লোকসভা-বিধানসভার ভোটে তার জায়গা বেশ কিছু দিন আগে নিশ্চিত হয়ে গেলেও ছাত্র নির্বাচনে সে ঠাঁই পাবে কি না, তা নিয়ে টানাপড়েন চলেছিল বিস্তর। সে মানে ‘নোটা’ কিন্তু ছাত্রভোটে খাতা খুলেই ছক্কা হাঁকাল যাদবপুরে।
ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদের নির্বাচনে ‘নোটা’ বা না-ভোটের খাতে ভোট পড়েছে ১২১৭টি। এই বছরেই রাজ্যের কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যাদবপুরের ছাত্রভোটে নোটা (ভোটাধিকার প্রয়োগ করেই প্রার্থী-তালিকার কাউকে পছন্দ নয় বলে জানিয়ে দেওয়া) চালু হয়েছে। যাদবপুরের ডিন অব স্টুডেন্টস রজত রায় জানান, নোটা সব থেকে বেশি ভোট পেয়েছে ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টিতে (৮৭৭টি)। বিজ্ঞান শাখায় নোটা খাতে ভোট পড়েছে ৯১টি, কলা বিভাগে ২৪৯টি।
যাদবপুরে এ বারেই প্রথম ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টিতে তিনটি আসনে প্রার্থী দিয়ে ৮৫৮টি ভোট পেয়েছে এবিভিপি। গত ফেব্রুয়ারিতে যাদবপুরে ভারত-বিরোধী স্লোগান দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। তখন জাতীয়তাবাদের পক্ষে মিছিল করেছিল এবিভিপি-ই। মে মাসে বিবেক অগ্নিহোত্রীর ‘বুদ্ধ ইন আ ট্রাফিক জ্যাম’ ছবিটির প্রদর্শনী ঘিরে যখন বিতর্ক বেধেছিল, সেই সময়েও অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিল তারা। পরে ‘ন্যাশনাল স্টুডেন্ট ফ্রন্ট’ নামে একটি সংগঠনও তৈরি করেন এবিভিপি-র কর্মী-সমর্থকেরা। ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে তিনটি পদে জিততে না-পারলেও তাঁরা ভোট পেয়েছেন ভালই। ওই ফ্যাকাল্টিতে এসএফআইকে পিছনে ফেলে দ্বিতীয় শক্তি হিসেবে উঠে এসেছে এবিভিপি-ই।
এ বারের নির্বাচনে ইঞ্জিনিয়ারিং ও বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র সংসদ যথাক্রমে ডিএসএফ এবং ডব্লিউটিআইয়ের হাতেই রয়েছে। কলা বিভাগ দখল করেছে এসএফআই। দু’বছর পরে তারা কলা বিভাগে ক্ষমতায় ফিরল। চেয়ারপার্সনের পদে এসএফআইয়ের বিজয়ী প্রার্থী সোমাশ্রী চৌধুরী বলেন, ‘‘এই জয় যাদবপুরের বাইরেও লড়তে প্রেরণা জোগাবে আমাদের।’’
এই নিয়ে টানা ৪১ বার ‘স্বাধীন’ সংগঠন ‘ডেমোক্র্যাটিক স্টুডেন্টস ফ্রন্ট’ ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টির ছাত্র সংসদ দখলে রাখল। টানা ২৫ বছর বিজ্ঞানের ছাত্র সংসদ দখলে রাখল ‘উই দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্টস’ বা ডব্লিউটিআই। গত বার আসন না-পেলেও এ বার ছ’টি ক্লাস-প্রতিনিধির পদে জিতেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ।
আজ, শনিবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের নির্বাচন। সেখানে ইতিমধ্যেই ৮৩ শতাংশ আসনের প্রার্থীরা জিতে গিয়েছেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। বেশির ভাগ আসনে জিতেছে টিএমসিপি।