সেরা পুজো কোনটা, বেছে নিতে কলকাতা চলল পাহাড়ের দশ পড়ুয়া

কলকাতা যেতে হবে শুনে, প্রথমে না করে দিয়েছিল কিশোরীটি। বাবা শ্রমিকের কাজ করে। কলকাতা যাওয়ার মতো পোশাক নেই। কিশোরীর কথা শুনে রামকৃষ্ণ মিশন নিবেদিতা এডুকেশনাল এন্ড কালচারাল কেন্দ্রের সম্পাদক স্বামী নিত্যসত্যানন্দ ওই কিশোরী সহ দশ জন পড়ুয়াকেই নতুন পোশাক বানিয়ে দেন। সেই পোশাক ব্যাগে ভরেই শনিবার দুপুরে দার্জিলিং থেকে কলকাতায় রওনা হল পাহাড়ের দশ পড়ুয়ারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দার্জিলিং শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০০:৩৩
Share:

রামকৃষ্ণ মিশন নিবেদিতা এডুকেশনাল এন্ড কালচারাল কেন্দ্রের উদ্যোগে কলকাতায় যাচ্ছে এই দশ পড়ুয়া। ছবি: রবিন রাই।

কলকাতা যেতে হবে শুনে, প্রথমে না করে দিয়েছিল কিশোরীটি। বাবা শ্রমিকের কাজ করে। কলকাতা যাওয়ার মতো পোশাক নেই। কিশোরীর কথা শুনে রামকৃষ্ণ মিশন নিবেদিতা এডুকেশনাল এন্ড কালচারাল কেন্দ্রের সম্পাদক স্বামী নিত্যসত্যানন্দ ওই কিশোরী সহ দশ জন পড়ুয়াকেই নতুন পোশাক বানিয়ে দেন। সেই পোশাক ব্যাগে ভরেই শনিবার দুপুরে দার্জিলিং থেকে কলকাতায় রওনা হল পাহাড়ের দশ পড়ুয়ারা। কলকাতার ১০টি পুজো মণ্ডপ ঘুরে সেরা পুজোর সম্মান দেবে পাহাড়ের এই দশজন পড়ুয়াই।

Advertisement

ওদের সকলেরই বাবা-মা চা শ্রমিকের কাজ করেন। বয়স ৯ থেকে ১৩। সকলেই স্কুলে পড়াশোনা করে, স্কুলের শেষে দার্জিলিঙে রামকৃষ্ণ মিশন নিবেদিতা এডুকেশনাল এন্ড কালচারাল কেন্দ্রে নিয়মিত উপস্থিত হয় এই পড়ুয়ারা। সেখানেই তাদের মনোসংযোগ-সহ মূল্যবোধের শিক্ষা দেওয়া হয়। সেরা পুজোর বিচার করতে কলকাতা নিয়ে যাওয়া হলেও, এর আগে ওদের বেশিরভাগই দার্জিলিং ছেড়ে শিলিগুড়িও যেতে পারেনি। সংস্থার সম্পাদক স্বামী নিত্যসত্যানন্দ জানিয়েছেন সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে এমনই দুই পড়ুয়াকে শিলিগুড়িতে নিয়ে গিয়েছিলেন। দার্জিলিঙের বাইরে কোনও শহর দেখে ওরা তাজ্জব হয়ে গিয়েছিল। তারপরেই এদের কলকাতা নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করা হয়। দশ জনের দলে ৫ জন ছাত্রী রয়েছে।

রামকৃষ্ণ মিশনের নিবেদিতা কেন্দ্রের সঙ্গে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও এই প্রকল্পে সহযোগিতা করছে বলে জানানো হয়েছে। জিটিএ-এর তরফে কলকাতায় পড়ুয়াদের থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। ‘পাহাড়ের চোখে সমতলের পুজো’ নামে এই উদ্যোগের বিষয়ে নিত্যসত্যানন্দ বলেন, “যেদিন দুই পড়ুয়াকে শিলিগুড়িতে নিয়ে গিয়েছিলাম। সেদিন থেকেই এই উদ্যোগের পরিকল্পনা করতে থাকি। আপাতত পড়ুয়ারা সকলেই কলকাতায় যাওয়ার আনন্দে মেতে রয়েছে।”

Advertisement

ষষ্ঠী এবং সপ্তমীর দিন কলকাতার পুজো মণ্ডপগুলি দেখতে যাবে পড়ুয়ারা। শনিবার শিলিগুড়িতে পৌঁছনোর পরে, রবিবার তারা কলকাতার ট্রেন ধরবেন। নিবেদিতা শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র সূত্রে জানানো হয়েছে, ১০২ জন পড়ুয়ার মধ্যে থেকে ১০ জনকে বেছে নেওয়া হয়েছে। এ দিন দার্জিলিঙে রায় ভিলার কেন্দ্র থেকে পড়ুয়ারা রওনা হয়। অনন্যা ছেত্রী, শর্মিলা দেওয়ান, নীতেশ তামাঙ্গরা সল্ট লেকের এফ ডি ব্লক, শ্রীভূমি, ত্রিধারা সম্মিলনী, একডালিয়া এভারগ্রিনের মতো বিগ বাজেটের দশটি মণ্ডপ ঘুরে সেরার বিচার করবে বলে জানানো হয়েছে। দার্জিলিঙে ফিরে আসার পরে কলকাতায় যাওয়ার অভিজ্ঞতা, পুজো দেখা নিয়ে পড়ুয়াদের মধ্যে প্রবন্ধ, গল্পলেখা সহ অনান্য প্রতিযোগিতা হবে বলে জানানো হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement