ছবি: সংগৃহীত।
আর্থিক বছরের চার মাস কেটে যাওয়ার পরে প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ আবাস যোজনার ঘর বিলি শুরু করেছে রাজ্যের পঞ্চায়েত দফতর। তাতেও বৈষম্যের অভিযোগ তুলছে বিরোধী শিবির। তাদের অভিযোগ, শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস যে-সব জেলায় জিতেছে, সেখানেই বেশি সংখ্যক ঘর বিলি করা হয়েছে। কিন্তু বিরোধী পক্ষ যে-সব জেলায় ভাল ফল করেছে, সেখানকার গ্রামে পাকা বাড়ি খুবই কম। তবে পঞ্চায়েত দফতরের দাবি, বৈষম্যের অভিযোগ ঠিক নয়। বাড়ি বিলি হয়েছে আর্থ-সামাজিক জাতি-সমীক্ষার ভিত্তিতে।
পঞ্চায়েতকর্তাদের একাংশ জানান, কাটমানি নিয়ে গোলমালের শুরুর পর্বে সব চেয়ে বেশি নাম জড়িয়েছে প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ আবাস যোজনার। তার জেরে পঞ্চায়েত দফতর ২০১৯-২০ অর্থবর্ষের প্রায় চার মাস ওই প্রকল্প স্থগিত রেখেছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক এই নিয়ে রাজ্য সরকারের কাছে জবাবদিহি চেয়েছিল। এ রাজ্যে আট লক্ষ ৩০ হাজার বাড়ি তৈরির লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।
পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দিল্লি বারবার চাপ দিচ্ছিল। আমরা আবার বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করেছি। তবে কোথাও কোনও বৈষম্য করা হয়নি। যেখানে যেমন প্রয়োজন, সেখানে তেমন বাড়ি দেওয়া হয়েছে।’’
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা দেয় দিল্লি। আর ‘দিদি’র (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের) সরকার বিজেপির জেতা জেলাগুলিতে বাড়ির সংখ্যা কমিয়ে তৃণমূলের জেতা জেলাগুলিতে দিয়ে বেশি করে বাড়ি করে দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর কাছেই অভিযোগ করব। কেন্দ্রীয় প্রকল্প নিয়ে এমন ছেলেখেলা করা যায় না।’’
পঞ্চায়েত দফতরের কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, আর্থ-সামাজিক জাতি-সমীক্ষা অনুযায়ী কারা পাকা বাড়ি পাবেন, তার স্থায়ী তালিকা তৈরি হয়ে আছে। প্রতি বার গ্রাম সংসদের বৈঠকে উপভোক্তাদের তালিকা চূড়ান্ত হয়। কিন্তু লোকসভা ভোটের পরে কাটমানি সংক্রান্ত বিক্ষোভ শুরু হওয়ায় গ্রাম সংসদের বৈঠকই বাতিল করে দিতে হয়েছে। পঞ্চায়েত দফতর এখন যে-ভাবে জেলা-ভিত্তিক বাড়ি বরাদ্দ করেছে, তা গ্রাম সংসদের বৈঠকে পাশ করাতে হবে কি না, সেই বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু বলা হয়নি। পঞ্চায়েতকর্তাদের একাংশের ব্যাখ্যা, এমনিতেই চার মাস বাড়ির কোটা বিলিতে দেরি হয়েছে। ফলে এখন আর গ্রাম সংসদে উপভোক্তাদের তালিকা পেশ করে অনুমোদন করিয়ে নেওয়ার সময় নেই।