প্রেম করে বিয়ে হয় শের মহম্মদ এবং রেণু খাতুনের।
সদ্য সরকারি নার্সের চাকরি পাওয়া রেণু খাতুনের হাতের কব্জি কেটে নেওয়ার ঘটনায় এ বার সরব রাজ্যের নার্সদের সংগঠন। সোমবার পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের ওই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরেই গোটা রাজ্যে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। সরকারি চাকরি পেয়ে সংসার ছেড়ে চলে যেতে পারেন, এই আশঙ্কায় স্ত্রী রেণুর হাতের কব্জি কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে। এ বার অভিযুক্ত ওই স্বামীর কঠোর শাস্তির দাবি জানাল নার্সদের সংগঠন ‘নার্সেস ইউনিটি’।
সম্প্রতি নার্স হিসাবে সরকারি চাকরির নিয়োগপত্র হাতে পেয়েছিলেন রেণু। কিন্তু চাকরিতে যোগ দেওয়ার আগেই তাঁর ডান হাত কব্জি থেকে কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্বামী শের মহম্মদ শেখের বিরুদ্ধে। রেণুর বাপের বাড়ির লোকজনের অভিযোগ, মেয়ে চাকরি পাওয়ায় শ্বশুরবাড়ির পরিবার খুশি ছিল। তা তাদের ভাবভঙ্গিমায় প্রকাশ পেয়েছিল। কিন্তু সেই আশঙ্কা যে অক্ষরে অক্ষরে ফলে যাবে, তা আন্দাজ করেনি রেণুর বাবা, মা। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে ‘নার্সেস ইউনিটি’র পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয় সোমবার। সেখানে লেখা হয়, ‘স্বামী ভাবলেন, ডান হাতটা কেটে ফেললেই সারা জীবন স্ত্রী তাঁর অনুগত হবেন। এ রকম একটা নৃশংস ঘটনা কী করে ঘটাতে পারলেন, এই প্রশ্ন শুধু নার্সিং সমাজের নয়, গোটা সমাজের। আমাদের সমাজে মেয়েদের প্রতি অত্যাচার কোন সীমা অতিক্রম করতে পারে, এই ঘটনা তারই একটা নিদর্শন। এ রকম নৃশংস ঘটনার নিন্দা জানানোর ভাষা নেই।’
নার্সদের সংগঠনের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত স্বামীর বিরুদ্ধে আইন মোতাবেক কঠোর সাজার দাবি করা হয়েছে। এরই পাশাপাশি, সংগঠনের দাবি, সঠিক চিকিৎসা করে রেণুর জন্য নকল হাতের ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে তিনি তাঁর সুস্থ জীবন ফিরে পান।
রেণু নার্সিংয়ের প্রশিক্ষণ নিয়ে যোগ দিয়েছিলেন দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। এর মাঝে সরকারি চাকরির পরীক্ষা দেন তিনি। উত্তীর্ণও হন। চাকরির প্যানেলে তাঁর নাম ওঠে। সম্প্রতি হাতে পেয়েছিলেন সরকারি চাকরিতে যোগদানের চিঠিও। সেই চাকরির এখন কী হবে, তা নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। নার্সদের সংগঠনের দাবি, সরকারি চাকরি পেয়েছিলেন রেণু। তাই, তাঁর চাকরিটি যাতে থাকে, সেই ব্যবস্থা করতে হবে সরকারকেই।