রাজ্যের বেশিরভাগ জায়গায় বিরোধীরা শক্তিহীন। তাই ‘শান্তিতে এবং নির্বিঘ্নেই’ পঞ্চায়েত নির্বাচন হবে। সোমবার বিধানসভায় এ কথা বলেছেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। অনেকের মতে, এ কথা বলে পঞ্চায়েতমন্ত্রী আসলে বোঝাতে চেয়েছেন, পঞ্চায়েত ভোট হবে একতরফাভাবে। তাই হিংসার সম্ভাবনা কার্যত নেই।
এ দিন পঞ্চায়েত দফতরের বাজেট বিতর্কের জবাবি ভাষণে সুব্রতবাবু বলেন, ‘‘একেকটা দল তো নির্বংশ হয়ে গিয়েছে। মারামারি কোথা থেকে হবে? গণতান্ত্রিকভাবেই নির্বাচন হবে। যারা হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে গণ্ডগোল বাধানোর চেষ্টা করছে, তারা সফল হবে না।’’
তবে কেন তৃণমূল সফল হবে তার ব্যাখ্যা করে পঞ্চায়েত মন্ত্রী জানান, গত ছ’বছরে জেলায় জেলায় গ্রামে পাকা রাস্তা, একশো দিনের কাজে রেকর্ড সাফল্য এসেছে। ২০২০ সালের মধ্যে রাজ্যের সব গ্রামে পরিশ্রুত পানীয় জল পৌঁছে যাবে। কেন্দ্র কমিয়ে দিলেও রাজ্য বার্ধক্য, বিধবা, পরিবার সহায়তা ভাতা বন্ধ করছে না। এই সব কাজ দেখেই যে লোকে ভোট দেবে তা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘‘এক হাতে রাস্তা নিন, অন্য হাতে ভোট দিন। এক হাতে জল নিন, আরেক হাতে মমতার প্রার্থীকে ভোট দিন। যাঁরা উপকৃত হয়েছেন, তাঁরা আমাদের ভোট দিন। এমনি এমনি ভোট দিতে হবে না।’’ পরে পঞ্চায়েতমন্ত্রী জানান, যা কাজ হয়েছে তাতে এখন ভোট চাওয়ার অধিকার অর্জন করেছে তৃণমূল। বিরোধীরা কীসের ভিত্তিতে ভোট চাইবেন?
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ যদিও বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতের যে সব প্রকল্পের সাফল্য মন্ত্রী দাবি করেছেন, তা সবই কেন্দ্রের। দিল্লি টাকা দিয়েছে বলেই তিনি কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন। আমরা তাই গ্রামে গিয়ে মোদীর টাকায় ‘মুখার্জীবাবুর’ বড়াইয়ের কথা বলব। আর বলব তৃণমূলের দুর্নীতি-মারামারির কথা।’’
দুর্নীতির কথায় সুব্রতবাবুর জবাব, ‘‘সম্পূর্ণ স্বচ্ছতায় পৌঁছেছি এটা বলছি না। কিন্তু সম্পদের দায়দায়িত্ব এবং ক্ষমতা তৃণমূলস্তর পর্যন্ত পৌঁছচ্ছে।’’ পঞ্চায়েত মন্ত্রীর সংযোজন, ‘‘আমাদের দলে এত যুবক রয়েছে। কোথাও টুকটাক কিছু হতে পারে। সে সব নিয়ে হইচইয়ের কিছু নেই।’’
তবে পঞ্চায়েতে যে কাজ হয়েছে তাতে দলের ভোট জিততে সমস্যা হওয়ার কথা নয় বলে মনে করেন পঞ্চায়েত মন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘আমি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু নই, বিধানচন্দ্র রায়ও নই। আমি ক্ষুদ্র মানুষ। কাজই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এই জায়গায় এনেছে। অনেকে স্বপ্ন দেখছে, ত্রিপুরায় হয়েছে, এখানেও হয়ে যাবে। লাড্ডু খাচ্ছে। আসল লাড্ডু হল পঞ্চায়েত। পঞ্চায়েত সিপিএমকে রেখেছিল। খারাপ কাজের জন্য পঞ্চায়েত সরিয়েও দিয়েছে। আমরা সেই ভুল আর করছি না।’’