বিনোদ এবং সতীশের সঙ্গে তাঁদের মা সাগরী কুম্ভকার। —নিজস্ব চিত্র।
ছেলে-বৌমাদের নিয়ে ভরা সংসার। তবে তাতে ঠাঁই হয়নি বৃদ্ধা মায়ের। এ অভিযোগ নিয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন এক বৃদ্ধা। অভিযোগ, তাঁকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছেন দুই ছেলে-পুত্রবধূ। বুধবার এক পুলিশ আধিকারিকের ধমকের পর বৃদ্ধাকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়েছেন তাঁরা। সেই সঙ্গে, হলফ করে জানিয়েছেন যে এমন কাজ আর হবে না।
পুলিশ সূত্রে খবর, পুরুলিয়ার ২ নম্বর ব্লকের বাসিন্দা সাগরী কুম্ভকার তাঁর দুই ছেলে বিনোদ এবং সতীশের বিরুদ্ধে বিডিওর কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। এমনকি, তাঁর কাছে গিয়ে কান্নাকাটিও করেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, দুই সন্তানের সংসারে তাঁর ঠাঁই নেই। বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ায় অন্যের আশ্রয়ে থাকতে হচ্ছে। দু’বেলা দু’মুঠো জোটানোই সঙ্গিন।
বৃদ্ধার লিখিত অভিযোগটি পুরুলিয়া মফস্সল থানায় পাঠিয়ে দেন ওই ব্লকের বিডিও দেবজিৎ রায়। সেই সঙ্গে, বিষয়টি পুলিশকে দেখার জন্য বলেন। এর পর বিনোদ এবং সতীশ-সহ পুত্রবধূদের থানায় ডেকে পাঠায় পুলিশ। পুরুলিয়া মফস্সল থানার এক আধিকারিক তাঁদের বলেন, ‘‘খুবই দুঃখের কথা যে জন্মদাতা মা বাড়িতে ঠাঁই পাচ্ছেন না। এর পুনরাবৃত্তি হলে আইনি পদক্ষেপ করবে পুলিশ।’’
পুলিশের এই ‘ওষুধে’ কাজ হয়েছে। ওই বৃদ্ধার ছেলে-বৌমারা থানায় মুচলেকা দিয়ে জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে এ ধরনের কাজ করবেন না।
পুলিশের কাছ থেকে ‘সুবিচার’ খুশি বৃদ্ধা। বুধবার থানা থেকে বেরিয়ে তিনি বলেন, ‘‘এ বার হয়তো দু’মুঠো ভাত জুটবে!’’ বিডিওর মন্তব্য, ‘‘বৃদ্ধার দুই সন্তান থাকা সত্ত্বেও তাঁকে অন্য লোকের বাড়িতে দিন কাটাতে হয়েছিল। তাই বিষয়টি পুলিশকে দেখতে বলি। পুলিশ ভাল কাজ করেছে। সর্বোপরি এটা তো আমাদের কাজের মধ্যেই পড়ে।’’ বিনোদ-সতীশের সামনেই থানার ওই আধিকারিক মুচকি হেসে বলেন, ‘‘নিজের কর্তব্যটুকু পালন করেছি মাত্র।’’