প্রতীকী ছবি
এনটিপিসি-র কাটোয়া তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে কেন্দ্র যে ধীরে চলো নীতি নিচ্ছে, সোমবার সেই ইঙ্গিত দিলেন কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎমন্ত্রী পীযূষ গয়াল। কিন্তু এই প্রকল্পে কাজ না এগোনোর জন্য রাজ্য সরকারকেও কাঠগড়ায় তুলেছে বিদ্যুৎ মন্ত্রক। পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর প্রকল্পের কারণে ডিভিসি-র ক্ষতির জন্যও রাজ্যকে দুষেছেন পীযূষ। তবে বীরভূমের দেউচা-পাঁচামি কয়লাখনি রাজ্যের হাতে দিতে সমস্যা হবে না বলে জানিয়েছে কেন্দ্র।
সম্প্রতি কাটোয়া প্রকল্প থেকে এনটিপিসি গুরুত্বপূর্ণ অফিসারদের অন্যত্র বদলি করার পর ১,৩২০ মেগাওয়াটের এই প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। রাজ্যে এনটিপিসি-র কাছে ব্যাখ্যাও চেয়েছে। আজ কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎমন্ত্রী জানান, এই মুহূর্তে মোদী সরকার তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পে নতুন করে লগ্নিতে উৎসাহ দেখাচ্ছে না। কারণ দেশে এখন প্রয়োজনের তুলনায় বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলির ক্ষমতা অনেক বেশি। অপ্রচলিত বিদ্যুতে এখন বেশি জোর দিচ্ছে কেন্দ্র। তবে এনটিপিসি-র সঙ্গে যদি কারও বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি থাকে, তা হলে প্রকল্প করতেই পারে। বিদ্যুৎসচিব প্রদীপকুমার পূজারী আবার বলেন, ‘‘আমরা কাটোয়া প্রকল্প নিয়ে এগোতেই চাই। কিন্তু রাজ্যের থেকে জমি অধিগ্রহণ ও অন্য ছাড়পত্রের জন্য সাহায্য প্রয়োজন। রাজ্যকে এ বিষয়ে উদ্যোগী হতে হবে।’’ বিদ্যুৎ মন্ত্রকের কর্তারা জানান, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার আসার আগেই এনটিপিসি ৫৫৬ একর জমি হাতে পেয়েছিল। কিন্তু তার পরও ২৯৪ একর জমির প্রয়োজন ছিল। পরে মমতা সরকার ১০০ একর জমি দেয়। বাকিটা এনটিপিসি-কে সরাসরি কিনতে বলা হয়। কিন্তু এখনও প্রয়োজনীয় জমি মেলেনি।
পুরুলিয়াতে ডিভিসি-র রঘুনাথপুরের প্রকল্পের জন্যও রাজ্যকে দুষেছেন পীযূষ। তাঁর অভিযোগ, ‘‘রঘুনাথপুরের ওই প্রকল্প তৈরি হয়ে গিয়েছে। কিন্তু বিদ্যুৎ কেনার কেউ নেই। কারও সঙ্গে চুক্তিও হয়নি। তাই ঠিক হয়েছিল, কেন্দ্রের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা নেইভেলি লিগনাইট কর্পোরেশন ওই প্রকল্পের সিংহভাগ মালিকানা নিয়ে নেবে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ সরকার ছাড়পত্র দিচ্ছে না। এ জন্য ডিভিসি-কে ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে।’’ বিদ্যুৎ মন্ত্রকের কর্তাদের হিসেব, ২০১৬-’১৭-তে ডিভিসি-র যে ১০০০ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে, তাতে ৮০০ কোটি টাকাই এই রঘুনাথপুরের জন্য।
বীরভূমের দেউচা-পাঁচামি কয়লাখনি থেকে কয়লা তোলার জন্য রাজ্যকে আগেই সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে কেন্দ্র। কিছু খুঁটিনাটি কাজ চলছে। পীযূষ বলেন, ‘‘কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে এ বিষয়ে আলোচনা চলছে।’’