মেঘ সরে গিয়ে চতুর্থীর নীল আকাশ উঁকি দিতেই, জমে উঠল পুজোর বাজার। পুজোর আগের শেষ রবিবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি থেকে মালদহ, বালুরঘাট, আলিপুরদুয়ার সর্বত্রই বাজারে ভিড় দেখা গিয়েছে। শনিবার বিকেলের বৃষ্টিতে উত্তরবঙ্গের সব জেলাতেই পুজোর বাজার বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ির বিভিন্ন বাজার এলাকায় সন্ধ্যের পরে জল দাঁড়িয়ে যায়। রবিবার সকালেও আকাশে কালো মেঘের আনাগোনায় আশঙ্কিত হয়ে পড়েন ব্যবসায়ীরা। মুখ ভার হয়ে যায় বাসিন্দাদেরও। যদিও দুপুরের পরে কালো মেঘ সরে যেতেই, পুজোর বাজারেও যেন প্রাণ ফুরে আসে।
আলিপুরদুয়ারের কলেজ হল্ট এলাকায় ভিড়ের ঠেলায় যানজট হওয়ার উপক্রম হয়। পোশাক থেকে শুরু করে প্রসাধনী, জুতোর দোকানে ঠাসা ভিড় দেখা যায়। বাজারে ক্রেতাদের ভিড় দেখা যায় হ্যামিল্টনগঞ্জ, জয়গাঁ, হাসিমারাতেও। বীরপাড়া, ফালাকাটা, ময়নাগুড়ি, ধূপগুড়ির বাজারে দুপুর থেকে বিকেল, সন্ধ্যে পেরিয়ে রাত পর্যন্ত ভিড় দেখা যায়। বালুরঘাটের নিউমার্কেট এলাকায় জুতো ও পাঞ্জাবির দোকানের সামনে লম্বা লাইন ছিল। যদিও, বিকেল ৫টার পর আকাশ কালো মেঘ আসতে থাকায় ছবিটা বদলাতে শুরু করে। একপশলা বৃষ্টি হতেই মন ভার হয়ে পড়ে বিগ বাজেটের পুজো উদ্যোক্তাদের। মিনিট পনেরো পরে বৃষ্টি থামতেই ফের এ দিন বালুরঘাটের পুজোর বাজার জমে ওঠে।
শেষ রবিবার পুজোর বাজার। মালদহ, বালুরঘাট, কোচবিহার, ময়নাগুড়িতে তোলা নিজস্ব চিত্র।
ভিড় দেখা গিয়েছে রায়গঞ্জেও। নিউমার্কেট, লাইনবাজার, মোহনবাটি, বিধাননগর, শিলিগুড়িমোড়, কসবা, দেবীনগর সহ বিভিন্ন এলাকার পোশাকের দোকানগুলির সামনে ভিড় ঠেলে ক্রেতাদের ঢুকতে হয়। রায়গঞ্জেও বিকেলে একপ্রস্ত বৃষ্টি হয়। সে সময়ে অনেকেই বৃষ্টিতে ভিঝে যান। তবে পুজোর বাজারের উত্সাহে তেমন ভাটা পড়তে দেখা যায়নি। বৃষ্টি কমে যাওয়ার পর অবশ্য ফের দোকানগুলিতে ক্রেতাদের ভিড় লক্ষ্য করা গিয়েছে। রায়গঞ্জের উদয়পুর এলাকার বাসিন্দা পেশায় প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক সুজন দত্ত বলেন, “বৃষ্টি কমে যাওয়ার পর-ই পরিবারের লোকজনদের নিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েছি।” বৃষ্টি বাধ সাধেনি কোচবিহারেও। সকালে বৃষ্টি হওয়ায় ব্যবসায়ীরা চিন্তায় পড়েছিলেন। পরে অবশ্য আকাশ কিছুটা পরিষ্কার হয়। বৃষ্টিও হয়নি। ফলে দুপুর থেকেই কোচবিহারের বাজার জমে ওঠে। ভবানীগঞ্জ বাজার, নতুন বাজার, দেশবন্ধু মার্কেট সর্বত্র ছিল এক ছবি। ক্রেতাদের ভিড়ে শহরের বাজার এলাকায় রাস্তায় চলাফেরা করা পর্যন্ত সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। কোচবিহার জেলা বস্ত্র ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক উত্তম কুণ্ডু বলেন, “শনিবার রাতের পর রবিবার সকালেও বৃষ্টি দেখে সত্যিই চিন্তায় পড়েছিলাম। তবে পরে ভাল-ই ব্যবসা হয়েছে।” তুফানগঞ্জ, দিনহাটা, মাথাভাঙা, মেখলিগঞ্জের বাজারেও দিনভর ভিড় দেখা যায়। ডুয়ার্সের বাজারেও দিনভর ভিড় দেখা গিয়েছে। মালবাজার, ওদলাবাড়ি, চালসা সর্বত্রই ক্রেতাদের ভিড় ছিল। জামা-কাপড়ের দোকানের মতোই ভিড় দেখা গিয়েছে মোবাইলের দোকানেও।
মালদহের নেতাজি পুর বাজার থেকে শুরু করে চিত্তরঞ্জন পুর বাজার, কাজী আজাহারউদ্দিন পুর বাজার সর্বত্রই বাজার ছিল জমজমাট। জলপাইগুড়ির ডিবিসি রোড থেকে শিলিগুড়ির হিলকার্ট রোড পুজোর বাজারের ভিড়ে একই চেহারা নেয়। জলপাইগুড়ির দিনবাজার, ডিবিসি রোড, কামারপাড়া সকাল থেকে ছিল ভিড়ে ঠাসা।