শিল্প নিয়ে বিধানসভার ভিতরে-বাইরে সরকারকে চেপে ধরতে চাইছে বিরোধীরা। মুখ্যমন্ত্রী ভিন্ রাজ্য ও ভিন্ দেশে সফর করে এলেও রাজ্যে লগ্নি এবং শিল্পের কী হাল, তা নিয়ে বিধানসভায় যৌথ ভাবে মুলতবি প্রস্তাব আনছে বাম ও কংগ্রেস। ওই মুলতবি প্রস্তাবকে ঘিরে আজ, মঙ্গলবার বিরোধীরা যেমন অধিবেশনে হইচই বাধানোর পরিকল্পনা নিয়েছে, তেমনই রাস্তায় রুগ্ণ শিল্পের পুনরুজ্জীবনের দাবিতে পদযাত্রায় থাকছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী।
বন্ধ কারখানার জমিতে শিল্প ও রুগ্ণ শিল্পের পুনরুজ্জীবনের দাবিতে আজ দক্ষিণ ২৪ পরগনার বজবজ শিল্পাঞ্চলে পদযাত্রা করার কথা অধীরবাবু, বিধায়ক আখরুজ্জামান প্রমুখের। দু’দিনের পদযাত্রার দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচি এর আগে স্থগিত হয়ে গিয়েছিল বৃষ্টির কারণে। একই দিনে বিধানসভায় বামেদের মানস মুখোপাধ্যায়, আনিসুর রহমান, তন্ময় ভট্টাচার্য এবং কংগ্রেসের মনোজ চক্রবর্তী, অসিত মিত্র, নেপাল মাহাতোরা যৌথ ভাবে শিল্পের দাবিতে মুলতবি প্রস্তাব এনে আলোচনা চাইবেন।
বিরোধীদের হইচই অবশ্য অব্যাহত ছিল সোমবারও। বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান-সহ বিরোধী রাজনৈতিক নেতা এবং জনপ্রতিনিধিদের উপরে আক্রমণের প্রতিবাদে এ দিন মুলতবি প্রস্তাব এনেছিল বামেরা। সিপিএমের মানসবাবু ওই প্রস্তাব পড়েন। স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথমে বামেদের তাঁর সঙ্গে দেখা করে কথা বলতে বলেন। পরে বলেন, তাঁরা যেন বিষয়টি উল্লেখ-পর্বে তোলেন। কিন্তু বামেরা তাতে রাজি হয়নি। স্পিকার আলোচনা করতে না দেওয়ায় বাম ও কংগ্রেস অধিবেশনের বাকি পর্বে আর অংশ নেয়নি। বিধানসভার কার্য উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকও বয়কট করেছে তারা।
সভাকক্ষ ত্যাগ করার পর বাম ও কংগ্রেস বিধায়কেরা স্লোগান-সহ বিধানসভা চত্বরে মিছিল করেন। বিরোধী দলনেতা মান্নানের অভিযোগ, ‘‘বিধানসভায় ডেঙ্গি নিয়ে আলোচনা করতে দেওয়া হচ্ছে না। বলা হচ্ছে, বিচারাধীন বিষয়। বিরোধী দলনেতার উপরে আক্রমণ, বিশ্ব বাংলা বিতর্ক, ভদ্রেশ্বরে পুরপ্রধান খুন, দুর্নীতি, গণতন্ত্রহীনতা— কোনও কিছু নিয়েই আলোচনা করা যাবে না! তা হলে আমাদের অধিবেশনে থেকে লাভ কী?’’ মানসবাবু বলেন, ‘‘কার্য উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক প্রহসন মাত্র। ওখানে সরকারের ঠিক করে দেওয়া কাজ ঠিক হয়। বিরোধীদের কথা শোনা হয় না। তাই সেখানেও আমরা যাচ্ছি না।’’
অধিবেশনের প্রথমার্ধে কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মিত্র বিপর্যয় মোকাবিলা মন্ত্রী জাভেদ খানকে প্রশ্ন করেন, ডেঙ্গি রাজ্যে বিপর্যয়ের আকার নিয়েছে। তার মোকাবিলায় মন্ত্রী কী করেছেন? জাভেদ জানান, এটা তাঁর দফতরের বিষয় নয়!