লক্ষ্মীপুর

যাত্রীর পায়ের উপরে চাকা, জ্বলল গাড়ি

পুড়ে যাওয়া গাড়ি। বুধবার মনোজ মুখোপাধ্যায়ের তোলা ছবি। গোলমাল করতে নিষেধ করায় এক যাত্রীকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে তাঁর পায়ের উপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ম্যাক্সি ট্যাক্সির চালক ও সহকারীর বিরুদ্ধে। এর প্রতিবাদে তাদের মারধর করে গাড়িটিতে আগুন ধরিয়ে দিল জনতা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০১৫ ০১:৩৩
Share:

পুড়ে যাওয়া গাড়ি। বুধবার মনোজ মুখোপাধ্যায়ের তোলা ছবি।

Advertisement

গোলমাল করতে নিষেধ করায় এক যাত্রীকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে তাঁর পায়ের উপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ম্যাক্সি ট্যাক্সির চালক ও সহকারীর বিরুদ্ধে। এর প্রতিবাদে তাদের মারধর করে গাড়িটিতে আগুন ধরিয়ে দিল জনতা। বুধবার দুপুরে ইংরেজবাজারের কাজিগ্রাম পঞ্চায়েতের লক্ষ্মীপুর এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। এর জেরে ঘণ্টা খানেক মালদহ-মানিকচক রাজ্য সড়ক অবরুদ্ধ থাকে। পরে পুলিশ ও দমকল দফতরের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়েন্ত্রণে আনে। পুলিশের মধ্যস্থতায় অবরোধ তোলেন বিক্ষোভকারীরা।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আহত যাত্রী বাবলু শেখ ওই গ্রামেরই বাসিন্দা। তিনি বেসরকারি বাসের সহকারী চালক। অভিযুক্ত ম্যাক্সি ট্যাক্সির চালক ও সহকারী চালককে আটক করেছে পুলিশ। মালদহের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এখন অভিযোগ জমা পড়েনি। একটা উত্তেজনা ছিল। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে।’’

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন দুপুরে বাবলু শহর থেকে ম্যাক্সি ট্যাক্সিতে করে বাড়ি ফিরছিলেন। ওই গাড়িতেই ছিলেন তাঁর ভাই মহম্মদ মিনাতুল ইসলাম। সে শান্তাদেবীয়া হাই স্কুলের নবম শ্রেণির পড়ুয়া। জানা গিয়েছে, গাড়ির অন্য যাত্রীদের সঙ্গে ভাড়া নিয়ে গোলমাল চলছিল সহকারী চালকের। সেই সময় গাড়ির গেটের কাছেই ছিলেন বাবলু। সহকারী চালককে গোলমাল করতে নিষেধ করলে আচমকা তাঁকে ধাক্কা দিয়ে চলন্ত গাড়ি থেকে ফেলে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। সেই সময়ই গাড়ির পেছন চাকা তাঁর বাম পায়ের উপর দিয়ে চলে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন তিনি। চালক গাড়ি নিয়ে পালানোর চেষ্টা করলেও অন্য যাত্রীদের চাপে থামতে বাধ্য হন।

এর পরেই স্থানীয় বাসিন্দারা ঘটনাস্থলে গিয়ে চালক ও সহকারী চালককে বেধড়ক মারধর শুরু করেন। গাড়িটিতে ভাঙচুর চালিয়ে আগুনও ধরিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনায় মালদহ-মানিকচক রাজ্য সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ওই রুটে ব্যাপক যানযটের সৃষ্টি হয়। গ্রামবাসীরা, অভিযুক্ত চালক ও সহকারি চালকের শাস্তির দাবি তুলে পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান। দমকলের একটি ইঞ্জিন আগুন নেভানোর চেষ্টা করলেও, গাড়িটির অধিকাংশ অংশ পুড়ে গিয়েছে।

ইংরেজবাজার থানার আইসি দিলীপকুমার কর্মকারের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে উত্তেজিত জনতার সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। স্থানীয়েরা আহত বাবলুকে উদ্ধার করে আশঙ্কাজনক অবস্থায় নিয়ে যান মালদহ মেডিক্যালে।

আহতের ভাই মিনাতুল ইসলাম বলে, ‘‘খালাসির সঙ্গে ভাড়া নিয়ে অন্য যাত্রীদের বচসা চলছিল। বচসায় বাধা দিলে সে ধাক্কা মেরে দাদাকে ফেলে দেয়। আমার দাদার অবস্থা খুবই খারাপ।’’ সিপিএমের পঞ্চায়েত সদস্য চুমকি বিবি বলেন, ‘‘ভাড়া নিয়ে গোলমালের জেরে গ্রামের এক বাসিন্দাকে গাড়ি থেকে ফেলে দেওয়া হয় বলে জানতে পেরেছি। কী ভাবে আগুন লেগেছে তা আমার জানা নেই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement