এক সিপিএম নেতাকে গুলি করে খুনের চেষ্টায় উত্তেজনা ছড়াল ইসলামপুরে। মঙ্গলবার বিকেলে ইসলামপুর থানার অলিগঞ্জ এলাকাতে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরেই এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে কংগ্রেসের এক প্রাক্তন প্রধানকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তবে কংগ্রেসের অভিযোগ, ধৃত একজন বৃদ্ধ। তাঁর পক্ষে ওই ধরনের কাজ করা সম্ভব নয়। আর সিপিএমের করা অভিযোগে তাঁর নামই নেই। পুলিশ-প্রশাসন ইচ্ছাকৃতভাবে দলের নেতাদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসাচ্ছে। তাদের অভিযোগ, সিপিএমের গোষ্ঠী কোন্দলের জেরেই ঘটনাটি ঘটেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, গুলিবিদ্ধ নেতার নাম ধীরেন বিশ্বাস। তাঁর বাড়ি গোয়ালপোখর থানার নন্দঝাড় এলাকায়। তিনি পাঞ্জিপাড়া লোকাল কমিটির সম্পাদক। এ দিন বিকেলে বাইকে করে বাড়ির দিকে যাওয়ার সময় অলিগঞ্জ এলাকাতে উল্টোদিক থেকে আসা একটি গাড়ি থেকে তিন জনের একটি দুষ্কৃতীদল তাঁকে লক্ষ করে দেশি পিস্তল থেকে গুলি চালায়। প্রথমে একটি গুলি তাঁর পায়ে লাগে। তিনি গুলি খেয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে দুষ্কৃতীরা তাঁর চোখে ফের একটি গুলি করে। এলাকার লোকেরা ছুটে গেলে দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে প্রথমে ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতাল ও পরে শিলিগুড়ির একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়েছে।
উত্তর দিনাজপুরের জেলা পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি বলেন, “এলাকায় পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ঘটনায় জড়িত শান্তি সরকার নামে এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।” পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃত শান্তি সরকার পোখোরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের একসময় প্রধান ছিলেন। ঘটনার পর ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের ধনতলা ও অলিগঞ্জ এবং নন্দঝাড়ে রাজ্য সড়ক অবরোধ করেন সিপিএম কর্মী-সমর্থকেরা। মিনিট দশেক ধরে দু’জায়গায় অবরোধ চলে।
পুলিশ সূত্রে খবর, এ দিন দুপুরে পেশায় নন্দঝাড় হাইস্কুলের করণিক ৫২ বছর বয়সী ধীরেনবাবু ইসলামপুরে ব্যাঙ্ক ও আদালতে নিজস্ব কিছু কাজ করে নন্দঝাড় এলাকাতে বাড়ি ফিরছিলেন। অলিগঞ্জ এলাকাতে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর তিনজনের একটি দুষ্কৃতীদল গাড়ি করে এসে তাঁকে লক্ষ করে গুলি চালায়। সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য সুবীর বিশ্বাস বলেন, “কংগ্রেস ভোটের আগে এলাকায় সন্ত্রাস চালাতেই এ কাজ করছে। আমরা স্পষ্টভাবে দু’জন এবং আরও অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনের নামে অভিযোগ দায়ের করেছি।” স্থানীয় কংগ্রেস বিধায়ক গোলাম রব্বানি বলেন, “মিথ্যা অভিযোগ করেছে সিপিএম। যাঁকে ধরা হয়েছে তাঁর বয়স সত্তর বছর। অভিযোগে তাঁর নামও নেই। আর বাকি দু’জন আমাদের সক্রিয় কর্মী। ভোটের আগে গোটাটাই সিপিএমের ষড়যন্ত্র।” এলাকার কংগ্রেস নেতাদের একাংশের অভিযোগ, “জমি সংক্রান্ত বিবাদের জেরে ওই ঘটনা ঘটেছে। তাতে সিপিএম রাজনীতির রং লাগিয়েছে।”