লাগাতার চলল কিল-ঘুঁষি, পুলিশ দর্শকই

মনোনয়নপত্র বিলি শুরু হতেই তেতে উঠল উত্তরের কলেজগুলি। কোথাও মেরে মুখ ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে, কোথাও আগ্নেয়াস্ত্র, কোথাও অবরোধ তো কোথাও আবার গাঁদা ফুলে গাঁধীগিরি। দেখল আনন্দবাজার।পুলিশ অফিসাররা দাঁড়িয়ে দেখছেন, মনোনয়ন তুলতে আসা বিরোধীদের উপরে যথেচ্ছ ঘুষি চালাচ্ছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি) নেতা। দু’ঘণ্টা ধরে টিএমসিপি নেতারা তাণ্ডব চালালেও বাগডোগরা কলেজে পুলিশ নীরব দর্শক হয়েছিল বলে অভিযোগ।

Advertisement
শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:৩১
Share:

বাগডোগরা কলেজে হাতাহাতি। —নিজস্ব চিত্র।

যথেচ্ছ ঘুঁষি

Advertisement

পুলিশ অফিসাররা দাঁড়িয়ে দেখছেন, মনোনয়ন তুলতে আসা বিরোধীদের উপরে যথেচ্ছ ঘুষি চালাচ্ছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি) নেতা। দু’ঘণ্টা ধরে টিএমসিপি নেতারা তাণ্ডব চালালেও বাগডোগরা কলেজে পুলিশ নীরব দর্শক হয়েছিল বলে অভিযোগ। পরে বিরোধীরা জাতীয় সড়ক অবরোধ শুরু করলে আটকে পড়ে জেলাশাসকের গাড়িও। জেলাশাসকের গাড়ির সামনেই বিক্ষোভ চলতে থাকে। জেলাশাসককে অভিযোগ জানান বিরোধী ছাত্র নেতারা। এসএফআই-এর অভিযোগ, সুবীর সাহা নামে তাদের এক কর্মীকে মেরে মাথা, মুখ ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে। অবরোধের পরে ফের মনোনয়ন তুলতে গেলে টিএমসিপি’র লোকজন চড়াও হয়। মারধর করে, ঢিল ছোড়ে বলে অভিযোগ। টিএমসিপি নেতার সব অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন।

Advertisement

মোড়ে মোড়ে নজর

শিলিগুড়ির সূর্যসেন কলেজ এবং লাগোয়া এলাকা দিনভর দখল নিয়ে বিরোধী কাউকেই কলেজের আশেপাশে ঘেঁষতে দিল না টিএমসিপি সমর্থকরা। কোনও গোলমাল না হলেও বিরোধী এসএফআইয়ের অভিযোগ, এনজেপি থেকে বহিরাগতদের এনে কলেজ এবং লাগোয়া পাড়ার মোড়ে মোড়ে সকাল থেকে বসিয়ে রাখা হয়েছিল। তাঁদের অনেকেই কলেজের ছাত্র নন। এনজেপি গাড়ির স্ট্যান্ডের কিছু চালক ও মালিককেও কলেজ এলাকায় ঘোরাঘুরি করতে দেখা দিয়েছে। এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক সৌরভ দাস বলেন, ‘‘ভয়, ভীতির পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে।’’ অভিযোগ অস্বীকার করে টিএমসিপির নির্ণয় রায় বলেন, ‘‘ওদের কলেজে লোকই নেই ভোটে দাঁড়ানোর।’’

আজ ভোট

আজ, শনিবার মালদহের সাউথ মালদহ, সামসি ও চাঁচল কলেজে নির্বাচন। বিরোধী ছাত্র সংগঠনগুলির অভিযোগ, ৯টি কলেজের মধ্যে ৬টি কলেজে মনোনয়নপত্র তুলতেই দেয়নি তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। তাই নির্বাচনেও সন্ত্রাস করবে বলে আশঙ্কা করেছেন ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি বাবুল শেখ। তিনি বলেন, ‘‘সন্ত্রাস করে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে টিএমসিপি। তাই নির্বাচনেও গোলমাল পাকাতে পারে তারা।’’ সুষ্ঠু ভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করতে তৎপর গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তিনটি কলেজেই সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে নজরদারি চালানো হবে। এ ছাড়া দু’জন করে সর্ব ক্ষণের জন্য পর্যবেক্ষক থাকবেন।

নেতারা মাঠে

ছাত্র সংসদ দখল করতে বিরোধী পক্ষকে ভয় দেখাতে ‘রাইফেল’ ব্যবহারের অভিযোগও উঠল জলপাইগুড়িতে। বৃহস্পতিবার রাতে কলেজ নির্বাচনের প্রচার বাড়ি ফেরার পথে ছাত্র নেতা সৌরভ সরকারের উপর হামলার অভিযোগ ওঠে। সৌরভ টিএমসিপির জেলা সভাপতি অভিজিৎ সিংহর অনুগামী। তৃণমূলের যুব সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায়ের সমর্থকদের বিরুদ্ধে তাঁকে মারধরের অভিযোগ ওঠে। কিন্তু তারপরে শুক্রবার রাতে অভিজিৎ ও সৌরভের দ্বন্দ্ব থামাতে মাঠে নেমে পড়েন তৃণমূলের জেলা নেতারা। জেলা তৃণমূলের সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী, জলপাইগুড়ি পুরপ্রধান মোহন বসুরা নিজেরা আলোচনায় বসেন। শহরের কোন কলেজের কোন আসনে কারা দাঁড়াবে, তা মোটামুটি ভাবে এ দিন জেলা নেতারাই ঠিক করে দিয়েছেন। মোহনবাবু জানান, সে কথা ছাত্র ও যুব নেতাদেরও জানানো হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement