সিপিএম-তৃণমূল নেতাদের নিয়ে ব্যবসা বনধের হুমকি

সিপিএম এবং তৃণমূলের নেতাদের একযোগে বসিয়ে ব্যবসা বনধের হুমকি দিলেন নর্থ বেঙ্গল মোটর ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা। সেবক রোডের হোটেল চত্বরে থাকা গুদাম ঘরে হামলার ঘটনার মূল অভিযুক্তদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করা না হলে বনধ হবে বলে সংগঠনের সদস্যরা জানিয়েছেন। সোমবার দুপুরে সাংবাদিক সম্মেলনে ওই ঘোষণার সময় তাঁদের সঙ্গে ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের জেলার কার্যকরী সভাপতি নান্টু পাল এবং শহরের সিপিএম নেতা কমল অগ্রবাল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:৫৯
Share:

সিপিএম এবং তৃণমূলের নেতাদের একযোগে বসিয়ে ব্যবসা বনধের হুমকি দিলেন নর্থ বেঙ্গল মোটর ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা।

Advertisement

সেবক রোডের হোটেল চত্বরে থাকা গুদাম ঘরে হামলার ঘটনার মূল অভিযুক্তদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করা না হলে বনধ হবে বলে সংগঠনের সদস্যরা জানিয়েছেন। সোমবার দুপুরে সাংবাদিক সম্মেলনে ওই ঘোষণার সময় তাঁদের সঙ্গে ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের জেলার কার্যকরী সভাপতি নান্টু পাল এবং শহরের সিপিএম নেতা কমল অগ্রবাল। দুই জনই সেবক রোড এলাকার প্রাক্তন কাউন্সিলরও।

বনধের প্রশ্নে সিপিএম নেতা কমলবাবু বলেছেন, “এই ব্যবসায়ীদের পিঠ দেওয়ালে ঠেকেছে। পুলিশকে কড়া ব্যবস্থা নিতেই হবে। না হলে তো ব্যবসায়ীদের প্রতিবাদ করতেই হবে।” তবে তৃণমূল নেতা নান্টুবাবু অবশ্য ব্যবসায়ীদের বনধের মত কড়া সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে আসার অনুরোধ করেন। তাঁর কথায়, “আমাদের সরকার জোর করে উচ্ছেদের বিরুদ্ধে। তবে বনধ করে সমস্যা মিটবে না। পুলিশ ব্যবস্থা নিয়েছে। সবাই ধরা পড়বে।”

Advertisement

এ দিন মোটর ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শিবশঙ্কর সরকার বলেন, “আমাদের পুলিশ-প্রশাসনের উপর ভরসা রয়েছে। তাঁরা ঘটনার পর দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছেন। কিন্তু মূল অভিযুক্তরা এখনও ধরা পড়েনি। আমরা ৪৮ ঘণ্টা দেখব। না হলে সেবক রোডে দোকানপাট বন্ধ করে প্রতিবাদ করা হবে।” পুলিশ অবশ্য সকল অভিযুক্তকে ধরা হবে বলে এদিনও ব্যবসায়ীদের আশ্বস্ত করেছে। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার জগ মোহন বলেন, “আমরা সব অভিযুক্তদের ধরার চেষ্টা করছি।”

গত শনিবার রাতে ওই হোটেল চত্বরে থাকে ভাড়াটের গুদামঘর ভেঙে মালপত্র সরানোর অভিযোগ ওঠে মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে। পুলিশ অভিযোগ অভিযোগ পেয়েই রাতেই ব্যবস্থা নেয়। এলাকা থেকে ৫৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়। চারটি ছোট গাড়িতে করে তাঁর সঞ্জয় বনশাল নামের ভাড়াটের গুদামের মালপত্র সরানোর চেষ্টা করছিলেন বলে অভিযোগ। ঘটনার পর সঞ্জয়বাবু অবশ্য হোটেলটির মালিক বলে পরিচিত কাজল সরকার, তাঁর স্ত্রী মুনমুন সরকার, বাবা কমল সরকার এবং মা কল্পনা সরকারের নামে চুরি এবং ঘর দখলের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করেন।

সঞ্জয়বাবুর দাবি, “আমরা ৪৩ বছর ধরে ভাড়াটে হিসাবে আছি। আদালতে একটি মামলাও চলছে। এ ভাবে উচ্ছেদের চেষ্টা ভাবাই যায় না।” তবে সঞ্জয়বাবুর অভিযোগ নিয়ে প্রশ্নও উঠেছে পুলিশ এবং ব্যবসায়ীদের একটি অংশের মধ্যে। তাঁরা জানান, হোটেল মালিকের স্ত্রী ও বৃদ্ধ বাবা-মায়ের নাম এফআইআরে দেওয়ায় ব্যবসায়ীদের অনেকেই ক্ষুব্ধ। হোটেলকর্মীদের একাংশ জানান, কাজলবাবুর বৃদ্ধ বাবা-মা এফআইআরে নাম দেওয়া হয়েছে শুনে ভেঙে পড়েছেন। অভিযুক্তদের আইনজীবী অত্রি শর্মা বলেন, “ভাড়াটে-মালিক বিবাদ নিয়ে মামলা আদালতে বিচারাধীন। সেখানে বাড়তি কোনও সুবিধা নিতে অভিযোগে চারটি নাম ব্যবহার করা হয়েছে। বৃদ্ধ দম্পতি, গৃহবধূর নামও এফআইআরে রাখা থেকেই অভিযোগের সারবত্তা বোঝা যাচ্ছে।” ব্যবসায়ী সঞ্জয়বাবু দাবি, “কাজলবাবু পরিবারের সকলে যুক্ত বলে আমাদের সন্দেহ।”

এ দিন দুপুরে হোটেলের নিচে থাকা ভাড়াটেদের সঙ্গে দেখা করতে যান রাজ্যের প্রাক্তন পুরমন্ত্রী তথা সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য। তিনি কথা বলেন অভিযোগকারীর সঙ্গেও। যে গুদামটির তালা ভাঙার অভিযোগ উঠেছে, সেটিও দেখেন। অশোকবাবু বলেন, “গোটা সম্পত্তি নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। সেই সময় একপক্ষ এভাবে রাতের অন্ধকারে গাড়ি নিয়ে এসে মাল লুঠের চেষ্টা নজিরবিহীন। এটা ডাকাতি ছাড়া কিছু নয়।” তিনি জানান, পুলিশকে বলব, জড়িতদের প্রত্যেককে গ্রেফতার করা হোক। আমরা ভাড়াটেদের পাশে আছি। আমি জোর জবরদস্তি করে উচ্ছেদের বিরোধী।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement