মহার্ঘ ভাতার দাবিতে আন্দোলনরত সরকারি কর্মীদের বার্তা দিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ছবি: পিটিআই।
সরকারি চাকরিপ্রার্থীদের ধর্না মঞ্চে গিয়ে তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে এসেছিলেন আগেই। এ বার বকেয়া মহার্ঘ ভাতা (ডিএ)-র দাবিতে আন্দোলনরত সরকারি কর্মীদের প্রতি শুভেন্দু অধিকারীর বার্তা, অনশন ভাঙা হোক, কিন্তু আন্দোলন যেন জারি থাকে। ঘটনাচক্রে, রাজ্যপাল অনশন তুলে নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন শনিবার। তার কিছু ক্ষণের মধ্যেই টুইট করে এই বার্তা দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা।
ডিএর দাবিতে ধর্মতলায় অনশন করছেন আন্দোলনরত সরকারি কর্মীরা। যা চতুর্থ সপ্তাহে পা দিয়েছে। অনশনকারীদের স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে অনশন তুলে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছেন রাজ্যপাল। শনিবার রাতে রাজভবন থেকে পর পর দু’টি টুইট করে বলা হয়, ‘‘রাজ্যপাল গভীর ভাবে ব্যথিত যে, সরকারি কর্মীদের অনশন চতুর্থ সপ্তাহে প্রবেশ করেছে। সমস্যা জটিল হতে পারে কিন্তু সব সময় সমাধানের একটি সহজ উপায় আছে। আমাদের ভাইদের মূল্যবান জীবন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, যাঁরা তাঁদের হৃদয়ের কাছাকাছি একটি কারণের জন্য অনশন করে চলেছেন।’’
রাজ্যপাল অনশন তুলে নিতে বললেও বিজেপি চাইছে, রাজভবনের সম্মান রক্ষার পাশাপাশি আন্দোলন যেন চলতে থাকে। রাজভবন থেকে টুইট করার কয়েক ঘণ্টা পরেই শুভেন্দু টুইটে লিখেছেন, “আমি অনশনকারীদের অনুরোধ করছি, রাজভবন এবং রাজ্যপালের সম্মান রক্ষার্থে আপনারা আপনাদের অনশন তুলে নিন। কিন্তু, আপনাদের দাবি পূরণ করা নিয়ে যে আন্দোলন চলছে, রাজ্য সরকার সেই সব দাবি যত ক্ষণ না মেনে নিচ্ছে তত ক্ষণ সেটি যেন চলতে থাকে।”
প্রথম দিকে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের যৌথ সংগ্রামী মঞ্চে বিজেপি না গেলেও, গত ৫ মার্চ কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচী ওই মঞ্চে যাওয়ার দিনই সেখানে দেখা যায় বিজেপি নেতা রাহুল সিন্হাকে। পরের দিন অর্থাৎ ৬ মার্চ বিধায়কদের নিয়ে ওই মঞ্চে যান শুভেন্দু। তখন থেকেই বোঝা যায়, বিজেপি ডিএ বিষয়ে আন্দোলনের শরিক হতে চাইছে। এর পর সরকারি কর্মীদের একাংশের ডাকা ধর্মঘটকেও সমর্থন জানায়। সেই মঞ্চে দেখা গিয়েছিল সদ্য জেল থেকে মুক্তি পাওয়া আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকিকেও। শনিবার সেই মঞ্চে গিয়ে অনশনকারীদের সঙ্গে দেখা করে এসেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী।
সাগরদিঘিতে বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থী জেতায় এবং তার পরে কংগ্রেসের আইনজীবী-নেতা কৌস্তুভকে গ্রেফতারের ঘটনায় জোটের পালে খানিকটা হলেও হাওয়া লেগেছে। মহার্ঘ ভাতার দাবি সামনে রেখে সেই জোট আরও জোরালো করতে চাইছে দু’পক্ষ। সেই মঞ্চে চলে এসেছে বিজেপিও। এমন জোটের আবহ তৈরি হলেও বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস যে যৌথ ভাবে কথা বলছে, তা নয়। বিক্ষোভরত সরকারি কর্মচারীদের একাংশের বক্তব্য, প্রথম দিকে তাঁদের লড়াইয়ে অনেকেই আসেননি। কিন্তু এখন সেই লড়াই যখন বড় আকার নিয়েছে, তখন সবাই পাশে থাকতে আসছেন। এতে আপত্তির কিছু নেই।
গত সোমবার বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ডিএ নিয়ে বলতে গিয়ে একযোগে আক্রমণ করেছেন রাজ্যের তিন প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক দলকে। প্রশ্নের সুরে বলেছেন, ‘‘ছয় শতাংশ ডিএ-র পরে কী চান? আমি বিরোধীদের বলছি। আপনারাই ঠিক করুন।’’ এর পরেই ডিএ প্রশ্নে সম্ভাব্য রাজনৈতিক জোট নিয়ে মমতার আক্রমণ, ‘‘মুখোশ খুলে গিয়েছে। সিপিএম, বিজেপি, কংগ্রেস সব একসঙ্গে!’’