ফাইল চিত্র। ফাইল চিত্র।
বাড়ি থেকে বহু দূরে বদলির নির্দেশের প্রতিবাদে সম্প্রতি কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন কিছু পার্শ্ব শিক্ষিকা। সেই ঘটনাকে ঘিরে হুলস্থুল বেধে গিয়েছিল। অভিযোগ উঠেছিল, সেই বদলি বেআইনি। প্রতিবাদী শিক্ষিকারা কিছু দিন আগে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। এ বার সার্বিক ভাবে পার্শ্ব শিক্ষিকাদের বদলি নীতি বলবৎ করতে চলেছে রাজ্য সরকার।
বৃহস্পতিবার বিকাশ ভবনে শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চের সঙ্গে বৈঠকের শেষে এ কথা জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, ‘‘পার্শ্ব শিক্ষিকাদের বদলি ছাড়াও পুরসভার শিশু শিক্ষা কেন্দ্র বা এসএসকে, মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্র বা এমএসকে-র শিক্ষক-শিক্ষিকাদের শিক্ষা দফতরে আনা যায় কি না, সেই সংক্রান্ত ফাইলটিও দেখছি।’’ এসএসকে এবং এমএসকে শিক্ষক-শিক্ষিকারা এখন আছেন পুরসভার অধীনে। শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাস, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলে পার্শ্ব শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অন্যান্য দাবি যতটা সম্ভব পূরণ করা হবে।
বাম জমানায় স্কুলে নিয়মিত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সাহায্য করার জন্য সরকার চুক্তির ভিত্তিতে পার্শ্ব শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগ করেছিল। চুক্তি-ভিত্তিক নিয়োগ বলে এত দিন তাঁদের বদলি করা যেত না। এর মধ্যে নিজেদের বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে পার্শ্ব শিক্ষক-শিক্ষিকারা আন্দোলন শুরু করেন। অভিযোগ, শাস্তি হিসেবে সেই আন্দোলনকারী শিক্ষিকাদেরই কয়েক জনকে দূরে বদলি করে দেয় সরকার। বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। পরে শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক মইদুল ইসলাম-সহ মঞ্চের সকলেই তৃণমূলে যোগ দেন।
প্রশ্ন উঠছে, যে-বদলির বিরুদ্ধে এত হইচই, সরকার সেটা এখন সেই সংক্রান্ত নীতি প্রয়োগ করতে চলেছে কেন? পার্শ্ব শিক্ষিকাদের বদলি করা হলেও পার্শ্ব শিক্ষকদের কেন বদলির আওতায় আনা হচ্ছে না?
মইদুল এ দিন বলেন, ‘‘প্রথমত এটা স্বেচ্ছা-বদলি। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, কমবয়সি শিক্ষিকারা এই কাজে যোগ দেওয়ার পরে বিবাহ সূত্রে দূরে চলে যাচ্ছেন। দূর থেকে তাঁদের চাকরি করতে সমস্যা হচ্ছে। এই কারণেই সরকার চাইছে, শুধু যাঁরা চাইবেন, তাঁরাই বদলির সুবিধা পাবেন। আর শিক্ষকদের যে-হেতু অন্যত্র যাওয়ার প্রশ্ন নেই, তাই তাঁদের এই বদলির তালিকায় রাখা হয়নি।’’
ব্রাত্যবাবু জানান, যে-সব পার্শ্ব শিক্ষিকা কীটনাশক পান করেছিলেন, তাঁরা মামলা প্রত্যাহার করলে, তাঁদের বদলি রদের বিষয়টিও ভেবে দেখা হবে। এ দিন বৈঠকের পরে মইদুল বলেন, ‘‘পার্শ্ব শিক্ষিকারা চাইল্ড কেয়ার লিভ-ও পাবেন বলে শিক্ষামন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন। প্রতিশ্রুতি দেন, আমাদের বেতন বৃদ্ধির ব্যাপারেও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করবেন।’’