শিক্ষকদের উপস্থিতির উপর নজরদারি করতে আলিপুরদুয়ার কলেজে বসানো হল দু’টি ‘বায়োমেট্রিক মেশিন’। বুধবার সকালে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের ঘরে আঙুলের ছাপ নেওয়ার ওই মেশিন দু’টি বসানো হয়েছে। কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি, এই প্রথম রাজ্যে কোনও কলেজে এই ব্যবস্থা নেওয়া হল। কলেজে ঢোকা ও কলেজ থেকে বেরোনোর সময়ে শিক্ষক ও শিক্ষা-কর্মীরা ওই মেশিনে আঙুলের ছাপ দিয়ে কলেজে যাওয়া-আসার সময় নথিভুক্ত করাবেন।
কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি অমিতাভ রায় বলেন, “বিভিন্ন সময় দেখা গিয়েছে, কলেজে ঠিকমত ক্লাস হচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে ছাত্র সংগঠন ও অভিভাবকদের সঙ্গে আলোচনায় হয়। তাতে অভিযোগ ওঠে, একাংশ শিক্ষক সঠিক সময়ে কলেজ আসেন না। পাল্টা কলেজে না আসার অভিযোগও মেলে। তার জেরেই এই সিদ্ধান্ত।” ছাত্র সংগঠনগুলিও অভিযোগ করে, অধিকাংশ শিক্ষকই হাজিরা খাতায় সই করে কলেজ থেকে বেরিয়ে গিয়ে বাইরে প্রাইভেট টিউশন বা অন্যান্য কাজ করতেন। ওই কলেজের টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক শশাঙ্ক দে-র অভিযোগ, “কিছু শিক্ষক কলেজে এসে হাজিরার খাতা সই করে বাড়ি চলে যেতেন। আবার টানা অনুপস্থিত থেকে পরে হাজিরা খাতায় সই করে দিতেন। বিষয়টি নিয়ে আমরা বারবার সরব হওয়ায় ওই মেশিনটি বসানো হয়েছে।”
কলেজের টির্চাস কাউন্সিলের সম্পাদক ভাস্কর বাগচি অবশ্য অভিযোগ মানতে চাননি। তিনি বলেন, “অধিকাংশ শিক্ষকই দায়িত্বশীল। তাঁরা নিয়মিত কলেজে আসেন। ছাত্রছাত্রীরাই আসেন না বলে ক্লাস হয় না। এবার সব পরিষ্কার হয়ে যাবে।”
অমিতাভবাবু জানান, পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে পরীক্ষায় বসার জন্য ৭৫ শতাংশ হারে কলেজে উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। গতবার যাঁরা ওই হারে ক্লাস করেননি, তাদের জরিমানা করে পরীক্ষায় বসার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এ বার থেকে সেই সিদ্ধান্ত বদলানো হয়েছে। ৭৫ শতাংশ হারে উপস্থিতি না থাকলে পড়ুয়াদের পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হবে না। তেমনই শিক্ষকরাও যাতে কলেজে নিয়মিত আসেন ও থাকেন, তার জন্যও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শৈলেন দেবনাথ জানান, নতুন মেশিনের পাশাপাশি হাজিরা খাতাতেও সই করানোর ব্যবস্থাও থাকছে।