মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার টাকা নেওয়াকে কেন্দ্র করে তৃণমূল শিক্ষক সমিতির সদস্য দুইজন শিক্ষকের মধ্যে গোলমালের জেরে উত্তেজনা ছড়াল জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার গড়ালবাড়ি হাইস্কুল। বৃহস্পতিবার গোলমালের জেরে প্রধানশিক্ষক একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস চালু রেখে বাকি স্কুল ছুটি দিয়ে দেন। পুলিশ-প্রশাসনের কাছে এখনও কোনও লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি।
স্কুল সূত্রের খবর, স্কুলের শিক্ষক বিবেকানন্দ অধিকারি স্কুলের বিভিন্ন মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা পরিচালনা করেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি পরীক্ষার নির্দিষ্ট ফি বদলে ইচ্ছামতন টাকা নেন। পুজোর ছুটিতেও এরকম একটি পরীক্ষা হয় স্কুলে। বিবেকানন্দবাবুকে ওই কাজে সাহায্য করেন স্কুলের পার্শ্ব শিক্ষক মহম্মদ নূর হাবিব। ছুটির শেষে স্কুল খোলার পর টাকা টাকা পয়সার সব কিছু নূর হাবিব জানেন বলে বিবেকানন্দবাবু পাল্টা অভিযোগ করেন। এই নিয়ে বুধবার স্কুলে দু’জনের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও ধস্তাধস্তি হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা এবং অভিভাবকদের একাংশ ইচ্ছামত টাকা নেওয়ার প্রতিবাদ করেন। স্থানীয় বাসিন্দা তথা সিপিএম নেতা ইয়াকুব হোসেন বলেন, “বিবেকান্দবাবু পরীক্ষায় যথেচ্ছভাবে ফি নেন। তাঁর বিরুদ্ধে প্রচুর অভিযোগ আছে। স্কুল কর্তৃপক্ষের বিষয়গুলি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।” তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির জলপাইগুড়ি জেলার আহ্বায়ক অমিত সাহা অবশ্য বলেন, “ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হবে। যদি কোনও শিক্ষক দুর্নীতিতে জড়িয়েছেন বলে প্রমাণিত হলে তাঁকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হবে।”
অভিভাবকেরা জানান, বিবেকানন্দবাবু গড়ালবাড়ির তৃণমূল সভাপতি শাজাহান আলির ঘনিষ্ঠ বলেও পরিচিত। এ দিন তৃণমূলের একদল লোক স্কুলের গেট বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। তাঁরা স্কুলের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার দাবি তোলেন। এতে ছাত্রছাত্রীরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে। অভিভাবকেরা স্কুল খোলার জন্য পাল্টা চাপ শুরু করেন। শেষে প্রধান শিক্ষক গেট খুলে একাদশ ও দ্বাদশ বাকি স্কুলে ছুটি দিয়ে দেন।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক অভিজিৎ ঘোষ ঘটনাটিকে সামান্য ঘটনা বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, “সামান্য ঘটনা। স্কুলের মধ্যে এমনটা হয়েই থাকে। বড় ঘটনা এড়াতে স্কুল ছুটি দেওয়া হয়।” দুই শিক্ষকের এক জন বিবেকানন্দ অধিকারী বৃহস্পতিবার স্কুলে যাননি। মহম্মদ নূর অবশ্য যান। দু’জনেই দাবি করেছেন, “আমাদের মধ্যে সামান্য তর্কাতর্কি হয়েছিল। সব মিটে গিয়েছে।”