রেলের লাইনে বৈদ্যুতিক তার। সরাতেই সময় লাগল ঘন্টা চারেক। তার জেরে মালদহের বিভিন্ন স্টেশনে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে রইল দূরপাল্লার আটটি ট্রেন। বুধবার ভোর সাড়ে ৩টে থেকে সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত ট্রেনগুলি দাঁড়িয়ে থাকায় চরম দুর্ভোগের শিকার হন রেল যাত্রীরা। ক্ষুব্ধ যাত্রীরা সকালে মালদহ টাউন স্টেশনে কিছুক্ষণ বিক্ষোভ দেখান। পরে রেলের অফিসারদের আশ্বাসে বিক্ষোভ থামে। ট্রেনগুলি ছাড়া শুরু হতেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
রেল সূত্রের খবর, পুরাতন মালদহের একলাখি স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় রেলের লাইনে ইলেকট্রিকের তার ছিঁড়ে যায়। রেলের আধিকারিকদের তা নজরে আসতেই ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা হয়। ওই অফিসারদের কয়েকজন জানান, পুরাতন মালদহ থেকে কুমেদপুর স্টেশন পর্যন্ত ইলেকট্রিক লাইন তৈরির কাজ চলছিল। দুষ্কৃতীরা প্রায় ৫০০ মিটারের মতো ইলেকট্রিক তার কেটে চুরি করে নিয়ে যায়। সেই তারের কিছু অংশ লাইনে পড়েছিল। কাটিহার ডিভিশনের ডিআরএমকে বারবার মোবাইল নম্বরে ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ দক্ষিণ মালদহের সাংসদ তথা কংগ্রেসের জেলা সভানেত্রী মৌসম বেনজির নূর। শারীরিক অসুস্থতার জন্য এ দিন তাঁর শতাব্দী এক্সপ্রেসে কলকাতায় যাওয়ারল কথা ছিল। সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ টাউন স্টেশনে যান। নির্দিষ্ট সময়ে ট্রেন না আসায় অন্য যাত্রীদের সঙ্গে স্টেশনে অপেক্ষা করতে হয় তাঁকে। সাংসদ বলেন, “আধঘন্টা ধরে দাঁড়িয়ে আছি। শারীরিক অসুস্থতার জন্য সমস্যা হয়েছে। যাঁরা চার ঘন্টা সময় ধরে দাঁড়িয়ে আছে, তাদের কতটা দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। অথচ রেল কর্তৃপক্ষের ভ্রূক্ষেপ ছিল না। একটা তার সরাতে চার ঘন্টা সময় লাগল।” তাঁর অভিযোগ, “রেলের উদাসীনতার জন্যই এত মানুষকে আজ হয়রান হতে হল। দ্রুত এই কাজ করা উচিত ছিল।”
রেল সূত্রের খবর, এ দিন চার ঘণ্টা ধরে দার্জিলিং মেল, কাঞ্চনকন্যা, গরিব রথ, মালদহ-কাটিহার এক্সপ্রেস দাঁড়িয়ে থাকে মালদহ টাউন স্টেশনে। এছাড়া গৌড় মালদহ স্টেশনে পদাতিক এক্সপ্রেস, গৌড় এক্সপ্রেস এবং ফরাক্কা স্টেশনে ব্রহ্মপুত্র মেল ও হাটেবাজারে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে যায়। শেষে মালদহ স্টেশনে স্টেশন ম্যানেজারের ঘরের সামনে বিক্ষোভ দেখান বাসিন্দারা। ইংরেজবাজারের গয়েশপুরের বাসিন্দা সুর্দশন সরকার বলেন, “এক আত্মীয় শিলিগুড়ির এক নার্সিংহোমে চিকিত্সাধীন। মালদহ স্টেশনে পদাতিক এক্সপ্রেসের জন্য চারঘন্টা দাঁড়াতে হয়েছে। একটা তার সরানোর জন্য এমন ভোগান্তি হতে পারে, ভাবতেই পারিনি।”