জলপাইমোড়ে সকাল থেকে শুরু হয় অবরোধ। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।
স্কুল কর্তৃপক্ষের গাফিলতির জেরে শিলিগুড়ি হিন্দি হাই স্কুলের নবম এবং একাদশ শ্রেণির ৪০৯ জন ছাত্রের মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকের ‘রেজিস্ট্রেশন’ আটকে গিয়েছে বলে অভিযোগ। আর এরই প্রতিবাদে আড়াই ঘন্টা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন তারা। সোমবার শিলিগুড়ির জলপাই মোড়ে বেলা সাড়ে ন’টা থেকে অবরোধ শুরু হয়। খবর পেয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন মহকুমাশাসককে। তার দফতর থেকে একজন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট এবং স্কুল পরিদর্শক ঘটনাস্থলে গিয়ে সমস্যা মেটাতে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে ছাত্ররা অবরোধ তুলে নেন।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “সমস্যা মেটাতে ৬ নভেম্বর স্কুল কর্তৃপক্ষ, অভিভাবকদের প্রতিনিধি, প্রশাসন এবং স্কুল পরিদর্শকের দফতরের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছে।” উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরে ওই বৈঠক হবে বলে জানা গিয়েছে। এ দিন ছাত্রদের অবরোধের জেরে ওই রাস্তার যান চলাচল বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।
স্কুল পরিদর্শকের দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, যিনি প্রধান শিক্ষক রয়েছেন তাঁকে সরকারি ভাবে নিয়োগ করা হয়নি বলে মধ্য শিক্ষা পর্ষদ এবং উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের কাছে জানিয়েছিলেন স্কুল পরিদর্শক প্রাণগোবিন্দ সরকার। তার জেরে ওই শিক্ষকের সই সম্বলিত স্কুলের নবম এবং একাদশ শ্রেণির ছাত্রদের মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকের রেজিস্ট্রেশনের আবেদন পত্র পাঠানো হলেও তা গ্রহণযোগ্য হয়নি। স্কুল পরিদর্শক জানিয়েছেন, স্কুলটি সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত। কিন্তু প্রধান শিক্ষককে সরকারি ভাবে নিয়োগ করা হয়নি। গত ১৫ অক্টোবর চিঠি দিয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদ এবং উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদেও তা জানানো হয়েছে।
কর্তৃপক্ষের দাবি, স্কুলটিতে এক জনের স্কুল পরিচালন কমিটি রয়েছে। তাঁর নাম ভগবতীপ্রসাদ ডালমিয়া। তাঁর ছেলে সীতারামবাবুর দাবি, স্কুলটি একটি ট্রাস্টের অধীনে। সীতারামবাব ট্রাস্টের সদস্য। তিনি বলেন, “বাবার চোখে অস্ত্রোপচার হয়েছে। কথা বলতে পারছেন না। স্কুলটি বেসরকারি। সরকারিভাবে এর আগে এপ্রিলে স্কুল পরিদর্শকের দফতর থেকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা নিয়োগ করা হয়। আমরা মামলা করি। মে মাসের শুরুতে হাইকোর্ট ওই প্রধান শিক্ষিকা নিয়োগ স্থগিত রাখতে বলে। তা মানা হচ্ছে না দেখে আদালত অবমাননার অভিযোগ করা হয়। ওই মামলা চলছে। তবে এর পর তাদের নিয়োগ করা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকাকে সরিয়ে দেয় স্কুল পরিদর্শকের দফতর। আমাদের তরফে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ করা হয়। আদালতের নির্দেশের সমস্ত নথিপত্র রয়েছে। বৈঠকে তা দেখাব।” অভিভাবক মঞ্চের অভিযোগ, সীতারামবাবুরা স্কুলটিকে নিজেদের সম্পত্তি করতে চাইছেন। তাঁরা তা হতে দেবেন না। মঞ্চের সম্পাদক সন্দীপন ভট্টাচার্য বলেন, “প্রশাসনকে আগেই ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। তা না নেওয়াতে সমস্যা বেড়েছে।”