস্থা চালু করা হতে পারে।
এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গে দু’টি পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্র (পিএসকে) রয়েছে, যেখানে পাসপোর্টের আবেদন নেওয়া হয়। কলকাতায় ইএম বাইপাসে রুবি মোড়ের কাছে একটি এবং অন্যটি বহরমপুরে। কয়েক মাসের মধ্যে শিলিগুড়িতেও এই ধরনের একটি কেন্দ্র চালু করার পরিকল্পনা আছে। পাসপোর্ট দফতর সূত্রের খবর, কলকাতা ও বহরমপুর কেন্দ্রেই আবেদনকারীদের চাপ ভীষণ বেড়ে গিয়েছে। প্রতিদিনই ওই দুই কেন্দ্রে প্রচুর আবেদনপত্র জমা পড়ে। ডাকঘরে আবেদন নেওয়া শুরু হলে ওই দুই কেন্দ্রের উপরে চাপ অনেক কমে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিভূতি জানান, সারা দেশেই পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্রগুলোর উপর থেকে চাপ কমাতে ডাকঘর ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পিএসকে-র মতো সেখানেও আবেদনকারীর ছবি তোলা হবে, আঙুলের ছাপ নেওয়া হবে, জমা দেওয়া নথিপত্র পরীক্ষা করা হবে। সেই সব ডাকঘরে নিয়োগ করা হবে পাসপোর্ট দফতরের অফিসারদের। গুজরাতের দাউদ-এ এবং কর্ণাটকের মহীশূরের ডাকঘরে পাসপোর্টের আবেদন নেওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে।
রাজ্যের ওই চারটি নির্দিষ্ট ডাকঘরে কি যে-কোনও এলাকার বাসিন্দারা আবেদনপত্র জমা দিতে পারবেন?
বিভূতি জানাচ্ছেন, সেটা করা যাবে না। প্রতিটি ডাকঘরের এলাকা ভাগ করে দেওয়া হচ্ছে। যেমন, উত্তর কলকাতার (খুব সম্ভবত বিডন স্ট্রিট) ডাকঘরে শুধু উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দারা গিয়ে আবেদন জমা দিতে পারবেন। কলকাতা বা রাজ্যের অন্য এলাকার
কোনও বাসিন্দা পারবেন না। কলকাতার বাসিন্দাদের যেতে হবে রুবি মোড়ের পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্রেই। আবার শুধু উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দাদের জন্য ডাকঘরে একটি কেন্দ্র চালু হচ্ছে বলে সেই এলাকার বাসিন্দারা রুবির পিএসকে-তে আবেদন জমা দিতে পারবেন না। তবে সেটা পরের ব্যাপার। ২৮ ফেব্রুয়ারির পরে কিছু দিন পরীক্ষামূলক ভাবে উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দাদের জন্য উত্তর কলকাতার ডাকঘর এবং রুবির পিএসকে, দু’টি কেন্দ্রই খোলা থাকবে। পরে তাঁদের জন্য রুবি মোড়ের পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্রের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হবে। একই ভাবে আসানসোল, কৃষ্ণনগর, রায়গঞ্জের ডাকঘরে এখন যাঁরা আবেদন জমা দেবেন, তাঁদের জন্য অন্য পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্রও খোলা থাকবে। কিন্তু পরে আস্তে আস্তে সেই সুযোগ বন্ধ হয়ে যাবে।