প্রতীকী ছবি।
ক্লাব দখলে এ বার শাসকদলের সঙ্গে টক্করে নামল বিজেপি। বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়িতে এক কর্মশালায় উত্তরবঙ্গের পাঁচ জেলার সভাপতি ও মণ্ডল সভাপতিদের ডেকেছিলেন বিজেপি নেতৃত্ব। সেখানে রাজ্য বিজেপির সহ-পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেনন ক্লাব দখলে তৈরি হতেন বলেন নেতাদের। কী ভাবে তাতে শামিল হতে হবে, তার কৌশলও জানিয়ে দেন তিনি। তাঁর কথায়, “ব্যানার উনকি, ব্যবস্থা আপকা (ওঁদের, অর্থাৎ ক্লাবের ব্যানার, আপনাদের ব্যবস্থাপনা)।”
সাংগঠনিক বৈঠকে উত্তরের জেলার (জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, দার্জিলিং ও শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলা) প্রতি অরবিন্দের নির্দেশ, “এলাকার ক্লাব এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলির সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ান। এতে ভাল কাজ দেয়।” কী তাঁর কৌশল? অরবিন্দের কথায়, ক্লাবগুলি এলাকায় যে দৌড় প্রতিযোগিতা, বসে আঁকো, রক্তদান শিবির, ফুটবল বা কবাডি খেলার আয়োজন করে, সেগুলিতে পিছনে থেকে যাবতীয় খরচ জোগাবে বিজেপি। এই খরচ জোগানোকেই অরবিন্দ ‘ব্যবস্থা আপকা’ বলে উল্লেখ করেছেন এ দিনের বৈঠকে।
রাজ্য সরকার প্রতি বছর জেলার ক্লাবগুলিকে ২ লক্ষ টাকা করে অনুদান দেয়। তার বিরোধিতা করে বিজেপি নেতাদের অভিযোগ ছিল, সরকারি টাকা দিয়ে তৃণমূল ক্লাবগুলিকে রাজনীতির আখড়া বানাচ্ছে। এখন কিন্তু বিজেপি নেতারা সরাসরি ক্লাবকে রাজনীতির প্রচারে যুক্ত করতে নির্দেশ দিলেন। প্রতি ক্লাবের সভাপতি, সম্পাদক এবং পরিচালন কমিটির লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে স্থানীয় নেতাদের। কোনও ক্লাবে গেরুয়া মনোভাবাপন্ন সদস্য কম থাকলে তাঁদের মধ্যে থেকে নতুন সদস্য নেওয়ার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। এর ফলে এলাকার মানুষের সঙ্গে সরাসরি ঘনিষ্ঠতা বাড়ানোর সুযোগ হবে বিজেপি কর্মকর্তাদের।
এনআরসি-ই হোক বা নতুন নাগরিকত্ব আইন, সবই তখন বোঝানোর সুযোগ আসবে। একই সঙ্গে নিজেদের মত ও প্রভাব বিস্তারও সহজ হয়ে যাবে বলে মনে করছেন অরবিন্দ। বিজেপির এক নেতার কথায়, “রাজ্য সরকার ২ লাখ টাকা করে দিচ্ছে। আমাদের দলও ক্লাবকে পরিকাঠামোগত উন্নয়নে সাহায্য করতে পারে।” ৩১ জানুয়ারির মধ্যে উত্তরবঙ্গের পাঁচ জেলার সব বুথ কমিটিকে এলাকার অন্তত তিনটে করে ক্লাবের অনুষ্ঠানে শামিল হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব।
এই কৌশলকে আমল দিতে নারাজ যুব তৃণমূল। জলপাইগুড়ি জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “গত লোকসভা ভোটে বিজেপি জাতীয়তাবোধের মুখোশ পরেছিল। এখন রাজনৈতিক অস্ত্র হাতে নেই বলে ক্লাবে ঢুকতে চাইছে। কিন্তু বিজেপি নেতারা বুঝতে পারছেন না, এ রাজ্য ক্লাব থেকে আমজনতার বাড়ি, সবের দরজাই তাঁদের জন্য বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।”