বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছেন, আগে ছাত্রদের কথা ভাবতে হবে, তার পর শিক্ষকদের অধিকার নিয়ে ভাববে আদালত। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
স্কুল বা এলাকা পছন্দ না হলে শিক্ষক-শিক্ষিকা বদলি চাইতেই পারেন, কিন্তু বদলি হবে কি না, তা পুরোপুরি নির্ভর করবে ছাত্রদের উপর। ছাত্রদের ক্ষতি করে শিক্ষকের সুবিধা তৈরি করা যাবে না— স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বদলির আবেদনকারী এক শিক্ষককে তিনি বলেছেন, ‘‘শিক্ষকদের যেমন বেতন-সহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার অধিকার আছে, ছাত্রদেরও তেমনই উপযুক্ত শিক্ষার অধিকার রয়েছে। এই আদালত ওই পড়ুয়াদের জন্য অধিক চিন্তিত।’’
চেনা গণ্ডির বাইরে শিক্ষক-শিক্ষিকার চাকরি পাওয়া অনেকেই অনেক ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যার কথা জানিয়ে বদলির আবেদন করে থাকেন। সম্প্রতি পুরুলিয়ার একটি প্রাথমিক স্কুল থেকে বদলি চেয়ে আদালতে মামলা করেছিলেন এক শিক্ষক। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর আইনজীবীর কাছে জানতে চান ওই স্কুলে কত জন পড়ুয়া রয়েছে। জবাবে আইনজীবী জানান, স্কুলটিতে ৫৬ জন শিক্ষার্থী পড়াশোনা করেন। এর পরই বিচারপতি বলেন, ‘‘এখন আগে ভাল করে ছাত্রদের পড়াতে বলুন। আমি কোনও বদলির নির্দেশ দেব না। বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু বদলি মামলায় রাজ্যের স্কুলগুলিতে ছাত্র ও শিক্ষকের অনুপাত জানতে চেয়েছেন। আমিও এ ক্ষেত্রে তা-ই জানতে চাইছি।’’
পুরুলিয়ার ঘোড়াশূলের প্রাথমিক স্কুল থেকে বদলি চেয়েছিলেন ওই শিক্ষক। মামলার শুনানিতে ওই স্কুলটি ঘুরে দেখার ইচ্ছাও প্রকাশ করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। পাশাপাশিই শিক্ষকের আইনজীবীকে তিনি স্পষ্টতই জানিয়ে দেন, আগে ওই স্কুলে ছাত্র ও শিক্ষকের অনুপাত জানাতে হবে। রাজ্য এই হিসাব দিলে তার পরই আদালত বদলির নির্দেশ দেবে কি না ভাববে। তার আগে কোনও বদলি সংক্রান্ত মামলার নির্দেশ দেবে না এই আদালত। এ ব্যাপারে বিচারপতির যুক্তি, ‘‘শিক্ষকরা বদলি চাইছেন। তাঁরা বেতন নিচ্ছেন। অন্যান্য সুযোগও পাচ্ছেন। এটা তাঁদের অধিকার। কিন্তু এটাও মাথায় রাখতে হবে যে ছাত্রদেরও উপযুক্ত শিক্ষার অধিকার রয়েছে। তা থেকে তারা যেন বঞ্চিত না হন, তা লক্ষ রাখতে হবে। শুধু বদলি চাইলেই হবে না।’’