এত দিন কেবল ইদের দিন মসজিদে গিয়ে নমাজ পড়ার সুযোগ মিলত। কিন্তু এ বার থেকে প্রতি জুম্মাবারে (শুক্রবার) মসজিদে গিয়ে নমাজ পড়তে পারবেন বর্ধমান শহরের গোদা এলাকার সংখ্যালঘু মহিলারা। শুক্রবার ওই এলাকার মসজিদের দোতলায় তেমনই ৪৫ জন এক সঙ্গে নমাজ পড়েন।
মসজিদ কমিটির সম্পাদক তথা বর্ধমান হাই মাদ্রাসার প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক জিল্লুর রহমান বলেন, ‘‘সুব্যবস্থা ও পরিশীলিত মানসিকতা থাকলে ইসলাম ধর্মে মসজিদে গিয়ে নমাজ পড়তে পারেন মহিলারা। আমাদের এখানে দু’টি ইদেই মহিলারা নমাজ পড়ে থাকেন। শুক্রবার যাতে তাঁরা মসজিদে নমাজ পড়তে পারেন, তা নিয়ে অনেক দিন ধরে আলোচনা হচ্ছিল। সেটা এ দিন কার্যকর হল।’’
গোদার মসজিদ কমিটির এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এই আন্দোলনের অন্যতম ‘মুখ’, বর্ধমান-দুর্গাপুরের তৃণমূল সাংসদ মমতাজ সঙ্ঘমিতা। তাঁর উদ্যোগে বীরভূমের মাড়গ্রামে ইদে মহিলাদের প্রকাশ্যে নমাজ পড়া শুরু হয় ২০০৬ সালে (বীরভূমে মহিলারা প্রথম প্রকাশ্যে ইদের নমাজ পড়েন মুরারইয়ে, ২০০৫-এ)। এখনও তা চালু রয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘হজে মক্কায় দেখেছি, পুরুষ-মহিলারা পাশাপাশি নমাজ পড়ছেন। প্রতিদিন মহিলাদের মসজিদে নমাজ প়ড়ায় নিষেধ নেই। পুরুষদেরও এ ব্যাপারে এগিয়ে আসতে হবে।’’
নারী আন্দোলনের কর্মী তথা বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের শিক্ষক সৈয়দ তনভীর নাসরিনেরও মন্তব্য, ‘‘ওই এলাকার মহিলাদের সঙ্গে পুরুষদেরও অভিনন্দন জানাতে চাই। এটাই হওয়ার কথা। সব জায়গাতেই সবার সমান অধিকার থাকা উচিত।’’
গোদার এই মসজিদটি তিন তলা। নীচের তলায় বয়স্কেরা নমাজ পড়েন। দোতলায় মহিলাদের নমাজের জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে। ওই মসজিদের অন্যতম ইমাম আব্দুল নূর বলেন, ‘‘এ দিনের অভিজ্ঞতা খুবই ভাল। অন্য দিনও যাতে মহিলারা মসজিদে এসে নমাজ পড়তে পারেন, সে দাবি ইতিমধ্যেই উঠেছে।’’ নমাজ পড়ার পরে নাজিরা খাতুন, ওয়াহিদা বেগমরা বলেন, ‘‘অনেক দিনের ইচ্ছেপূরণ হয়েছে। সবাইকে ধন্যবাদ।’’