অঙ্কন: সুমন চৌধুরী।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর কাছ থেকে ‘সব রকম সুযোগসুবিধা’ নিয়েছেন বলে সারদা-কর্তা সুদীপ্ত সেন তাঁকে জানিয়েছিলেন, এমনটাই দাবি কুণাল ঘোষের। তাঁর আরও দাবি, সুদীপ্ত তাঁকে বলেছিলেন, ‘ম্যাডাম সব নিয়েছেন, আর এখন সব মুছে ফেলে দিতে নেমেছেন’। বহিষ্কৃত তৃণমূল সাংসদ কুণালের নিজের হাতে দমদম সেন্ট্রাল জেলে বসে লেখা ৯১ পাতার যে বয়ান সারদা-কাণ্ডের তদন্তকারীদের হাতে পৌঁছেছে, সেখানেই রয়েছে এমন তথ্য। কুণালের দাবি, আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে তাঁর সঙ্গে সুদীপ্তর দেখা হয়। দীর্ঘক্ষণ কথাও বলেন তাঁরা। সেই কথোপকথন লিপিবদ্ধ করেছেন কুণাল। যা আপাতত তদন্তের অঙ্গ।
মমতার বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা ও কুৎসা’ প্রচারের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছে তৃণমূল। জেলবন্দি কুণালের কথার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে তারা। এ সব নিয়ে মমতার বক্তব্য মেলেনি। তবে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম আগেই বলেছেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাবমূর্তিতে কালি লাগানো হলে মানুষ তা মেনে নেবে না। কারণ মমতার অপমান মানে বাংলার অপমান।”
কুণালের বয়ানে সুদীপ্তর সঙ্গে তাঁর কথাবার্তার যে বর্ণনা রয়েছে, সেখানে সারদা থেকে ‘ফায়দা’ নেওয়ার তালিকায় তৃণমূলের চার সাংসদ মিঠুন চক্রবর্তী, শতাব্দী রায়, অর্পিতা ঘোষ, ইমরান এবং মমতা-ঘনিষ্ঠ চিত্রশিল্পী শুভাপ্রসন্নের নাম এসেছে। মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি। তাঁকে এসএমএস পাঠালেও জবাব মেলেনি। শতাব্দী বলেন, “কেউ যদি সরকারি ভাবে আমাকে ডাকে, তা হলে আমার কাছে যা কাগজপত্র (সারদা সংক্রান্ত) আছে, আমি তা তাঁদের দেখাব।” অর্পিতার বক্তব্য: “শুরু না-হওয়া চ্যানেলে আমি চাকরি পাবার পরে কুণাল ঘোষই আমাকে এক দিন সুদীপ্ত সেনের সঙ্গে দেখা করিয়ে দেয়। সাত মাস চাকরি করে চার মাস বেতন পেয়েছি। সিবিআই যদি সুযোগ দেয় তা হলে ওই চার মাসের বেতনও ফেরত দিয়ে আসব।” সারদা পরিচালিত একটি সংবাদপত্রের সম্পাদক ইমরানের কথা: “আমি ছিলাম বেতনভুক। চেক-এ বেতন নিতাম মাসে ৫০ হাজার টাকা। সংশ্লিষ্ট সব নথি ইডি-কে দিয়েছি।” শুভাপ্রসন্নের দাবি: “আমি কখনও কারও কাছ থেকে কোনও ধরনের ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করিনি।”
সংশোধনী: মমতার আঁকা ছবি কেনার বিষয়ে মঙ্গলবার প্রকাশিত সৃঞ্জয় বসুর বক্তব্যে ছবির ক্রেতা হিসাবে ভুলবশত ‘কেকেএন’-এর নাম ছাপা হয়েছে। সৃঞ্জয়ের দাবি, ছবি কেনেন ‘কেকেআর’(কলকাতা নাইট রাইডার্স)-এর এক কর্তা।