সাংবাদিক বৈঠকে অশোক। —নিজস্ব চিত্র।
শিলিগুড়ির মহকুমাশাসক এবং স্থানীয় পুর-সচিব, শাসক দলের হয়ে কাজ করছেন বলে অভিযোগ তুললেন প্রাক্তন পুরমন্ত্রী তথা শিলিগুড়ি পুর নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে অন্যতম বাম প্রার্থী অশোক ভট্টাচার্য।
নিরপেক্ষ পুরনির্বাচনের জন্য তাঁদের বদলি করতে হবে বলে দাবি করেন তিনি। শনিবার শিলিগুড়ির হিলকার্ট রোডে সিপিএমের দলীয় কার্যালয় অনিল বিশ্বাস ভবনে সাংবাদিক বৈঠকে ওই দাবি করেন অশোকবাবু। ইতিমধ্যেই রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি। প্রয়োজনে ফের ওই দাবিতে কমিশনের দ্বারস্থ হবেন বলেও জানিয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন পুরমন্ত্রী। যদিও তাঁর এই দাবিকে আমল দিতে চাননি উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন প্রাক্তন মন্ত্রী, তাঁরা অবশ্য সরকারি নিয়ম মেনেই তাঁদের কর্তব্য করেছেন বলে জানান।
প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক বাবু দাবি করেন, “শিলিগুড়ির মহকুমাশাসক দীপাপপ্রিয়া এবং শিলিগুড়ি পুরসভার সচিব সপ্তর্ষি নাগ সরকারি কর্মী হয়েও একটি দলের প্রতি আনুগত্য দেখাতে সেই দল সম্পর্কে প্রশংসাসূচক কথাবার্তা বলছেন। রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন। যা অভিপ্রেত নয়। ওঁরা পক্ষপাত দুষ্ট বলে আমরা মনে করছি।” জেলাশাসক কিছুদিন আগে নির্বাচনের ব্যাপারে সর্বদল বৈঠক ডেকেছিলেন। অশোকবাবুর দাবি, ওই বৈঠকের পর মন্ত্রীরও নতুন কোনও প্রকল্পের সূচনা করা উচিত নয়। আর ওই সমস্ত অনুষ্ঠানে সরকারি আধিকারিক, কর্মীদের যোগ দেওয়া অন্যায়। তিনি বলেন, “পুর সচিবও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সরকারি দলের হয়ে মন্ত্রীর প্রশংসা করছেন। যা তাঁর এক্তিয়ার বহির্ভুত।”
একই সঙ্গে কয়েকজন পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধেও তাঁরা অভিযোগ জানাবেন বলে জানিয়েছেন অশোকবাবু। তবে এখনই তাঁদের নাম জানাতে চাননি। এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে, নির্বাচনের সময় কেন্দ্রীয় বাহিনী রাখারও দাবি করেন তিনি।
তাঁর বিরুদ্ধে অশোকবাবু যে অভিযোগ তুলেছেন সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে মহকুমাশাসক বলেন, “আমি সরকারি আইন অনুযায়ী সমস্ত কাজ করেছি। আমার কাজ দেখার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ রয়েছেন।” এর বেশি কিছু বলতে চাননি তিনি। অন্যদিকে পুর সচিবকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেসা করা হলে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
বাম নেতা-কর্মীদের একের পর এক মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ তোলেন বৈঠকে উপস্থিত প্রাক্তন রাজ্যসভার সাংসদ তথা সিটুর দার্জিলিং জেলা সম্পাদক সমন পাঠক। তাঁর দাবি, “একের পর এক মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করা হচ্ছে বাম কর্মীদের। বাদ যাচ্ছেন না ছাত্রেরাও।” বিভিন্ন ক্লাবকে সরাসরি সাহায্যের চেক দিয়ে প্রভাবিত করার চেষ্টা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
এদিকে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব অশোকবাবুর ওই অভিযোগের ব্যাপারে বলেন,.“পুর সচিব সরকারি অনুষ্ঠানে যেতেই পারেন। তাতে প্রশ্ন উঠছে কেন? তবে মহকুমাশাসক এমন কোনও অনুষ্ঠানে গিয়েছেন বলে আমার জানা নেই। তা ছাড়া সরকারি ভাবে এখনও নির্বাচন ঘোষণা হয়নি। ওঁর বক্তব্যের কোনও যুক্তি নেই, ভিত্তিহীন কথা। তাই এ সবের কোনও উত্তর দিতে চাই না।” কেন কেন্দ্রীয় বাহিনী চাওয়া হবে তাও বুঝে উঠতে পারছে না বলে জানান গৌতমবাবু।