কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে বুধবার শুনানি হতে পারে কলকাতা হাই কোর্টে। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
পঞ্চায়েত ভোটের বাকি আর মাত্র চার দিন। কিন্তু বাহিনী আর দফার হিসাব মেলানো যাচ্ছে না এখনও। এই পরিস্থিতিতে সোমবার জটিলতা আরও বেড়ে গিয়েছে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে। প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ মঙ্গলবার পর্যবেক্ষণে জানায়, পঞ্চায়েত ভোটে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে অর্ধেক কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং অর্ধেক রাজ্য পুলিশ থাকবে। আর তা ঘিরেই নতুন করে টানাপড়েনে রাজ্য নির্বাচন কমিশন।
কমিশন সূত্রের খবর, এ ক্ষেত্রে হাই কোর্টের নির্দেশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর মোতায়েন-বিধি নিয়ে সমস্যা রয়েছে। হাই কোর্টের নির্দেশে পঞ্চায়েত ভোটে রাজ্যে আসছে ৮২২ কোম্পানি (প্রায় ৮২ হাজার সদস্য) কেন্দ্রীয় বাহিনী। তাদের মধ্যে সরাসরি ভোটের কাজে ব্যবহার করা যাবে ৬৫ হাজার কেন্দ্রীয় জওয়ান এবং অফিসারকে। মঙ্গলবার রাজ্য সরকারি কর্মীদের দায়ের করা মামলার শুনানিতে ডেপুটি সলিসিটর জেনারেল বিল্বদল ভট্টাচার্য জানান, কেন্দ্রীয় বাহিনীর ৬৫ হাজার জওয়ান এবং রাজ্য পুলিশের ৭০ হাজার কর্মীকে সমান অনুপাতে ব্যবহার করলে এই সমস্যার সমাধান করা যাবে। এর পর হাই কোর্ট বিএসএফের আইজি-কে নির্দেশ দেয়, রাজ্য জুড়ে সমান ভাবে বাহিনী মোতায়েন করার।
কিন্তু এ ক্ষেত্রে সমস্যা কেন্দ্রীয় বাহিনী ‘সাধারণ কার্যপ্রণালীতে’। ওই নিয়ম অনুযায়ী, যে কোনও জায়গায় ৪ জনের কম জওয়ান মোতায়েন করা যায় না। ফলে ওই নিয়ম মেনে রাজ্যের ৪৪ হাজার ৩৮২টি ভোটকেন্দ্রের ৬৩ হাজার ২৮৩ বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা যাবে না। এমনকি, প্রতি ভোটকেন্দ্রেও চার জন করে জওয়ান মোতায়েন করা সম্ভব নয়। এই আবহে আবার তাই সামনে আসছে দফা বাড়ানোর দাবি।
দফা বাড়ানোর মূল মামলাটির শুনানি মঙ্গলবার হাই কোর্টে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দুপুর সাড়ে ৩টে পর্যন্ত অন্য মামলার শুনানিতে দুই বিচারপতি ব্যস্ত থাকায় বসতে পারেনি প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ। বুধবার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর দায়ের করা ওই মামলার শুনানি হতে পারে। প্রসঙ্গত, কলকাতা হাই কোর্টে পঞ্চায়েত ভোটের দফা বৃদ্ধির আর্জি জানিয়ে জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন ভাঙড়ের বিধায়ক তথা আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। তাঁর যুক্তি ছিল, হয় পঞ্চায়েত ভোটে আদালতের নির্দেশ মতো পর্যাপ্ত বাহিনী আনা হোক অথবা পঞ্চায়েত ভোটের দফা বৃদ্ধি করা হোক। কিন্তু সোমবার সেই আবেদন খারিজ হয়ে যায়।
রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পর্যবেক্ষক থাকবেন কি না, তা নিয়ে মঙ্গলবারও সিদ্ধান্ত হল না কলকাতা হাই কোর্টে। বাংলার পঞ্চায়েত ভোটে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পর্যবেক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে মামলা করেছিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। মঙ্গলবার কমিশন বনাম কমিশনের সেই মামলা উঠেছিল হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে। কিন্তু মামলার শুনানি হলেও শেষ পর্যন্ত রায় ঘোষণা হয়নি। দুই বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, আপাতত এই মামলায় রায় ঘোষণা স্থগিত রাখা হল।
এই আবহে মঙ্গলবার দিনভর পঞ্চায়েতের প্রচার ঘিরে জেলায় জেলায় উত্তেজনা এবং বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। হয়েছে দলবদলও। এমনকি, প্রচারে গিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী অসুস্থও হয়ে পড়েছেন।
ভাঙড়ে বোমাবাজির অভিযোগ
পঞ্চায়েত ভোটের মুখে তৃণমূল এবং আইএসএফ সংঘর্ষে আবার উত্তেজনা ছড়াল ভাঙড়ে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাতে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। তার জেরে উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। সোমবার রাতে তৃণমূল এবং আইএসএফের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটে ভাঙড়ের মাঝেরআইট এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ জানাচ্ছেন, দু’পক্ষের মধ্যে বোমাবাজি হয়। দু’পক্ষের সমর্থকদের কয়েকটি বাড়িও ভাঙচুর করা হয়েছে। ওই ঘটনার জেরে উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ বাহিনী। তবে প্রাথমিক ভাবে পুলিশ এলাকায় ঢুকতে পারেনি বলে স্থানীয়দের একাংশের দাবি। যদিও গভীর রাতে এলাকায় ঢুকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আইএসএফের অভিযোগ, তৃণমূল নেতাদের নির্দেশে পুলিশ বেছে বেছে তাদের কর্মীদের আটক করছে। যদিও এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল। পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন পর্বে তৃণমূল এবং আইএসএফের মধ্যে সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল ভাঙড়। ভাঙড়-১ এবং ভাঙড়-২ ব্লক জুড়ে কয়েক দফায় সেই সংঘর্ষে তিন জনের মৃত্যুও হয় ওই পর্বে। তার পর আবার নতুন করে উত্তেজনা ছড়াল ভাঙড়ে।
কুলতলিতে গুলিবিদ্ধ তৃণমূল প্রার্থী
পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে শাসকদলের এক প্রার্থীকে গুলি করার অভিযোগ উঠল সিপিএমের বিরুদ্ধে। সোমবার রাতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলিতে এই ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ দায়ের হয়েছে পুলিশের কাছে। যদিও সিপিএমের দাবি তৃণমূল মিথ্যা অভিযোগ করছে। আদপেই কোনও গুলি চালানোর ঘটনা ঘটেনি। তৃণমূলের দাবি, সোমবার রাতে নির্বাচনী প্রচারে বেরিয়েছিলেন পঞ্চায়েতের দলীয় প্রার্থী কুতুবউদ্দিন ঘরামি। তিনি মেরিগঞ্জ-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের ১২ নম্বর সংসদের প্রার্থী। দলীয় কর্মীদের নিয়ে বাড়ি বাড়ি ঘুরে ভোটের প্রচার করার সময় তাঁর উপর হামলার ঘটনা ঘটে। তৃণমূলের অভিযোগ, দলীয় প্রার্থীর ডান পায়ে গুলি লেগেছে। আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে দলীয় কর্মীরাই স্থানীয় জামতলা হাসপাতালে নিয়ে যান। প্রাথমিক চিকিৎসার পর কুতুবউদ্দিনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনায় তৃণমূলের তরফে কুলতলি থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশের কাছে সিপিএমের বিরুদ্ধেই হামলা চালানোর অভিযোগ করা হয়। তৃণমূল নেতা ও অঞ্চল সভাপতি জাকির হোসেন শেখ বলেন, “ভোটে জিততে সিপিএম এবং এসইউসিআই যৌথ হামলা চালিয়েছে।” যদিও সিপিএম এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। সিপিএম জেলা কমিটির সদস্য উদয় মণ্ডল বলেন, ‘‘ভোটের আগে দলীয় কর্মীদের ফাঁসাতে মিথ্যা অভিনয় করা হচ্ছে। গুলি চালানোর ঘটনাই ঘটেনি।’’ তবে পুলিশ জানিয়েছে, এলাকায় গুলি চলেছে কি না এবং সেই গুলি কারা চালিয়েছে, কেউ আহত হয়েছে কি না এ সবই তারা তদন্ত করে দেখছে। বারুইপুরের এসডিপিও অতীশ বিশ্বাস জানিয়েছেন, দ্রুত প্রকৃত ঘটনা জানার চেষ্টা চালাচ্ছেন তাঁরা। তদন্ত শুরু হয়েছে।
অস্ত্র-সহ দুষ্কৃতী গ্রেফতার
পঞ্চায়েত ভোটের মুখে আসানসোলের সালানপুর থানার হরিসাডি গ্রামে অভিযান চালিয়ে সোমবার রাতে আগ্নেয়াস্ত্র-সহ তিন দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতদের সঙ্গে আরও তিন জন ছিল বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। তাদের খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতদের কাছ থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র এবং একটি কার্তুজ উদ্ধার হয়েছে। পুলিশের দাবি, ধৃতদের সঙ্গে ছিল আরও তিন জন। তবে তাঁরা পালিয়ে গিয়েছেন বলে পুলিশের বক্তব্য। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তাদের খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ। সালানপুর থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত স্থানীয় এক বাসিন্দার সঙ্গে ভিন্রাজ্যের জামতাড়া ও জামুইয়ের দুষ্কৃতীদের সঙ্গে যোগ পাওয়া গিয়েছে।
ভাঙড়ে ভাঙন আইএসএফে
পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে ভাঙড়ে ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ) শিবিরে ভাঙন। মঙ্গলবার ৩০০ জন আইএসএফ নেতা-কর্মী দল ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন এমনটাই দাবি জোড়াফুল শিবিরের। যদিও তৃণমূলের সেই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে আইএসএফ। মঙ্গলবার সকালে এলাকার তৃণমূল প্রার্থীদের সমর্থনে ভুমরু থেকে কাটাডাঙা পর্যন্ত পদযাত্রা করে তৃণমূল। ওই পদযাত্রায় উপস্থিত ছিলেন ভাঙড়ের পর্যবেক্ষক তথা ক্যানিং পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক শওকত মোল্লা, আরাবুল ইসলাম, তাঁর পুত্র হাকিমুল ইসলাম-সহ অনেকে। পদযাত্রা শেষে কাটাডাঙা গ্রামের প্রায় ৩০০ আইএসএফ নেতা-কর্মী দল ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন। তাঁদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন শওকত এবং আরাবুল। পরে শওকত বলেন, ‘‘বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে কাঁটাডাঙা গ্রামে কোনও উন্নয়ন হয়নি। ওই এলাকার মানুষের কিছু দাবি আছে। আমরা পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর সেই কাজ করে দেব।’’ দলে ভাঙনের কথা অবশ্য মানছেন না আইএসএফ নেতারা। তাঁদের দাবি, তৃণমূল কর্মীদেরই দেখিয়ে দলবদলের তত্ত্ব খাড়া করছে জোড়াফুল শিবির।
পতাকা ছেঁড়া নিয়ে ধুন্ধুমার বাঁকুড়ায়
তৃণমূলের পতাকা ছেঁড়ার অভিযোগকে কেন্দ্র করে সোমবার রাতে তুলকালাম কাণ্ড বাধল বাঁকুড়ার শালতোড়ার কেলাই গ্রামে। ওই গ্রামেই বাড়ি শালতোড়ার বিজেপি বিধায়ক চন্দনা বাউড়ির। অভিযোগ, তৃণমূলের লোকজন চন্দনার চার আত্মীয়ের উপর চড়াও হয় লাঠি এবং কুড়ুল নিয়ে। তার আঘাতে বিধায়কের চার আত্মীয় জখম হয়েছেন। অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। তাদের দাবি, গোটাটাই বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। বিধায়ক চন্দনার দাবি, তৃণমূলের নেতারা গ্রামে ভোটপ্রচারে গেলে অনুন্নয়নের অভিযোগ তুলে গ্রামবাসীরা বিক্ষোভ দেখালে তাঁরা পালিয়ে যান। চন্দনা বলেন, ‘‘এই ঘটনার পর গ্রামের এক তৃণমূল নেতা দলীয় পতাকা ছিঁড়ে ফেলার মিথ্যা অভিযোগ তুলে আমার আত্মীয়দের গালিগালাজ করতে থাকে। প্রতিবাদ করলে তৃণমূলের লোকজন লাঠি এবং কুড়ুল নিয়ে হামলা চালায়। ঘটনায় দু’জন নাবালক-সহ মোট চার জন আত্মীয় গুরুতর আহত হয়েছে।’’ এই ঘটনায় সোমবার রাতে গঙ্গাজলঘাঁটি থানায় লিখিত অভিযোগ জানান বিধায়কের আত্মীয়েরা। রাতেই কেলাই গ্রামে মোতায়েন করা হয় পুলিশ। হামলার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূল নেতারা। তৃণমূলের গঙ্গাজলঘাঁটি-২ সাংগঠনিক ব্লকের সহ-সভাপতি জিতেন গড়াই বলেন, ‘‘রাজনৈতিক সংঘর্ষ বা হামলার কোনও ঘটনা ঘটেনি। বিজেপির দু’টি গোষ্ঠী মত্ত অবস্থায় নিজেদের মধ্যে মারামারি করেছে। এর সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই।’’
বোমা ফেটে শিশু-সহ জখম তিন
বোমা ফেটে আবার জখম হওয়ার ঘটনা ঘটল রাজ্যে। পঞ্চায়েত ভোটের মুখে এ বার বোমা ফেটে তিন জন আহত হলেন কোচবিহারের দিনহাটায়। জখমদের মধ্যে রয়েছে দুই শিশুও। আহতদের ভর্তি করানো হয়েছে দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে। আহতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে পুলিশ। কী কারণে বিস্ফোরণ ঘটল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলছেন তদন্তকারীরা। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ পুলিশ জানতে পারে ৪-৫টি বোমা বিস্ফোরণ ঘটেছে দিনহাটার গোসানিমারি এলাকার ছোট নাটাবাড়িতে। সাত্তার মিয়া নামে ওই এলাকার এক বাসিন্দার বাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটে বলে জানিয়েছেন কোচবিহারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সানি রাজ। তার জেরে জখম হন সাত্তার এবং মুজফ্ফর মিয়া নামে দুই প্রৌঢ়। এ ছাড়া লতিফ মিয়া এবং লুতফর মিয়া নামে দুই শিশুও বিস্ফোরণে জখম হয়। তাঁদের ভর্তি করানো হয় দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে। কোচবিহারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরও জানিয়েছেন, ওই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। সাত্তারের বাড়িতে বোমা কোথা থেকে এল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের।
৮২ জন আইএসএফ প্রার্থীতে ‘না’ কোর্টের
মনোনয়ন জমা দিলেও ভাঙড়ের ৮২ জন আইএসএফ প্রার্থী পঞ্চায়েত ভোটে লড়তে পারবেন না। মঙ্গলবার জানিয়ে দিল কলকাতা হাই কোর্ট। এই প্রার্থীদের এর আগে ভোটে লড়ার সুযোগ করে দিতে কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিংহের একক বেঞ্চ। কিন্তু মঙ্গলবার বিচারপতি সিংহের সেই নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিল হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। পঞ্চায়েত ভোটে লড়ার সুযোগ চেয়ে সোমবারই হাই কোর্টে মামলা করেছিলেন ভাঙড়ের এই ৮২ জন পঞ্চায়েত প্রার্থী। এঁরা প্রত্যেকেই পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়ন জমা দিলেও তাঁদের নাম হঠাৎ মুছে গিয়েছিল রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে। সোমবারের এই মামলায় বিচারপতি সিংহ কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অভিযোগ খতিয়ে দেখতে হবে। একই সঙ্গে বিচারপতি বলেছিলেন, আইএসএফ প্রার্থীদের অভিযোগ সত্য হলে তাঁদের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগও করে দিতে হবে কমিশনকে। কিন্তু কমিশন সেই নির্দেশের পরেও কোনও পদক্ষেপ করেনি জানিয়ে হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিলেন এই প্রার্থীরা। মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত মামলা ওঠে বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি রাই চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে। ডিভিশন বেঞ্চ বিচারপতি সিংহের একক বেঞ্চের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছে। মঙ্গলবার ডিভিশন বেঞ্চ তাদের নির্দেশে জানিয়েছে, এই ৮২ জন আইএসএফ প্রার্থী এখনই নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। একক বেঞ্চ মনোনয়ন জমা দেওয়া নিয়ে যে নির্দেশ দিয়েছিল আপাতত তা স্থগিত থাকবে। ১৫ দিন পরে মামলাটির আবার শুনানি হবে।
মুর্শিদাবাদে তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেস
পঞ্চায়েত ভোটের চার দিন আগেও মুর্শিদাবাদ জেলায় চলছে দলবদলের পালা! আর অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শাসকদলের ‘ঘর’ ভেঙে যোগদানের ঘটনা ঘটছে কংগ্রেসে। মঙ্গলবার বেলডাঙায় লোকসভার কংগ্রেস নেতা তথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর উপস্থিতিতে প্রায় ৩০০ জন তৃণমূল কর্মী-সমর্থক দল বদলালেন। অধীরের হাত থেকে পতাকা নিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে কংগ্রেসে শামিল হলেন তাঁরা। রেজিনগরেও মঙ্গলবার যুব তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি-সহ ২০০ জন তৃণমূল নেতা-কর্মী অধীরের হাত থেকে কংগ্রেসের পতাকা গ্রহণ করে দলে যোগদান করেন বলে দাবি।
প্রচারে অসুস্থ ব্রাত্য
পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে গিয়ে দাঁতের যন্ত্রণায় কাবু হয়ে পড়লেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। মুক্তি পেতে ট্রেন থেকে নেমেই ছুটলেন হাসপাতালে। মঙ্গলবার মালদহের ঘটনা। মঙ্গলবার বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে চড়ে মালদহে পৌঁছন ব্রাত্য। সকাল পৌনে ১১টা নাগাদ তিনি নামেন স্টেশনে। কিন্তু সেখান থেকে সরাসরি তিনি যান মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। মন্ত্রীকে হাসপাতালে যেতে দেখে পিছু নেয় সংবাদমাধ্যমও। চিকিৎসার পর হাসপাতাল থেকে বেরোনোর সময় সাংবাদিকদের ব্রাত্য জানান, তিনি দাঁতের যন্ত্রণায় কষ্ট পাচ্ছিলেন। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, মন্ত্রীর দাঁতে সংক্রমণ রয়েছে। ব্যথা কমাতে তাঁকে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।