গজলডোবা

সিন্ডিকেট-রাজ নিয়ে হুঁশিয়ারি গৌতমের

প্রোমোটারি ও সিন্ডিকেট-রাজের সঙ্গে তৃণমূল নেতাদের একাংশের জড়িয়ে পড়ার একাধিক ঘটনা সাম্প্রতিক কালে প্রকাশ্যে এসেছে বারবার। সিন্ডিকেট গড়ে কাজে বাধা দেওয়া হলে তাঁরা বরদাস্ত করবেন না বলে শনিবার হুঁশিয়ারি দিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। কিছু দিন আগেই নদিয়ার রানাঘাটে একটি সভায় সিন্ডিকেটে জড়িত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বার্তা দিয়েছিলেন বীজপুরের তৃণমূল বিধায়ক শুভ্রাংশু রায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০০:৫২
Share:

প্রোমোটারি ও সিন্ডিকেট-রাজের সঙ্গে তৃণমূল নেতাদের একাংশের জড়িয়ে পড়ার একাধিক ঘটনা সাম্প্রতিক কালে প্রকাশ্যে এসেছে বারবার। সিন্ডিকেট গড়ে কাজে বাধা দেওয়া হলে তাঁরা বরদাস্ত করবেন না বলে শনিবার হুঁশিয়ারি দিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব।

Advertisement

কিছু দিন আগেই নদিয়ার রানাঘাটে একটি সভায় সিন্ডিকেটে জড়িত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বার্তা দিয়েছিলেন বীজপুরের তৃণমূল বিধায়ক শুভ্রাংশু রায়। তাঁর অভিযোগ ছিল, শাসকদলের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা কিছু মানুষ সিন্ডিকেট-রাজকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন। কিন্তু দলে থেকে প্রোমোটারি বা তোলাবাজিকে প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না বলে সে দিন সতর্কও করেন তিনি। গৌতম দেবের কথাতেও সেই একই সুরই শোনা গেল।

জলপাইগুড়ির গজলডোবায় বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে গৌতমবাবু এ দিন অভিযোগ করেন, একটি দুষ্টচক্র গজলডোবায় ‘মেগা ট্যুরিজম হাব’ তৈরির কাজে বাধা দিতে আসরে নেমেছে। জমির দালালদের সঙ্গে কিছু নেতা-কর্মীর যোগসাজসে সিন্ডিকেট-রাজ কায়েমের চেষ্টা চলছে বলেও তাঁর আশঙ্কা। মন্ত্রী বলেন, “২০৮ একর জমি জুড়ে ট্যুরিজম হাব তৈরির কাজ চলছে। পরিকাঠামো তৈরির জন্য দেড়শো কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে। কিন্তু কাজ করতে কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে।”

Advertisement

এর পরেই গৌতমবাবুর হুঁশিয়ারি, “সিন্ডিকেট গড়ে কাজে বাধা দেওয়ার চেষ্টা বরদাস্ত করা হবে না। কোনও সমস্যা থাকলে আলোচনা করা যেতে পারে। অযথা ঝামেলা পাকালে জেলে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।” তিনি জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দু’টি জায়গা পছন্দ করেছেন। একটি তাকদার কাছে লামাহাটা, অন্যটি গজলডোবা। ওই দুই জায়গায় ঘোষিত সব প্রকল্প বাস্তবায়িত হবেই বলে দাবিও করেছেন গৌতমবাবু।

এ দিন ট্যুর অপারেটরদের সংগঠনের সঙ্গে পর্যটন দফতরের যৌথ উদ্যোগে ওই অনুষ্ঠানের সূচনায় নিজেই মঞ্চ থেকে নেমে মাদল বাজান মন্ত্রী। সংগঠনের কর্ণধার সম্রাট সান্যাল বলেন, “যে সব প্রস্তাব রয়েছে, তাতে গজলডোবার চেহারা আমূল বদলে যাবে। প্রচুর কর্মসংস্থান হবে। এ ধরনের বড় মাপের প্রকল্পের কাজ হলে নানা অসাধু চক্র সক্রিয় হতে পারে। মন্ত্রী ঠিকই বলেছেন, কড়া পদক্ষেপ করা না হলে প্রকল্পের কাজ দ্রুত শেষ করা সম্ভব হবে না।”

কারা সিন্ডিকেট গড়ে গোলমাল পাকাচ্ছে? উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী কোনও দলের নাম করেননি। যদিও তৃণমূলের অন্দরের খবর, দলেরই কিছু নেতাকর্মী গজলডোবায় সিন্ডিকেট-রাজ কায়েমের চেষ্টা করছেন বলে নির্দিষ্ট অভিযোগ পেয়েছেন তিনি। শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়ির তৃণমূল নেতাদের কয়েক জন গজলডোবায় তড়িঘড়ি জমি ও পুকুর কিনে ফেলায় তা নিয়েও বিরোধীদের তরফে নানা কটাক্ষ করা হচ্ছে। অন্তত তিন জন প্রাক্তন কাউন্সিলর গজলডোবায় জমি-পুকুর কিনে নানা কাজে ছড়ি ঘোরানোর চেষ্টা করছেন বলেও সরকারি তরফেই মন্ত্রীর কাছে অভিযোগ পৌঁছেছে।

তৃণমূলের শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়ি জেলা কমিটির নেতাদের একাংশের মতে, সেই প্রেক্ষাপটেই প্রকাশ্য সভা থেকে হুঁশিয়ারি দিয়ে সিন্ডিকেট-রাজে রাশ টানার চেষ্টা করেছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী। প্রকাশ্যে কারও নাম না করেও। এ প্রসঙ্গে বিশদে জানতে চাইলে তাঁর মন্তব্য, “যা বলার, সভায় বলেছি। যাঁদের বোঝার, নিশ্চয়ই বুঝেছেন।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement