প্রতীকী ছবি।
দেশের বিভিন্ন বিমানবন্দর, বন্দর ও চেকপোস্টে তার ছবি পাঠিয়ে সতর্ক করা হয়েছিল অভিবাসন ও শুল্ক দফতরকে। শুক্রবার সকালে উত্তর ২৪ পরগনার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে, পেট্রাপোল চেকপোস্টে সেই ছবি দেখেই শুল্ক অফিসারদের হাতে ধরা পড়ে গেল ৫২ বছরের মহম্মদ গোলাম মুস্তাফা বিপ্লব। বাংলাদেশের জঙ্গি সংগঠন জামাতকে অর্থ জুগিয়ে সাহায্য করার অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। অভিযোগ, বাংলাদেশ থেকে ভারতে সোনা পাচার করে এই টাকা জোগাড় করত বিপ্লব।
ধৃতকে বিকেলেই পেট্রাপোল থেকে কলকাতায় শুল্ক দফতরের সদর দফতরে আনা হয়েছে। শুল্ককর্তারা জানান, বেআইনি সোনা পাচারের টাকা থেকেই যে বাংলাদেশ ও ভারতে জামাত জঙ্গিদের অর্থ আসছে, তার প্রাথমিক তথ্য পাওয়া গিয়েছে। সেই তথ্য এবং বিপ্লব-বৃত্তান্ত জানানো হয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদেরও।
জানুয়ারির গোড়ায় এই বিপ্লবের কথা প্রথম জানতে পারে শুল্ক দফতর। খবর আসে, শুল্ক দফতরের চোখে ধুলো দিয়ে কোচবিহারের চ্যাংড়াবান্ধা চেকপোস্ট দিয়ে ৬ জানুয়ারি ভারতে ঢুকেছে সে। তার কাছে ভারতে ঢোকার বৈধ পাসপোর্ট ও বিজনেস ভিসা রয়েছে। সেই ভিসার মেয়াদ ২০২১ সালের ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত।
শুল্ক গোয়েন্দাদের সন্দেহ, ভারতে ব্যবসা করার অছিলায় দু’দেশের মধ্যে ঘনঘন যাতায়াত করত বিপ্লব। এর আগে ভারতের ঢোকার জন্য বেশির ভাগ সময়েই সে হিলি সীমান্ত ব্যবহার করেছে। তবে ৬ জানুয়ারি সে আসছিল চ্যাংড়াবান্ধা দিয়ে। এই নিয়ে সে দু’বার ওই চেকপোস্ট ব্যবহার করল। ৬ জানুয়ারি সকাল ১০টায় চ্যাংড়াবান্ধা চেকপোস্টে শুল্ক অফিসারদের হাতে ধরা পড়ে মুনির হোসেন (৩৮) নামে এক বাংলাদেশি যুবক। বাংলাদেশের বুড়িমারি থেকে সে চ্যাংড়াবান্ধা দিয়ে ভারতে ঢুকছিল। তার কাছেও বৈধ পাসপোর্ট ও বিজনেস ভিসা ছিল। তার কোমরে লুকোনো দুই কিলোগ্রাম ৭৯০ গ্রাম সোনা বাজেয়াপ্ত করা হয়। শুল্ক দফতরের খবর, ওই সোনার বাজারদর এক কোটি ২১ লক্ষ টাকা।
মুনিরকে জেরা করেই জানা যায় বিপ্লবের নাম। সেই সঙ্গে জানা যায়, বিপ্লবের কাছেও দুই কিলোগ্রাম সোনা ছিল। কিন্তু বিপ্লবকে দেখে সন্দেহ হয়নি শুল্ক অফিসারদের। সকলেই মুনিরকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। সেই ফাঁকে সোনা নিয়ে বিপ্লব ঢুকে পড়ে ভারতে। তার পরে এ দেশে সেই সোনা বিক্রি করে অন্য রাস্তা দিয়ে বাংলাদেশে ফিরে যায় বিপ্লব। এ দিন পেট্রাপোল দিয়ে আবার এ দেশে ঢুকতে গিয়ে ধরা পড়ে যায় সে।