কথা ছিল তিনি আসবেন। ওয়ার্ডের প্রতিনিধিদের সঙ্গে অসমাপ্ত বৈঠক শেষ করবেন। কিন্তু নির্ধারিত দিনে যাননি শুভেন্দু অধিকারী। তাই স্থগিত হয়ে গিয়েছে বৈঠকও।
লোকসভা ভোটের পর পশ্চিম মেদিনীপুর তথা জঙ্গলমহলের দায়িত্ব শুভেন্দুকে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কাজও শুরু করে দিয়েছেন শুভেন্দু। দফায় দফায় হচ্ছে বৈঠক। ১৬ জুন খড়্গপুর পুরসভায় ওয়ার্ডের দলীয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে বসেন শুভেন্দু। দশজন করে প্রতিনিধি নিয়ে পৃথকভাবে আলোচনার কথা ছিল তাঁর। সেই মতো ওই দিন হাজির হয়েছিলেন শহরের ৩৫টি ওয়ার্ডের প্রতিনিধিরা। সাক্ষাৎকারের ধাঁচে ওই বৈঠকে এক-একটি ওয়ার্ডকে নিয়ে আলাদা আলোচনা শুরু করেছিলেন শুভেন্দু। যে সব ওয়ার্ডে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রয়েছে সেখানে দশজন প্রতিনিধি বাছাই নিয়ে গোলমাল দেখা যায়। শেষে ১২টি ওয়ার্ডের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার পরে চলে যান মন্ত্রী। তৃণমূল সূত্রের খবর ছিল, ২৪জুন ফের বাকি ওয়ার্ডগুলিকে নিয়ে তিনি আলোচনায় বসবেন। তবে ২৪ জুন শুভেন্দু অধিকারী শহরে না আসায় বৈঠক হয়নি। তৃণমূলের শহর সভাপতি রবিশঙ্কর পাণ্ডে বলেন, “২৪ জুন ১৩ নম্বর থেকে বাকি ওয়ার্ডগুলিকে নিয়ে মন্ত্রীর বসার কথা থাকলেও ওই বৈঠক স্থগিত হয়েছে। উনি পরে আসবেন বলেছেন।”
১৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর তথা তৃণমূলের জেলা নেতা দেবাশিস চৌধুরীও বলেন, “বাকি ওয়ার্ডগুলি নিয়ে ২৪জুন শুভেন্দু অধিকারীর বসার কথা ছিল। কিন্তু তিনি আসতে না পারায় কর্মীদের ওই দিনই জানিয়ে দিয়েছি।” তৃণমূল সূত্রের খবর, সাধারণত কথার খেলাপ করেন না শুভেন্দু। তা ছাড়া তৃণমূল সূত্রের খবর, শুভেন্দু ওই দিন বিদ্যাসাগর সমবায় ব্যাঙ্কের কাজে মেদিনীপুরেই ছিলেন তিনি। তা-ও কেন খড়্গপুরে বৈঠক করতে এলেন না? তৃণমূলের অন্দরে শুরু হয়েছে জল্পনা।
সম্প্রতি চন্দ্রকোনায় জনসংযোগ যাত্রায় যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় হাজির হলেও দেখা যায়নি শুভেন্দুকে। তৃণমূলের একাংশের বক্তব্য, ওই দিনের পর থেকে কিছুটা উদাসীন দেখাচ্ছে শুভেন্দুকে। খড়্গপুরের বৈঠকে অনুপস্থিতির সঙ্গে অনেকে এর যোগসূত্রও টানছেন। শুভেন্দু নিজে অবশ্য বলছেন, ‘‘উদাসীন হওয়ার প্রশ্ন নেই। শিগগিরিই পশ্চিম মেদিনীপুরে যাব।’’ যদিও শুভেন্দু ঘনিষ্ঠদের একাংশের দাবি, জেলার পুরো কর্তৃত্ব না পাওয়া পর্যন্ত পুরোদস্তুর সক্রিয় হওয়ার ক্ষেত্রে মন্ত্রী কিছুটা নিমরাজি।
২৪ জুন প্রতিনিধিদের নিয়ে পুরসভা গিয়েও ফিরে আসতে হয়েছে কয়েকজন কাউন্সিলরকে। তাঁদেরই একজন বললেন, ‘‘কথা ছিল ২৪জুন শুভেন্দুদা ফের আলোচনায় বসবেন। কিন্তু সেটাও না হওয়ায় কর্মীদের কাছে আমাদের মুখ পুড়ছে।” পুরপ্রধান প্রদীপ সরকারের মন্তব্য, “শুভেন্দুদা বলেছেন পরে দিনক্ষণ জানাবেন। দল শুভেন্দুদাকে পর্যবেক্ষক করেছে। উনি যেভাবে বলবেন সে ভাবে চলব। আমরা আশাবাদী শীঘ্র উনি সময় দেবেন।”