প্রতীকী ছবি।
মাদক থেকে মোবাইল, সবই অনায়াসে পৌঁছে যাচ্ছে বন্দিশালার বাসিন্দাদের কাছে। জেলের এক শ্রেণির কর্মীর পাশাপাশি এই ব্যাপারে আঙুল উঠছে বন্দিদের সঙ্গে দেখা করতে আসা লোকজনের দিকেও। তাই ঠিক হয়েছে, বন্দিদের সঙ্গে আত্মীয়স্বজন দেখা করতে গেলে এ বার অনলাইনে আবেদন করে অনুমতি নিতে হবে। এই ব্যবস্থার নাম দেওয়া হয়েছে ‘ভিজিটর্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ বা ‘ই-মোলাকাত’। এটি চালু হচ্ছে রাজ্যের সব জেলেই।
জেলে বসেই কিছু বন্দি খুনের হুমকি দেওয়া, তোলাবাজির মতো কুকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে বারবার। বন্দিদের সঙ্গে যাঁরা দেখা করতে আসেন, মূলত তাঁদের মাধ্যমেই এই কাজ চলে বলে কারা দফতর সূত্রের খবর। ওই দফতরের আশা, ‘ই-মোলাকাত’ ব্যবস্থায় সেই সমস্যার মোকাবিলা করা যাবে। কারামন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস বলেন, ‘‘অনলাইন ব্যবস্থা চালু করার জন্য কারাকর্মীদের কম্পিউটার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। বন্দিদের সঙ্গে কারা দেখা করতে আসছেন, এই ব্যবস্থায় তাঁদের ছবি-সহ পরিচয়পত্রও রাখা হচ্ছে দফতরের কাছে।’’
কারা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এত দিন বিচারাধীন বা সাজাপ্রাপ্ত বন্দিদের সঙ্গে দেখা করতে চাইলে আত্মীয় বা বন্ধুদের হাতে লিখে আবেদন করতে হত। সঙ্গে পরিচয়পত্র দিতে হত ঠিকই। কিন্তু কোনও ছবি তোলা হত না। এ বার থেকে যিনি বন্দির সঙ্গে দেখা করতে আসবেন, ‘ই-মোলাকাত’ ব্যবস্থায় তাঁকে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। জমা দিতে হবে ভোটার কার্ড, আধার কার্ড বা অন্যান্য পরিচয়পত্রের প্রতিলিপি। সাক্ষাৎপ্রার্থীর ছবি তোলা হবে জেলে। এবং সেই সব রেকর্ড কারা দফতরের তথ্য ভাণ্ডারে রাখা থাকবে।
এক কারাকর্তা জানান, রাজ্যে আটটি সেন্ট্রাল জেল-সহ মোট ৬১টি সংশোধনাগার আছে। ‘ই মোলাকাত’ ব্যবস্থা বা ভিএমএস চালু করা হচ্ছে প্রতিটি জেলেই। কাজ প্রায় শেষের পথে। আত্মীয়বন্ধুরা বন্দিদের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন সপ্তাহে এক দিন। একসঙ্গে তিন জনের বেশি দেখা করতে পারবেন না।
তিন জনকেই আলাদা ভাবে ফোটো তুলে পরিচয়পত্র জমা দিয়ে দেখা করতে হবে। তাঁদের ঠিকানা, ফোন নম্বর জেলের কাছে থাকবে। সন্দেহ হলে পুলিশের নজরে আনা সহজ হবে। বাইরের কোনও অপরাধী যদি কোনও বন্দির সঙ্গে দেখা করতে আসে, এই ব্যবস্থায় তা-ও সঙ্গে সঙ্গে ধরা যাবে।