৮ মাসেও বিধি হয়নি, গতি নেই লোকায়ুক্তে

বিধি না হওয়ায় কাজের কি কোনও সমস্যা হচ্ছে? মন্তব্য করতে চাননি বর্তমান লোকায়ুক্ত অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অসীম রায়।

Advertisement

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০১৯ ০২:০৬
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

গত সেপ্টেম্বরে আইন সংশোধন হয়েছে। লোকায়ুক্ত নিযুক্ত হয়েছেন এ বছর জানুয়ারিতে। কিন্তু আইন সংশোধনের ৮ মাস পরেও তা বলবৎ করার জন্য বিধি তৈরি করতে পারেনি সরকার। ফলে জনপ্রতিনিধি বা সরকারি কর্তাদের দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত পুরোদমে শুরু করা যাচ্ছে না বলে নবান্ন সূত্রের খবর। কারণ, বিধি তৈরি না হওয়ায় লোকায়ুক্তের কাজের পরিধি ও প্রক্রিয়া নির্দিষ্ট করা যায়নি।

Advertisement

বিধি না হওয়ায় কাজের কি কোনও সমস্যা হচ্ছে? মন্তব্য করতে চাননি বর্তমান লোকায়ুক্ত অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অসীম রায়। তাঁর কথায়, ‘‘টুকটাক অভিযোগ যা এসেছে, তার উপর কাজ হয়েছে। বিধি তৈরি নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনা চলছে।’’

লোকায়ুক্তের নিয়ন্ত্রক হল কর্মিবর্গ ও প্রশাসনিক সংস্কার দফতর। দফতরের এক কর্তার বক্তব্য, ‘‘বিধি না হলে কাজ চলবে না, এ কথা আইনে কোথাও বলা নেই। তবে বিধি কখন, কী ভাবে তৈরি হবে, বা আদৌ তৈরি হবে কিনা, তা ঠিক করবে সরকার। আমরা লোকায়ুক্তের দফতরের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা চালাচ্ছি।’’

Advertisement

নবান্নের খবর, আইন তৈরি করে কোনও নীতি, প্রকল্প বা কর্তব্য ঘোষণা করে সরকার। কী ভাবে তার প্রয়োগ হবে তা বোঝানোর জন্য বিধি তৈরি করতে হয়। সেই বিধিতেই আইনটি প্রয়োগের সরকারি পদ্ধতি বিশদে বলা থাকে। আইনের পরে বিধি তৈরি হলেই তা বাস্তবায়িত হয়। কাজ চলার সময় কখনও বিধির কর্মপদ্ধতি উপযুক্ত বা যথেষ্ট না মনে হলে সরকার আদেশনামা বার করে। এ ভাবেই প্রশাসন চলে। কোনও ক্ষেত্রে আইনের মধ্যে তা কার্যকরের পদ্ধতি বলা থাকলে বিধির প্রয়োজন পড়ে না। ২০১৮-য় সংশোধনের পরে লোকায়ুক্ত আইন সম্পূর্ণরূপে কার্যকর করতে বিধির প্রয়োজন আছে বলে মনে করছেন নবান্নের কর্তাদের একাংশ।

রাজ্যের লোকায়ুক্ত আইন পাশ হয়েছিল ২০০৩ সালে। ২০০৭-এ তাতে সংশোধনী এসেছিল। গত বছর ফের একবার সংশোধনী এনে তিনটি বিষয় পরিবর্তন করা হয়েছে। প্রথমত, লোকায়ুক্ত নিয়োগের কমিটিতে বিধানসভার স্পিকার, মুখ্যমন্ত্রী, বিরোধী দলনেতার সঙ্গে সংসদীয় মন্ত্রীকে রাখা হয়েছে। দ্বিতীয়ত বলা হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ‘পাবলিক অর্ডার’ রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত কোনও দুর্নীতির অভিযোগ এলে তা লোকায়ুক্তের বিচার্য হবে না। তবে তাঁর বিরুদ্ধে অন্য কোনও দুর্নীতির অভিযোগ এলে তা বিধানসভায় দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের উপস্থিতিতে ভোটাভুটির মাধ্যমে অনুমোদিত হলে তবে লোকায়ুক্ত গ্রহণ করতে পারবেন। আমলাদের ক্ষেত্রে সরকারি অনুমোদন ছাড়া কোনও তদন্ত করা যাবে না। এ ছাড়া, উপ-লোকায়ুক্তের পদও নতুন সংশোধনীতে বিলোপ করা হয়েছে।

সল্টলেকের ময়ূখ ভবনে তৈরি হয়েছে লোকায়ুক্তের নতুন দফতর। কর্মী নিয়োগও হয়েছে। কিন্তু বিধি না হওয়ায় কাজ শুরু হয়নি পুরোদমে।

নবান্নের এক কর্তার তির্যক মন্তব্য, ‘‘২০১৩ সালে সংসদে জমি অধিগ্রহণ আইন পাশ হয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত রাজ্যে তার বিধি তৈরি হয়নি!’’

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement