পরিসংখ্যানে বাম জমানার তুলনায় পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। কিন্তু এখনও সাড়ে সাড়ে আট শতাংশ শিশুর অপুষ্টি (আন্ডারওয়েট) রয়েছে। আর এ ক্ষেত্রে সামনের সারিতেই রয়েছে জঙ্গলমহল। পশ্চিম মেদিনীপুরের সংখ্যার নিরিখে অপুষ্টিতে ভুগছে অন্তত ৪৮ হাজার শিশু। মে পর্যন্ত হিসেব অনুযায়ী শতাংশের নিরিখে ঝাড়গ্রামে সেই হার ১৬.০২। তবে মাসভিত্তিক এই তথ্যের হেরফের হয়। অপুষ্টি থেকে শিশুদের ‘মুক্ত’ করতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে অপুষ্টিজনিত সমস্যায় ভোগা শিশুদের জন্য ‘রেডি টু ইট’ প্যাকেট তৈরি করছে তারা।
সোমবার বিধানসভায় শিশুদের অপুষ্টিজনিত সমস্যার প্রসঙ্গ তোলেন সিপিএম বিধায়ক সমর হাজরা। সেই প্রশ্নের জবাবে নারী ও শিশু বিকাশ এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা জানান, ২০১১ সালের মে পর্যন্ত রাজ্যে অপুষ্টি শিশুর হার ছিল ৪৭.৫২ শতাংশ। আর বর্তমানে তা ৮.৫৬ শতাংশ। সংখ্যার নিরিখে তা ৫,৩০,৮৭৫ জন। বর্তমানে ৭৭ লক্ষ শিশু অঙ্গনওয়াড়িতে খাবার পায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের অঙ্গনওয়াড়িতে খাওয়ানোর পাশাপাশি তাদের বাড়িতে দেওয়ার জন্য একটি প্যাকেট তৈরি করছে রাজ্য সরকার। যা বাড়িতে নিয়ে জলে গুলেই খেয়ে নিতে পারবে শিশুরা। গম, বাদাম, ছোলা এবং চিনি দিয়ে তৈরি হচ্ছে সেই প্যাকেট। সেটি তৈরি করছেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যেরা। দু’টি জেলায় তা তৈরি হয়েছে। আরও চারটি জেলার তার প্রস্তুতি চলছে। কিছু দিনের মধ্যেই ওই ‘রেডি টু ইট’ প্যাকেটের বিষয়টি আনুষ্ঠানিক ভাবে সামনে আনবে সরকার। প্যাকেটটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে প্রাতরাশ হিসেবে পাবে স্বাভাবিক শিশুরা।
জঙ্গলমহলে অপুষ্টির সমস্যা বেশি। তবে তা পরিবর্তনশীল বলেই দাবি প্রশাসনিক কর্তাদের। অপুষ্টির ক্ষেত্রে প্রভূত উন্নতি করছে মুর্শিদাবাদ। সেখানে মাত্র ৪.০৭ শতাংশ শিশুর অপুষ্টির সমস্যা রয়েছে। কলকাতায় ৭.৫৬ শতাংশ শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে। তবে এই সংখ্যা অঙ্গনওয়াড়িতে আসা শিশুদের নিরিখেই। বাম জমানার থেকে সংখ্যাটা অনেক কমেছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অপুষ্টিতে ভোগা শিশুর সংখ্যা অনেকটা কমবে বলেই অভিমত রাজ্য সরকারের কর্তাদের।