২২০ বছরে প্রথম বারের জন্য সাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হল রাজভবনের দরজা। নিজস্ব চিত্র।
২২০ বছরে প্রথম বারের জন্য সাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হল রাজভবনের দরজা। বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের উদ্যোগে এবং জাদুঘরের সহযোগিতায় রাজভবনে শুরু হল জন সাধারণের ‘হেরিটেজ ওয়াক’। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় এই ‘হেরিটেজ ওয়াক’ শুরু হয়। রাজভবন ঘুরে দেখার সুযোগ পান দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত ২৯ জন। তাঁদের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, পঞ্জাব, রাজস্থান থেকে আগত চার অতিথিকে রাজভবনের তরফে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। জাদুঘরের তরফে দায়িত্বপ্রাপ্তরা আগত ব্যক্তিদের রাজভবনের বিখ্যাত ‘চাইনিজ় ক্যানন’, ‘কার্জন এলিভেটর’ (এশিয়ার প্রথম লিফ্ট), দু’টি সরোবর, ১১ হাজার বই বিশিষ্ট লাইব্রেরি, রাজভবনের বিভিন্ন হল, বাগান ঘুরিয়ে দেখান। প্রথম দিন কারা রাজভবন পরিদর্শনের সুযোগ পাবেন, তা ঠিক করা হয়েছিল জাদুঘরের তরফেই।
এখন থেকে সাধারণ মানুষরা অনায়াসে গিয়ে রাজভবন চত্বর এবং রাজভবনের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ঘুরে আসতে পারবেন বলে রাজ্যপাল জানিয়েছেন। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, কী ভাবে ঘুরে দেখা যাবে রাজভবন চত্বর? কখনই বা যাওয়া যাবে?
রাজভবন ঘুরিয়ে দেখানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জাদুঘরকে। রাজভবন সূত্রে খবর, ‘হেরিটেজ ওয়াক’-এ যোগ দিতে ইচ্ছুক মানুষেরা জাদুঘরের ওয়েবসাইট থেকেই নিজেদের নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন। খুব শীঘ্রই জাদুঘরের তরফে সেই ব্যবস্থা করা হবে। তবে প্রতিদিন রাজভবন ঘুরে দেখার সুযোগ পাওয়া যাবে না। শনি বা রবিবারের মধ্যে যে কোনও এক দিন এক ঘণ্টা করে রাজভবন ঘুরে দেখার সুযোগ দেওয়া হবে সাধারণ মানুষকে। একসঙ্গে যোগ দিতে পারবেন ২০-৩০ জন। তবে এখনও পর্যন্ত সেই দিনটি চূড়ান্ত করা হয়নি বলেও রাজভবন সূত্রে জানা গিয়েছে।
রাজভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, কেউ চাইলে গাইডের মাধ্যমে পুরো চত্বর ঘুরে দেখতে পারেন। আবার কেউ চাইলে কিউআর কোড স্ক্যান করে কানে হেডফোন লাগিয়ে নিজে নিজেই ঘুরে দেখতে পারেন রাজভবন। সে ক্ষেত্রে হেডফোনের মাধ্যমে যান্ত্রিক নির্দেশ শুনে ঘুরে দেখতে হবে রাজভবনের বিভিন্ন জায়গা।
হেরিটেজ ওয়াক প্রসঙ্গে রাজ্যপাল বোস বলেন, ‘‘আমাদের দেশ স্বাধীন হয়েছে অনেক আগে। আর সেই স্বাধীনতার জন্যই রাজভবনের দ্বার সাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হল। সাম্রাজ্যবাদের শেষ হিসাবেই এই উদ্যোগ। আমি ভারতের প্রতিটি প্রান্তের প্রতিনিধি। তারাও আমার প্রতিনিধিত্ব করে। ভারতের পতাকা সব সময় উঁচু থাকুক।’’
রাজ্যপাল বোস জানিয়েছিলেন, এখন থেকে রাজভবন ‘জন রাজভবন’। আর সেই উপলক্ষে ঢেলে সাজানো হয়েছে রাজভবন চত্বরকে। রাজভবনের কালো রেলিঙের গেটে লাল-সাদা কাপড়ে নববর্ষের শুভেচ্ছাবার্তা ইতিমধ্যেই টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বিকেল ৫টা থেকে নাচ-গান-আবৃত্তি-সহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন থাকছে রাজভবনে। বাংলার সংস্কৃতিকে উদ্যাপন করতে কলা ক্রান্তি মিশনের উদ্বোধন করা হবে। থাকবে রাজ্যপালের নিজস্ব ভাবনায় তৈরি ‘আনন্দ ধারা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানও। সন্ধ্যা ৬টায় রাজ্যপাল আবার বাংলায় ভাষণ দেবেন। রাজভবন জানিয়েছে, এ বছর বাংলার ‘জন রাজভবন’ বাংলার নববর্ষকে সাড়ম্বরে স্বাগত জানাবে।