শিলিগুড়িতে দেবের রোড-শো। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।
চড়া রোদে দু’ঘণ্টার রোড শো-র শেষে দু’টি সভা। মঙ্গলবার দিনভর শিলিগুড়ি ও লাগোয়া জলপাইগুড়ি লোকসভা এলাকায় তৃণমূল প্রার্থীদের সমর্থনে ভোট প্রচার করলেন টলিউড সুপারস্টার দেব। দিনভর ভক্তদের উৎসাহ, আবদার সামলে, বিকেলে ডাবগ্রামের শেষ সভায় গানও গাইলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালের তৃণমূল প্রার্থী দীপক অধিকারী।
‘খোকা চালু চিজ। খোকা চারশো বিশ।’ সিটি আর হাততালির তালে দু’লাইন গেয়েই থেমে গেলেন তিনি। দর্শক শ্রোতার কাছে অনুরোধ করলেন, “ভুল বুঝবেন না। এ খোকা কিন্তু তেমন নয়। এই খোকা ভাল ছেলে।” শিলিগুড়ির একতিয়াশালের খেলার মাঠে তখন হাততালি আর সিটির আওয়াজে মাইকের শব্দও হার মানছে। হাততালি থামলে, আবার মাইকে দেব। এ বার বললেন, “আসল কথা যেটা, গত তিন বছরে দেখেছেন তো দিদি কীভাবে বাংলার উন্নয়ন করছেন। তাই এ বার ভোট তৃণমূলকেই দেবেন। এটা বলতেই এসেছি।” তা শুনেও শুরু হল ভক্তদের সিটি।
শিলিগুড়িতে এ দিন ছিল দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রে ভোটের শেষ প্রচার। মঙ্গলবার সকাল ১১টা থেকে শুরু করে দেব যখন শেষ সভা ছাড়লেন তখন বিকেল পাঁচটা বেজে গিয়েছে। প্রচারের শেষ দিনের একেবারে শেষ মুহূর্ত শিলিগুড়ি শহর জুড়ে প্রচারে দেবের সঙ্গে ছিলেন অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী ও একটি প্রযোজক সংস্থার কর্ণধার শ্রীকান্ত মোহতা। সর্বত্রই উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি গৌতম দেব উপস্থিত ছিলেন। দুপুরে রোড-শোয়ের শেষে সূর্যনগর সভা মঞ্চে মাইক হাতে নিয়ে ‘বন্ধু’ ভাইচুঙের জন্য ভোট চেয়েছেন চাঁদের পাহাড়ের শঙ্কর।
সকাল ১১টা নাগাদ চম্পাসারি মোড় থেকে পুলিশ এবং র্যাফের জওয়ানদের নিরাপত্তায় চলতে শুরু করল হুডখোলা জিপ। চম্পাসারি মোড় থেকে নিবেদিতা রোড হয়ে, প্রধাননগর থেকে পানিট্যাঙ্কি মোড় হয়ে তারকা-নেতা বোঝাই জিপ বর্ধমান রোডে চলে আসে। জিপ যতই এগিয়েছে সঙ্গে বেড়েছে ভিড়। কেউ বাইক নিয়ে, কেউ সাইকেলে জিপের পেছনে ছুটেছেন।
জিপের আগে তিনটে অটোতে লাগানো মাইকে বলা হচ্ছে, “অভিনেতা দেব আপনাদের পাড়ায় এসেছেন, ওঁকে আর্শীবাদ করুন।” নববর্ষের পুজো দিয়ে মন্দির থেকে ফেরার পথে নিছকই কৌতুহলে দাঁড়িয়ে পড়িয়েছিলেন মা-মেয়ে। মায়ের পরণে লালপাড়-সাদাশাড়ি আর মেয়ের জিনস-টপ। বর্ধমান রোড হয় ঝঙ্কার মোড়ে যখন হুডখোলা জিপের উপর আকাশি রঙের শার্টে লম্বা ফর্সা চেহারার মুখটা দেখতে পেয়েই প্রসাদী থালা হাতে মহিলা চিৎকার করে উঠলেন, “ওই তো! দেব!” এমনই উন্মাদনা দেখা গিয়েছে, পিএনটি মোড়, মিলন পল্লি, ফুলেশ্বরী মোড়েও। বিভিন্ন মোড়ে আগে থেকেই দেবের জন্য ভিড় অপেক্ষা করে ছিল। প্রতিটি মোড়ে এসেই জিপ দাঁড়িয়েছে, এগিয়ে আসা খাতা, কাগজ, এমনকী এটিএম কার্ডের স্লিপেও দেদার অটোগ্রাফ বিলিয়েছেন তিনি। হাত মিলিয়েছেন, কথাও বলেছেন ভিড়ের সঙ্গে। মিলনপল্লি এলাকার ভিড়ে জিপ আটকে গেলে, পুলিশ, র্যাফ থেকে তৃণমূলকর্মীরা সকলেই ভিড় সামলে গাড়ি বের করে নিয়ে যেতে নাস্তানাবুদ। তখনও জিপে দাঁড়িয়ে দেব ভিড়ের সঙ্গে কথা বলছেন। এক মহিলাকে দেব এ দিন বলেন, “মাসিমা, নববর্ষের দিন আপনার কাছে এসেছি। ভাইচুংকে ভোটটা দেবেন কিন্তু।”