বিকাশ ভবন। —ফাইল চিত্র।
শিক্ষা দফতরের অনুমতি ছাড়া কোনও স্কুলে নিয়োগ করা যাবে না আংশিক সময়ের স্কুলশিক্ষক। সম্প্রতি এমনই এক সিদ্ধান্তের কথা জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকদের (ডিআই) জানিয়েছে শিক্ষা দফতর। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে ২৬ হাজার শিক্ষক কর্মচ্যুত হওয়ার পর আপাতত সুপ্রিম কোর্ট তাঁদের স্বস্তি দিয়েছে। ঠিক তার পরেই এই সংক্রান্ত বিষয়ে কড়া সিদ্ধান্ত নিয়ে ডিআইদের নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। যদিও শিক্ষা দফতরের একটি সূত্র জানাচ্ছে, এই সিদ্ধান্ত আগেই কার্যকর করেছে শিক্ষা দফতর। কিন্তু তা আবারও স্কুলগুলিকে স্মরণ করিয়ে দিতেই এই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে।
কারণ প্রসঙ্গে বিকাশ ভবনের একটি সূত্র জানাচ্ছে, সম্প্রতি কয়েকটি বিজ্ঞাপন শিক্ষা দফতরের নজরে এসেছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা সরকারি স্কুলগুলি নিজেদের প্রয়োজন মতো আংশিক সময়ের শিক্ষক নিয়োগ করছে। মাসিক ১২০০ থেকে ২০০০ টাকার সাম্মানিকের বিনিময়ে বিষয়ভিত্তিক অস্থায়ী শিক্ষকের বিজ্ঞাপন দেওয়া হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে শর্ত দেওয়া হচ্ছে যে, আবেদনকারীর বিএড আবশ্যিক হতে হবে। বিজ্ঞাপন দেখে স্কুলগুলিতে আবেদন জমা পড়ছে। সব কিছু যাচাই করে, স্কুলের পরিচালন সমিতির সম্মতি নিয়ে নিজেদের প্রয়োজনমাফিক শিক্ষক নিয়োগ করা হচ্ছে।
শিক্ষা দফতরের একাংশের মতে, এ ভাবে কোনও নিয়ন্ত্রণ ছাড়া শিক্ষক নিয়োগ হলে পরে তাঁরা স্থায়ীকরণের দাবি জানিয়ে আন্দোলনও করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে বিপাকে পড়তে হবে সরকারকে। তাই শিক্ষা দফতরের তথা জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকদের আগাম অনুমতি ছাড়া স্কুলে কোনও আংশিক সময়ের শিক্ষক নিয়োগ করা যাবে না। তাই শিক্ষা দফতরের নির্দেশের জেলার ডিআইরা নির্দেশিকা জারি করে জেলাভিত্তিক স্কুলগুলিকে এ কথা মনে করিয়ে দিচ্ছেন।
শিক্ষক সংগঠনগুলি মনে করছে, আংশিক সময়ের শিক্ষক নিয়োগ অনিবার্য হয়ে পড়েছে। কারণ, দীর্ঘ দিন ধরে মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষক নিয়োগ হয়নি। তাই বাধ্য হয়েই স্কুলগুলিকে পঠনপাঠনের স্বার্থে আংশিক সময়ের শিক্ষক নিয়োগ করতে হয়। ডিআইদের নির্দেশিকা মেনে স্কুলগুলিও আপাতত আংশিক সময়ের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ করছে। কিন্তু তাদের দাবি, স্কুলের স্বার্থে শিক্ষা দফতরকেও মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টি ত্বরান্বিত করা উচিত।