দু’নম্বর প্ল্যাটফর্মে শেড নেই এখনও।—নিজস্ব চিত্র।
গত দু’বছরে রায়গঞ্জ স্টেশনে ট্রেনের সংখ্যা বাড়ায় যাত্রীদের চাপ বেড়েছে। অতিরিক্ত ট্রেনের স্টপের ব্যবস্থা করতে স্টেশনে অতিরিক্ত প্ল্যাটফর্মও তৈরি করেন রেল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু প্ল্যাটফর্ম তৈরি হওয়ার পরে এক বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত সেটির শেড তৈরি না হওয়ায় ক্ষুব্ধ যাত্রীরা। অভিযোগ, দু’নম্বর প্ল্যাটফর্মটির উপরে শেড না থাকায় ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করতে গিয়ে বা ট্রেন থেকে নামার সময়ে বৃষ্টি হলে ভিজতে হচ্ছে যাত্রীদের। চড়া রোদেও যাত্রীরা সমস্যায় পড়ছেন।
রেল সূত্রের খবর, বর্তমানে রায়গঞ্জ স্টেশন হয়ে প্যাসেঞ্জার ও এক্সপ্রেস মিলিয়ে প্রতি দিন ছ’টি ট্রেন যাতায়াত করে। তারমধ্যে তিনটি রয়েছে রাধিকাপুর-কাটিহার প্যাসেঞ্জার ট্রেন, একটি রাধিকাপুর-নিউ জলপাইগুড়ি ডিএমইউ প্যাসেঞ্জার ট্রেন ও একটি রাধিকাপুর-কলকাতা রাধিকাপুর এক্সপ্রেস ট্রেন ও একটি রাধিকাপুর-দিল্লি আনন্দবিহার এক্সপ্রেস ট্রেন।
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাধিকাপুর-নিউ জলপাইগুড়ি ডিএমইউ প্যাসেঞ্জার ও গত লোকসভা নির্বাচনের আগে দিল্লিগামী আনন্দবিহার এক্সপ্রেস ট্রেন চালু হয়। ডিএমইউ প্যাসেঞ্জার ট্রেনটি চালু হওয়ার কয়েকমাস আগে যাত্রীদের সমস্যা ও স্টেশনে অতিরিক্ত ট্রেনের স্টপের ব্যবস্থা করতে দু’নম্বর প্লাটফর্ম তৈরির কাজ শুরু করে রেল। প্রায় দেড় বছর আগে প্ল্যাটফর্ম তৈরির কাজ শেষ হয়। কিন্তু ওই প্ল্যাটফর্মে শেডের কোনও ব্যবস্থা না করেই সেটি চালু করে দেন রেল কর্তৃপক্ষ। রেলকর্মীরা জানান, স্টেশনের এক নম্বর প্লাটফর্মে অন্য ট্রেন থাকায় প্রতিদিন ভোর থেকে রাত পর্যন্ত গড়ে তিনটি করে প্যাসেঞ্জার ও এক্সপ্রেস ট্রেন যাতায়াত করে। পথে শেডহীন দু’নম্বর প্ল্যাটফর্মে স্টপ দেয়। শেডহীন ওই প্ল্যাটফর্মের ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করেন যাত্রীরা। ট্রেন থেকে নেমে প্রায় ২০০ মিটার হেঁটে ফুটব্রিজ ধরে স্টেশন থেকে বেরোতে হয় তাঁদের।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৫ সেপ্টেম্বর এই নিয়ে কনসালটেটিভ কমিটির একটি বৈঠক হয়েছে। সেখানে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের কাটিহার ডিভিশনের কমার্শিয়াল ম্যানেজার উপস্থিত ছিলেন। সেখানে লিখিত ভাবে প্ল্যাটফর্মের শেডের জন্য তাঁরা দাবি জানান। রায়গঞ্জ স্টেশন রেলওয়ে কনসালটেটিভ কমিটির সদস্য তথা উত্তর দিনাজপুর রেলযাত্রী সমিতির সম্পাদক তপন চৌধুরী বলেন, “রায়গঞ্জ স্টেশনে ট্রেনের সংখ্যা বাড়ায় আমরা খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু রেল কর্তৃপক্ষ দু’নম্বর প্ল্যাটফর্মের শেড তৈরি না করেই সেটি চালু করে দিলেন। বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক শঙ্কর চক্রবর্তী জানান, রায়গঞ্জের রেল পরিষেবার উন্নয়নের দাবিতে রেলমন্ত্রীর কাছে ডাকযোগে একটি স্মারকলিপি পাঠিয়েছেন। তিনি বলেন, “রেলমন্ত্রীর কাছে দলের তরফে রায়গঞ্জ স্টেশনের দু’নম্বর প্ল্যাটফর্মে শেড নির্মান-সহ রায়গঞ্জ থেকে দিনের বেলায় কলকাতাগামী একটি ট্রেন চালু করা, পুজোর মরসুমে কলকাতাগামী রাধিকাপুর এক্সপ্রেস ট্রেনের অতিরিক্ত কোচের ব্যবস্থা করা, স্টেশনে যাত্রীদের পানীয় জল ও শৌচাগারের পরিকাঠামো উন্নয়ন করার দাবি জানানো হয়েছে।”
ডিআরএম অরুণকুমার শর্মা বলেন, “স্টেশনের সার্বিক উন্নয়নের পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের। সবই ধীরে ধীরে বাস্তবায়িত করা হবে।”