মুখ্যমন্ত্রীর কর্মিসভার ২৪ ঘণ্টা আগে তৃণমূল-সিপিএম সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জ ব্লকের টাকিমারির মিলনপল্লি এলাকা। সোমবার বিকেল সাড়ে তিনটা নাগাদ দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এক তৃণমূল কর্মীর উপরে হামলা চালিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে সিপিএম সমর্থকদের বিরুদ্ধে। জখম তৃণমূল কর্মী অনন্ত সরকারকে শিলিগুড়িতে একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়েছে। তাঁর ডান কাঁধে ভোজালি দিয়ে কোপানোয় গভীর ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে জখম সিপিএম সমর্থক সুভাষ করকে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার জগ মোহন বলেন, “কিছু লোক মারামারি করেছেন। এক জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। তার কাছ থেকে একটি ভোজালি উদ্ধার করা হয়েছে।” পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে বলে কমিশনার জানিয়েছেন।
পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন টাকিমারি এলাকায় সাপ্তাহিক হাট বসে। বিকেলে অনন্তবাবু হাটের দিকে যাচ্ছিলেন। সেই সময় কয়েকজন মিলে তাঁর উপরে হামলা করে। ভোজালি দিয়ে তাঁর ডান কাঁধে কোপ দেওয়া হয়। গুরুতর জখম হন তিনি। তাঁর চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসেন। তখন পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে দুষ্কৃতীরা। তার মধ্যে সুভাষকে ধরে ফেলে জনতা। বেধড়ক মারা হয় তাঁকে। তাঁকেও গুরুতর জখম অবস্থায় চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। তাঁর মাথায় এবং ডান পায়ে চোট রয়েছে।
বামেদের জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী সিপিএম নেতা মহেন্দ্র রায়ের অভিযোগ, “কংগ্রেস-তৃণমূলের মধ্যে গোলমাল হলেও পরে আমাদের এক কর্মী এবং তাঁর স্ত্রীকে অন্যায় ভাবে মারধর করা হয়েছে।” জলপাইগুড়ি জেলা সিপিএম সম্পাদক কৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “টাকিমারিতে তৃণমূল সন্ত্রাস ছড়াচ্ছে। শুনেছি আমাদের ও কংগ্রেসের দুই কর্মীকে তৃণমূলের লোকজন পিটিয়েছে। ” তৃণমূল বিধায়ক খগেশ্বর রায় পাল্টা অভিযোগ করেন, এ দিন বিকেল নাগাদ টাকিমারি এলাকায় তাঁদের এক কর্মীকে সিপিএমের লোকজন মারধর করে। তিনি বলেন, “মারধর করে পালানোর সময় আমাদের ছেলেরা দু’জনকে ধরে ফেলেন। সামান্য মারধরও করে বলে শুনেছি।” জলপাইগুড়ি জেলা কংগ্রেসের সভাপতি নির্মল ঘোষদস্তিদারের দাবি, তাঁদের বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে। তবে গোটা ঘটনাটি ব্যক্তিগত গোলমালের জেরে হয়েছে বলে মনে করছেন জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল পর্যবেক্ষক সৌরভ চক্রবর্তী।