ফাইল চিত্র।
মার্চ মাসে দেশের পনেরোটি বিরোধী দলের নেতাকে চিঠি দিযে বিজেপির বিরুদ্ধে একজোট হওযার কথা বলেছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তখন বিজেপি নেতৃত্ব প্রচার করেন, ভয় পেয়ে গিয়েছেন নেত্রী। গত কাল বিপুল জয়ের পরে লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে এই চিঠিটির গুরুত্ব অনেকটাই বেড়ে গেল বলে মনে করছে রাজনৈতিক শিবির। শুধু তাই-ই নয়, বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইযে আঞ্চলিক শক্তির এক নতুন ব্র্যান্ডও দেখা যাবে আগামিদিনে, এমনটাও মনে করা হচ্ছে।
তিন পাতার ওই চিঠিতে মমতা লিখেছিলেন, ‘‘গণতন্ত্র এবং সাংবিধানিক যুক্তরাষ্ট্রীয় বাবস্থার উপরে বিজেপি যে ভাবে ধারাবাহিক ভাবে আঘাত আনছে তাতে আমি গভীর ভাবে উদ্বিগ্ন।’’ ঘটনা হল গত ছ’বছরে নয়াদিল্লিতে এই উদ্বেগ নিয়েই বারবার বিজেপি-বিরোধী ফ্রন্টের বৈঠকে যোগ দিতে দেখা গিযেছে মমতাকে। কিন্তু এখন থেকে চব্বিশের লোকসভার লড়াই পর্যন্ত যে আঞ্চলিক বোঝাপড়ার ছবিটা দেখা যাবে, তার চরিত্র সেই বৈঠকগুলির থেকে অনেকটাই আলাদা বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
প্রথমত, সনিয়া-রাহুলকে অর্থাৎ কংগ্রেসকে জোটের নেতৃত্বে বসিয়ে কোনও বিজেপি-বিরোধী কর্মসূচি যে তৃণমূল বা এসপি, এনসিপি, ডিএমকে-রা করবে না, তা স্পষ্ট হযে গিয়েছে। তা সে সংসদের ভিতরেই হোক বা বাইরে। গত কাল অর্থাৎ যে দিন বিজেপ-কে বিপুলভাবে হারালেন মমতা সে দিনই বিরোধী রাজনীতিতে কংগ্রেসের নেতৃত্বের শেষ পেরেকটিও পোঁতা হয়ে গেল। ডিএমকে এবং তৃণমূলের জয়ের দিনই কংগ্রেসের নির্বাচনী রাজনীতিতে পতন ঘটার বিষয়টিকে জাতীয় রাজনীতিতেও তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
গত কালই এসপি নেতা অখিলেশ সিংহ যাদবের সঙ্গে কথা হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এসপি সূত্রের খবর, অখিলেশ তৃণমূল নেতৃত্বকে জানিয়েছেন মমতার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়ে চব্বিশের ভোটে লড়তে আগ্রহী তাঁরা। রাজনৈতিক সূত্রের মতে, গত দু’দশক ধরে অকংগ্রেসি অবিজেপি ফ্রন্ট হিসেবে যে সব মুখ দেখা যেত সেই লালু, মুলায়ম, করুণানিধি, মায়াবতী, প্রকাশ কারাট—এই চরিত্রগুলি এখন কালের নিয়মেই অপ্রাসঙ্গিক। শরদ পওয়ার আছেন কিন্তু তিনিও ভগ্নস্বাস্থ্য। বরং যে মুখগুলি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে তাঁদের মধ্যে অবশ্যই প্রথম নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে রযেছেন এম কে স্ট্যালিন, পিনারাই বিজয়ন (সিপিএম কেরলের আঞ্চলিক দলে পরিণত), অখিলেশ সিংহ যাদবেরা। রয়েছেন মহারাষ্ট্রের শিবসেনা নেতা উদ্ধব ঠাকরে। গত কালের ফলের পর অকালি দল ছাড়াও টিআরএস-এর চন্দ্রশেখর রাও, জগন্মোহন রেড্ডি-র মতো নেতারাও বিজেপি-বিরোধী ফ্রন্টের বিষয়ে খোঁজখবর নিতে শুরু করেছেন।