রোগিণীর মৃত্যুতে তাণ্ডব নার্সিংহোমে

খাস কলকাতায় আবার হামলা আরোগ্য নিকেতনে। হাসপাতালে নয়। এ বার গিরিশ পার্কের এক নার্সিংহোমে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৬ ০৪:১০
Share:

খাস কলকাতায় আবার হামলা আরোগ্য নিকেতনে। হাসপাতালে নয়। এ বার গিরিশ পার্কের এক নার্সিংহোমে।

Advertisement

মস্তিষ্কে জল জমতে থাকায় এক তরুণীর মাথায় আগেই অস্ত্রোপচার হয়েছিল চার-চার বার। পঞ্চম অস্ত্রোপচার জরুরি হয়ে পড়েছিল। কিন্তু সংশ্লিষ্ট শল্যচিকিৎসক স্রেফ দাবিমতো টাকা না-পেয়ে সেই কাজে হাত দেননি বলে অভিযোগ। অথচ সেই ডাক্তারই মেয়েটিকে দেখবেন, এই আশায় বৃহস্পতিবার তাঁকে ওই নার্সিংহোমে ভর্তি করিয়ে দেওয়া হয়েছিল। অভিযোগ, অস্ত্রোপচার নিয়ে দীর্ঘ টালবাহানার মধ্যেই মেয়েটির মৃত্যু হয়। চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে তার পরেই ওই নার্সিংহোমে শুরু হয়ে যায় তাণ্ডব। ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। এই হামলায় আঙুল উঠেছে রোগীর আত্মীয়পরিজনদের দিকেই। তবে রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।

কয়েক দিন আগেই চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে হাঙ্গামা হয় সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল এসএসকেএমে। জুনিয়র ডাক্তারদের মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। নিরাপত্তা চেয়ে ডাক্তারেরা কর্মবিরতি শুরু করে দেন। তার পরে এ দিন আবার ভাঙচুর চালানো হল উত্তর কলকাতার এক নার্সিংহোমে।

Advertisement

পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবারের ঘটনায় মৃতার নাম খুশবু সিংহ (১৯)। তিনি গিরিশ পার্ক এলাকারই বাসিন্দা। নার্সিংহোম-কর্তৃপক্ষ জানান, চিকিৎসকের সুপারিশেই এ দিন বেলা আড়াইটে নাগাদ ওই তরুণীকে ভর্তি করা হয়েছিল। বিকেল ৫টা নাগাদ মেয়েটির মৃত্যু হয়। চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েন রোগীর বাড়ির লোকজন। ক্ষিপ্ত জনতা নার্সিংহোমের আসবাবপত্র ভাঙচুর শুরু করে দেয়। শেষ পর্যন্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়।

খুশবুর পরিবারের অভিযোগ ওই নার্সিংহোমের স্নায়ুরোগের চিকিৎসক সঞ্জীব ধানুকার বিরুদ্ধে। মৃতার বাবা মনোজকুমার সিংহ বলেন, ‘‘ধানুকাই খুশবুর চিকিৎসা করতেন। এর আগে চার বার অস্ত্রোপচার করেন তিনি। দিন বাইশ ধরে মেয়েটা অসুস্থ ছিল। কিন্তু এ বার সঞ্জীববাবু টাকার জন্য অস্ত্রোপচার করতে চাননি। তাই মেয়েটাকে অকালে চলে যেতে হল। পুলিশের কাছেও অভিযোগ করেছি।’’

টাকার দাবি বা চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ মানতে চাননি ধানুকা। তিনি জানান, মেয়েটির মস্তিষ্কে জল জমে যেত। মূল অসুস্থতা সেটাই। ‘‘টাকা দাবি করব কেন? ওরা আর্থিক ভাবে দুর্বল বলে অনেক সময় তো কম খরচেও চিকিৎসা করেছি। চার বার নিজের হাতে অস্ত্রোপচার করে ওর মাথায় জমা জল বার করেছি। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ আবার অস্ত্রোপচার করার কথা ছিল ঠিকই। কিন্তু তার আগেই ওর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। ওকে বাঁচানো যায়নি।’’

নার্সিংহোমের অধিকর্তা চিকিৎসক সুশীলকুমার অগ্রবাল আশ্বাস দিয়েছেন, কেন এমন হল, তা নিশ্চয়ই খতিয়ে দেখা হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement