প্রার্থী ঘোষণা হয়নি। তাই নামের জায়গা ফাঁকা রেখেই তৃণমূলের দেওয়াল লিখন সবংয়ে। নিজস্ব চিত্র
উপ-নির্বাচনের দিন ঘোষণা হয়ে গিয়েছে শুক্রবারই। এ বার সবংয়ের ভোট নিয়ে আয়োজিত সর্বদল বৈঠকে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করলেন বিরোধীরা। মনোনয়নপত্র জমা থেকে ফল ঘোষণা পর্যন্ত নির্বাচনী বিধি সম্পর্কে আলোচনা করেন শনিবার খড়্গপুরের মহকুমাশাসক সবংয়ের তৃণমূল, কংগ্রেস, বিজেপি ও সিপিএমের নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন। ভোট প্রচারে সভা ও মিছিল করতে হলে পুলিশের অনুমতি নেওয়ার কথাও জানান মহকুমাশাসক সুদীপ সরকার। এরপরেই পুলিশের ভূমিকা আশঙ্কা প্রকাশ করেন বাম, কংগ্রেস ও বিজেপি নেতারা।
সবংয়ের প্রাক্তন বিধায়ক মানস ভুঁইয়া রাজ্যসভার সাংসদ হওয়ার পর সবং বিধানসভা কেন্দ্রটি শূন্য হয়ে যায়। এই কেন্দ্রে উপ-নির্বাচন হবে আগামী ২১ ডিসেম্বর। ২৪ ডিসেম্বর প্রকাশিত হবে ভোটের ফল। কাল, সোমবার থেকে শুরু হবে মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার কাজ।
এ দিন খড়্গপুরের মহকুমাশাসক সুদীপবাবু বলেন, “মূলত নির্বাচন বিধি সম্পর্কে জানাতেই সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছিল। আগামী সোমবার থেকে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার কাজ শুরু হবে। সে বিষয়েও সকলকে জানানো হয়েছে।”
ভোটের দিন ঘোষণার পরে শনিবারই সিপিএম প্রার্থী রিতা মণ্ডল জানার নাম ঘোষণা করেছে। প্রচারে দেওয়াল লিখনও শুরু করেছে সিপিএম। দেওয়াল লিখছেন শাসকদলের কর্মীরাও। তবে তৃণমূল প্রার্থীর নাম ঘোষণা না হওয়ায় জায়গা ফাঁকা রেখেই মা-মাটি- মানুষের বার্তা দিয়ে দেওয়াল লিখন শুরু করেছে তৃণমূল। অন্য দলগুলিও প্রচারের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
যদিও বিরোধীদের অভিযোগ, সভা বা মিছিলের অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে পুলিশ পক্ষপাতিত্ব করবে। এ জন্য মহকুমাশাসকই সরাসরি সভা ও মিছিলের অনুমতি দেওয়ার ব্যবস্থা করুন বলে দাবি বিরোধীদের।
সিপিএমের সবং জোনাল সম্পাদক চন্দন গুছাইতের দাবি, শাসকদলের সন্ত্রাসের কারণে এখনও বলপাই ও ভেমুয়ায় তাঁদের দলীয় কার্যালয় বন্ধ হয়ে রয়েছে। কার্যালয়গুলি খোলার জন্য তিনি মহকুমাশাসককে জানিয়েছেন।
একইসঙ্গে, পুলিশের থেকে প্রচার সভার অনুমতি নিতে হলে যে হয়রানি হতে পারে সেই আশঙ্কার কথাও তিনি মহকুমাশাসককে জানিয়েছেন। সবংয়ের কংগ্রেস নেতা চিরঞ্জিত ভৌমিকেরও অভিযোগ, সভার জন্য পুলিশের অনুমতি নেওয়ার কথা বলেছেন মহকুমাশাসক। তবে আগেও তাঁরা দেখেছেন, বিরোধীদলকে সভার অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে পুলিশ পক্ষপাতিত্ব করে। এ ক্ষেত্রে পুলিশ শাসকদলকে বিশেষ সুযোগ দেবে বলে তাঁদের আশঙ্কা। তাঁর কথায়, ‘‘মহকুমাশাসক যাতে সরাসরি সভার অনুমতি দেওয়ার ব্যবস্থা করেন, সে বিষয়ে জানিয়েছি।’’
সবংয়ের বিভিন্ন এলাকায় গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ করছেন বিজেপির সবং মণ্ডল সভাপতি শান্তুনু সাহুও।
প্রচার সভার অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে পুলিশ শাসকদলকে বিশেষ সুযোগ দেবে বলে অভিযোগ করছেন শান্তনুবাবুও।
এ নিয়ে তৃণমূলের সবং ব্লক সভাপতি প্রভাত মাইতি বলেন, “পুলিশের প্রতি আমাদের আস্থা রয়েছে। মহকুমাশাসক যে বিধির কথা জানিয়েছেন সেই মতো কাজ হবে।”
বিরোধীদের আশঙ্কা নিয়ে মহকুমাশাসক সুদীপবাবুও বলেন, “পুলিশের থেকেই সভার অনুমতি নিতে হবে। এটাই নিয়ম। কোথাও কোনও সমস্যা হলে আমরা দেখব।”