তাঁকে কেউ ‘কালিমালিপ্ত’ করতে পারবেন না, জানালেন পার্থ। নিজস্ব চিত্র।
দল তাঁকে নিয়ে যাই বলুক বা তাঁকে নিয়ে যাই সিদ্ধান্ত নিক, তিনি আছেন তৃণমূলেই। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইডির হাতে ধৃত পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে বার বার এই কথা বলতেই শোনা গিয়েছে। বৃহস্পতিবার আলিপুর আদালত চত্বর থেকেও তাঁকে একই কথা বলতে শোনা গেল। আবারও তিনি জানিয়ে দিলেন, তিনি দলের সঙ্গেই আছেন। তবে এ বার তাঁর কণ্ঠ অনেক দৃঢ়। গলার ভার অনেক বেশি। যেন নিজের আওয়াজ অনেক দূর পর্যন্ত পৌঁছে দিতে চান তৃণমূলের বহিষ্কৃত নেতা। যেন বোঝাতে চাইলেন, একই প্রশ্নের জবাব দিতে দিতে তিনি বেশ বিরক্ত। পাশাপাশি তিনি এই দিন এ-ও জানিয়ে দেন, চেষ্টা করেও তাঁকে কেউ ‘কালিমালিপ্ত’ করতে পারবেন না।
আলিপুর আদালত চত্বর থেকে মামলার শুনানি শেষে বেরনোর সময় গাড়িতে ওঠার আগে পার্থকে জিজ্ঞাসা করা হয়, তিনি কি এখনও তৃণমূলের সঙ্গেই আছেন? জবাবে চোখ বড় বড় করে প্রায় চিৎকার করে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে বললে শোনা যায়, ‘‘আছি, আছি, আছি’’!
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থ গ্রেফতার হওয়ার পর পরই মন্ত্রিত্ব যায় পার্থের। পাশাপাশি তাঁকে তৃণমূলের সমস্ত দলীয় পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। দলের তরফে এমন দূরত্ব বৃদ্ধির পরও পার্থ বলেন, ‘‘দলের সঙ্গে ছিলাম, দলের সঙ্গে আছি।’’
এর আগেও আদালত চত্বরে পার্থকে একাধিক বার দলের এবং দলীয় কর্মীদের পাশে থাকার কথা বলতে শোনা গিয়েছে। সুযোগ পেলেই উৎসবের আবহে তিনি তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের শুভেচ্ছাবার্তাও দিয়েছেন। যদিও তাঁকে সন্তর্পণে এড়িয়েই গিয়েছে তৃণমূল। বৃহস্পতিবারও পার্থ বলেন, তিনি তৃণমূলের সঙ্গে আছেন। কিন্তু এ বার খানিক সুর চড়িয়ে।
আদালতের বাইরে পার্থর দিকে প্রশ্ন ভেসে আসে, তাঁর ব্যক্তি এবং রাজনৈতিক জীবনকে কি কালিমালিপ্ত করার প্রচেষ্টা করা হচ্ছে! উত্তরে তিনি বলেন, ‘‘যাঁরা নিজেরা কালি মেখে আছেন, তাঁরা আবার কী কালিমালিপ্ত করবেন।’’ যদিও কে বা কারা তাঁকে ‘কালিমালিপ্ত’ করার চেষ্টা করেছেন, সে বিষয়ে পার্থ কিছু জানাননি।
ঘটনাচক্রে, বৃহস্পতিবার সকালে আদালতে ঢোকার মুখে বিরোধী রাজনৈতিক দলের তিন নেতা সুজন চক্রবর্তী, দিলীপ ঘোষ এবং শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন পার্থ। তাঁর দাবি ছিল, এক সময় এই নেতারা তাঁকে চাকরির সুপারিশের জন্য বিভিন্ন লোকের নাম পাঠিয়েছিলেন। পার্থ আরও দাবি করেছেন, তিনি এই নেতাদের স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন যে, তিনি কোনও বেআইনি কাজ করতে পারবেন না।