রাজ্যের কন্যাশ্রী প্রকল্প রাষ্ট্রপুঞ্জে পুরস্কৃত হওয়ার খবর খোলা মনে মেনে নিতে পারছে না বিরোধীরা। সিপিএম এবং কংগ্রেস এই সম্মানকে ‘স্বাগত’ জানিয়েও প্রশ্ন তুলেছে, এটা কী ধরনের পুরস্কার এবং রাষ্ট্রপুঞ্জের কোন শাখা তা দিল, সেটা পরিষ্কার হওয়া দরকার। পাশাপাশি, গোটা বিষয়টিকেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’ প্রকল্পের সাফল্য বলে দাবি করেছে বিজেপি।
রাষ্ট্রপুঞ্জের জন পরিষেবা দিবসে শুক্রবার দ্য হেগে পশ্চিমবঙ্গের কন্যাশ্রী প্রকল্পের জন্য প্রথম পুরস্কার পেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই খবর জেনে সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম এ দিন বলেন, ‘‘রাজ্য বিশ্বের দরবারে পুরস্কৃত হয়ে থাকলে ভাল কথা। মুখ্যমন্ত্রী গর্বিত হতেই পারেন। কিন্তু রাষ্ট্রপুঞ্জের কোন দফতর বা শাখা কী পুরস্কার দিল, সেই তথ্য জানতে পারলে ভাল হয়।’’ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীরও মন্তব্য, ‘‘রাজ্য কাজের যোগ্যতায় এমন পুরস্কার পেয়ে থাকলে নিশ্চয়ই প্রশংসা প্রাপ্য। আমরা সঙ্কীর্ণতার রাজনীতি করি না। কিন্তু রাষ্ট্রপুঞ্জের কারা পুরস্কার দিল জানা দরকার। রাষ্ট্রপুঞ্জের সদর দফতর নিউ ইয়র্কে। তারা নেদারল্যান্ডসে গিয়ে কেন পুরস্কার দিল পরিষ্কার হওয়া প্রয়োজন।’’
বিজেপি-র কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহ আবার রাজ্যের কৃতিত্ব পুরোটাই দিতে চেয়েছেন কেন্দ্রের ভাগে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও প্রকল্পের টাকা নিয়ে রাজ্য কন্যাশ্রী নাম দিয়ে চালাচ্ছে। তাই কন্যাশ্রী প্রথম হওয়ার অর্থ মোদীজির সরকার প্রথম হয়েছে। এর জন্য মুখ্যমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রীকেই ধন্যবাদ দেওয়া উচিত।’’ কিন্তু মোদী প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন ২০১৪ সালে। আর রাজ্যে কন্যাশ্রী প্রকল্প মমতা চালু করেছেন ২০১১ সালে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরই। তা হলে কী করে মমতার কৃতিত্বের ভাগ মোদীর প্রাপ্য হয়? রাহুলবাবুর জবাব, ‘‘২০১১ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কন্যাশ্রী প্রকল্প উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারেনি। মোদীজির প্রকল্প চালু হওয়ার পরই কন্যাশ্রীর নামডাক হয়েছে।’’ বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অবশ্য পুরস্কার পাওয়ার বিষয়টিকেই ‘বুজরুকি’ বলে উড়িয়ে দিতে চেয়েছেন। তাঁর দাবি, ‘‘এমন সংস্থা পুরস্কার দিয়েছে, যার নামই কেউ জানে না!’’