—প্রতীকী ছবি।
চোপড়ায় নয়। এ বারে সেখান থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে ইসলামপুরের সুজালিতে। জমি দখল নিয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে প্রাণ গেল এলাকার বাসিন্দা মুজিবর রহমানের (৫৭)। স্থানীয়দের একাংশের দাবি, মুজিবর গোলমাল থামাতে গিয়ে উপর পক্ষের লাঠির ঘায়ে প্রাণ দিলেন। মূল অভিযুক্ত, মহম্মদ ফারাজউদ্দিন গাড়িতে চেপে সপরিবার পালাচ্ছিলেন। তখন তাঁর গাড়ি এক টোটোচালককে ধাক্কা দেয়। আহত টোটোচালক হাসপাতালে ভর্তি। তবে পরে ফারাজউদ্দিন-সহ ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ইসলামপুরের পুলিশ সুপার জবি টমাস বলেন, ‘‘জমি নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে বিবাদের ঘটনায় মারপিটে এক জনের মৃত্যু হয়েছে। বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’ রাজ্যের মন্ত্রী গোলাম রব্বানি বলেছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ধরনের অন্যায় সহ্য করেন না। কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া রয়েছে।’’
স্থানীয় সূত্রে খবর, পঞ্চায়েত সদস্য হুসনারা বেগমের স্বামী ফারাজউদ্দিনের সঙ্গে মুজিবরের সঙ্গী ফাইজুর রহমান-সহ স্থানীয় কয়েক জনের কয়েক বছর ধরে কৃষিজমির মালিকানা নিয়ে বিবাদ চলছে। চাষ চলাকালীন এ দিন ফারাজউদ্দিনের লোকেরা সে জমি দখলের চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। এর পরে দু’পক্ষ পরস্পরের উপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ। সূত্রের দাবি, গোলমাল থামাতে গেলে মুজিবরের উপরেও হামলা হয়। আহত মুজিবর জমিতে লুটিয়ে পড়েন। ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। জখম ফারাজউদ্দিনের আত্মীয় এনামুল হকও। এনামুল পরে বলেন, ‘‘মুজিবরের ওখানে কোনও জমি-জায়গা নেই। উনি কেন ওখানে গেলেন, কী ভাবে মারা গেলেন, জানি না।’’
গত পঞ্চায়েত ভোটে মুজিবরকে জেলা পরিষদে তৃণমূল প্রার্থীর প্রচারে দেখা গিয়েছিল। অন্য দিকে, ফারাজউদ্দিনের স্ত্রী হুসনারা গত পঞ্চায়েত ভোটে নির্দল হিসাবে জিতে পরে তৃণমূলে যোগ দেন। ফারাজউদ্দিন ও হুসনারা এক সময়ে চোপড়ার বিধায়ক হামিদুল রহমানের ঘনিষ্ঠবৃত্তের লোকজনের ‘কাছাকাছি’ ছিলেন। পরে সেই ‘শিবির বদলে’ তাঁরা এমন লোকজনের সঙ্গী হয়েছেন, যারা তৃণমূলের উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়ালের ঘনিষ্ঠ।
তৃণমূলের উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল বলেন, ‘‘ওই ঘটনার পিছনে রাজনৈতিক কারণ নেই। জমি নিয়ে পুরনো বিবাদ বলে শুনেছি। পুলিশ তদন্ত করছে।’’ বিজেপির উত্তর দিনাজপুর জেলার সহ-সভাপতি সুরজিৎ সেন বলেন, ‘‘আইনশৃঙ্খলার কতটা অবনতি হয়েছে, এটা তারই উদাহরণ। তৃণমূলের হাতেই খুন হচ্ছেন তৃণমূল কর্মীরা। পুলিশ ব্যবস্থা না নিলে সাধারণ মানুষ চলাফেরা করতে পারবেন না।’’